যেভাবে ওমরজাইয়ের এক ওভার থেকে ওঠে ৩৬ রান
প্রথম তিন ম্যাচ দিয়েই সুপার এইটের টিকেট কাটে আফগানিস্তান। উগান্ডা, পাপুয়া নিউ গিনিকে হারানোসহ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিজয় নিশান উড়িয়ে হইচই ফেলে দেয় আফগানরা। চারপাশ থেকে আসা প্রশংসার জোয়ারে ভাসছিল তারা। এমন সময়ে যেন বাস্তবতা পরীক্ষাই হলো রশিদ-নবীদের। তাদের গুঁড়িয়ে রেকর্ড গড়া জয় তুলে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আফগানিস্তানের মতো প্রথম তিন ম্যাচ দিয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করে ক্যারিবীয়রা। গ্রুপ পর্বে এই দুই দলের শেষ ম্যাচটি ছিল মূলত সুপার এইটের প্রস্তুতির মতো। কারণ দুটি পয়েন্ট জেতা ছাড়া এই ম্যাচের ফলে কোনো প্রভাব পড়তো না। এমন ম্যাচে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে রেকর্ডের মালা গাঁথে বিশ্বকাপের আয়োজকরা। এর মধ্যে একটি আফগান পেসার আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ৩৬ রানের ওভার।
আগে ব্যাটিং করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুরু থেকেই চড়াও ছিল আফগান বোলারদের ওপর। প্রথম ৩ ওভারে ১ উইকেটে তোলে ৩৭ রান। চতুর্থ ওভারটি করতে যান ওমরজাই, যে ওভারে তাকে করতে হয় ৮টি ডেলিভারি। ৬ ছক্কা না হওয়ার পরও এই ওভারে তার খরচা ৩৬। ওমরজাইয়ের প্রথম বলে ছক্কা মারেন ৯৮ রানের খুনে ইনিংস খেলা নিকোলাস পুরান। পরের ডেলিভারিটি নো করেন, পুল করে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারেন পুরান।
প্রথম দুই বলে ১১ রান খরচা করে যেন খেই হারান ওমরজাই। তার করা ফ্রি-হিটের ডেলিভারিটি হয় ওয়াইড, উইকেটরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে গিয়ে ছাড়ায় সীমানাও। চতুর্থ ডেলিভারিটি দারুণ করেন ওমরজাই। তার করা ইয়র্কার থেকে কোনো রান নিতে পারেননি পুরান। পরের ডেলিভারিতে লেগ বাই থেকে যায় ৪ রান। শেষের তিন বলে একটি চার ও ২টি ছক্কা মারেন পুরান, সব মিলিয়ে রান ওঠে ৩৬।
শুরুতেই ছন্দ পেয়ে যাওয়া পুরান এরপর ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালান। নিজের খেলা প্রথম ১৩ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৬ রান তোলেন ক্যারিবীয় এই ব্যাটসম্যান। এরপর হঠাৎ-ই থেমে যায় তার ঝড়, পরের ২৭ বলে করেন ১৯ রান। এরপর আবারও শুরু হয় পুরান-তাণ্ডব, নিজের খেলা ইনিংসের শেষের ১৩ বলে ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় তোলেন ৪৩ রান। শেষ পর্যন্ত ৫৩ বলে ৬টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৯৮ রানের দানবীয় ইনিংস খেলেন পুরান। ছক্কার রেকর্ডে ক্রিস গেইলকে পেছনে ফেলেছেন তিনি, তার ছক্কা ১২৮টি। গেইল ১২৪ ছক্কা নিয়ে এতোদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবার উপরে ছিলেন।
পুরানের সঙ্গে ছিল জনসন চার্লস, শেই হোপ, অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েলদেরও দাপট। এদের ব্যাটে ৫ উইকেটে ২১৮ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যা বিশ্বকাপে তাদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। জবাবে ওবেদ ম্যাকয়, আকিল হোসেন, গুডাকেশ মোটিদের দারুণ বোলিংয়ের বিপক্ষে ১৬.২ ওভারে ১১৪ রানেই গুটিয়ে যায় আফগানিস্তানের ইনিংস। ১০৪ রানের বড় ব্যবধানে জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যা টি-টোয়েন্টি ও এই ফরম্যাটের বিশ্বকাপে রানের হিসেবে তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়।