ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সহজে জিততে দেয়নি পিএনজি
শক্তি, সামর্থ্য, অভিজ্ঞতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে পাপুয়া নিউ গিনি। কিন্তু মাঠে নামলে এসব আর কে মনে রাখে! সবচেয়ে ছোট দল হলেও বুক চিতিয়ে লড়ার চেষ্টা করে। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টি নিয়ে একটি কথা বর্তমানে খুব প্রচলিত, 'এই ফরম্যাটে চোট-বড় দল বলে কিছু নেই।' বিশ্বকাপের শুরুর দিনেই তা বোঝালো পাপুয়া নিউ গিনি (পিএনজি)। জয়ের স্বাদ না নিতে পারলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ভালোই বেগ দিলো দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া দলটি।
রোববার বিশ্বকাপের শুরুর দিনে গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে পিএনজিকে ৫ উইকেটে হারালেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের অস্বস্তি হওয়ার কথা। যারা কখনও ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলেনি, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো খেলছে, সেই দলটির দেওয়া মাঝারি লক্ষ্য পাড়ি দিতেও ১৯তম ওভারের শেষ বল পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হয় ক্যারিবীয়দের, হারায় ৫টি উইকেট। শেষ দিকে বল-রানের ব্যবধান বেড়ে যাওয়ায় বিপাকেও পড়তে হয় বিশ্বকাপের আয়োজক দেশটিকে। রক্ষা হয়েছে ম্যাচসেরা রস্টস চেস ও আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটে।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে পিএনজি। সেসে বাউয়ের হাফ সেঞ্চুরি এবং অধিনায়ক আসাদ ভালা ও কিপলিন ডরিগার ২০ ছাড়ানো ইনিংসে ৮ উইকেটে ১৩৬ রান তোলে ওশেনিয়া অঞ্চলের দেশটি। জবাবে পিএনজির নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপক্ষে ধীর গতিতে ব্যাটিং করতে বাধ্য হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ উইকেট হারানোর পাশাপাশি বল-রানের ব্যবধানও বাড়িয়ে ফেলে। শেষ দিকে ঝড়ো ব্যাটিং করে ব্যবধান কমানোর পাশাপাশি দলকে জয় এনে দেন চেস ও রাসেল।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার জনসন চার্লসকে হারায় ক্যারিবীয়রা। শুরুর চাপ অবশ্য কাটিয়ে উঠতে সময় নেননি ব্রেন্ডন কিং ও নিকোলাস পুরান। দ্বিতীয় উইকেটে ৪২ বলে ৫৩ রানের জুটি গড়েন তারা। শুরুর ধাক্কা সামলালেও দ্রুত গতিতে রান তুলতে পারেননি এ দুজন। এ কারণে চাপ বাড়ে, পরে মারতে গিয়ে হারাতে হয় উইকেট। নবম ওভারে ফেরার আগে ২৭ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ২৭ রান করেন পুরান।
পরের ওভারে থামেন ২৯ বলে ৭টি চারে ৩৪ ররান করা কিংও। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে রানের গতি আরও কমে আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। রান তুলতে ভুগতে থাকা অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল ১৪ বলে ১৫ ও শারফান রাদারফোর্ড ৭ বলে ২ রান করে বিদায় নেন। জয়ের জন্য শেষ ২৪ বলে ক্যারিবীয়দের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৪০ রান। এখান থেকে হাল ধরে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান এক পাশ ধরে রাখা চেস ও রাসেল।
১৭তম ওভার থেকেই দাপট শুরু হয় এই দুই ব্যাটসম্যানের। শেষ দুই বল থেকে ৮ রান তোলেন রাসেল, সব মিলিয়ে আসে ৯ রান। ১৮তম ওভারে চলে চেস ঝড়, দুই চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। এই ওভার থেকে আসে ১৮ রান। ১৯তম ওভারেও দুটি চার মারেন তিনি, শেষ পর্যন্ত ৬ বল হাতে রেখেই জেতে তার দল। ডানহাতি এই অলরাউন্ডার ২৭ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন। রাসেল ৯ বলে একটি ছক্কায় অপরাজিত ১৫ রান করেন। পিএনজির আসাদ ভালা ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান আলেই নাও, চ্যাড সোপার ও জন কারিকো।
এর আগে ব্যাটিং করা পিএনজির পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন সেসে বাও। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪৩ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৫০ রান করেন, টি-টোয়েন্টিতে এটা তার পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি। এ ছাড়া অধিনায়ক আসাদ ২১, চার্লস আমিন ১২, কিপলিন ডরিগা ২৭ ও চ্যাড সোপার ১০ রান করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল ও আলজারি যোসেফ ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান আকিল হোসেন, রোমারিও শেফার্ড ও গুডাকেশ মোটি।