ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে ১০ বছর পর ফাইনালে ভারত
লড়াই-ই জমাতে পারল না ইংল্যান্ড, ভারতের কাছে বিধ্বস্ত হয়ে টানা দ্বিতীয় ফাইনাল খেলার স্বপ্নের ইতি ঘটেছে থ্রি লায়ন্সদের। আজ দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে রোহিত শর্মার দল জিতেছে ৬৮ রানের বড় ব্যবধানে। আর এতে ১০ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল ভারত।
২০১৪ সালে মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল ভারত। সেবার যদিও হেরে যায় তারা। ১০ বছর আবারও ফাইনালে পৌঁছাল ২০০৭ সালের চ্যাম্পিয়নরা। ১৭ বছর পর আবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জেতার সুযোগ ভারতের সামনে। শেষ ধাপে তাদের সামনে বাধা প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকা।
টস হেরে ব্যাট করে ভারত তোলে ১৭১ রান। জবাবে ইংল্যান্ড গুটিয়ে গেছে মাত্র ১০৩ রানেই। দুই ভারতীয় বাঁহাতি স্পিনার কুলদীপ যাদব ও অক্ষর প্যাটেলের ঘূর্ণিতে বেহাল হয়েছে ইংল্যান্ডের দশা। রান তাড়ায় ইংল্যান্ডের শুরুটা খুব খারাপ হয়নি, তিন ওভারে ২৬ রান তুলে ফেলে তারা। কিন্তু অধিনায়ক জস বাটলার রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে অক্ষরের বলে ক্যাচ তুলে দেন পন্তের হাতে। সেখান থেকে শুরু ইংলিশদের পতনের।
এরপর আরেক ওপেনার সল্টও ফিরে যান বুমরাহর দারুণ এক বলে বোল্ড হয়ে। ইংল্যান্ডের ইনিংস আর দাঁড়াতেই পারেনি। আক্রমণে এসে চার ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন কুলদীপ। যদিও ম্যাচ সেরা হয়েছে অক্ষর, তিনি ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন।
বৃষ্টির দাপটে ম্যাচ হবে কিনা এই নিয়ে ছিল সংশয়। খেলা মাঠে না গড়ালে ফাইনালে চলে যেত ভারত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির হানার পরও ম্যাচ গড়িয়েছে মাঠে। আর তাতে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার।
বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের সোয়া এক ঘন্টা পর ম্যাচ শুরু হয়। ভারতের ইনিংসের আট ওভার হতেই আবারও হানা দেয় বৃষ্টি। এতে আবারও সোয়া এক ঘন্টা খেলা বন্ধ থাকে। এরপর অবশ্য টানা খেলা হয়েছে। তাতে অধিনায়ক রোহিত শর্মা আর সূর্যকুমার যাদবের দুটি সময়োপযোগী ইনিংসের সুবাদে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াকু সংগ্রহ গড়ে ভারত।
২০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ১৭১ রানে থামে ভারতের ইনিংস। গায়ানার এই মাঠে প্রথম ইনিংসের গড় সংগ্রহ ১৬৭। সেই হিসেবে ভারত জেতার মতো রানই তুলে ফেলে। বোলিং আক্রমণও দুর্দান্ত হওয়ায় ইংল্যান্ডের জন্য এটি মোটেও সহজ রান তাড়া ছিল না। কিন্তু সেটি যে এত দূরত্বে থাকবে, তা হয়তো ভারত দলও ভাবেনি।
এদিনও ব্যর্থ হয়েছেন বিরাট কোহলি। নয় বলে নয় রান করে টপলির বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এতে একটি বিব্রতকর রেকর্ড গড়েছেন ভারতের তারকা ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক আসরে কমপক্ষে পাঁচ ইনিংস ব্যাট করা ওপেনারদের মধ্যে কোহলির গড়ই সবচেয়ে কম। ১০.৭ গড়ে ৭৫ রান করেছেন কোহলি। ছাড়িয়ে গেছেন এই বিশ্বকাপেই বাংলাদেশের তানজিদ হাসান তামিমের ১০.৮ গড়কে।
ভারতের ইনিংস গতি পেয়েছে অধিনায়ক রোহিত শর্মার ব্যাটে। শুরুতে কিছুটা দেখে খেললেও স্বভাবসুলভ ব্যাটিংয়ে তা পুষিয়ে দিয়েছেন রোহিত। আউট হওয়ার আগে করেছেন ৩৯ বলে ৫৭ রান, মেরেছেন ছয়টি চার ও দুটি ছয়। সূর্যকুমারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৬ বলে চারটি চার ও দুটি ছয়ে ৪৭ রান। শেষ দিকে হার্দিক পান্ডিয়া ১৩ বলে ২৩ ও জাদেজা নয় বলে ১৭ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন।
ইংলিশ বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ক্রিস জর্ডান, ৩৭ রান খরচ করে তিন উইকেট শিকার করেছেন এই ডানহাতি পেসার। টপলে, আর্চার, রশিদ ও কারেন একটি করে উইকেট পকেটে পুরেছেন। টানা দ্বিতীয় ফাইনাল খেলতে হলে ইংল্যান্ডকে বেশ ভালো ব্যাটিংই করতে হতো। যেখানে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে জস বাটলারের দল।