কানপুরে শেষ দিনের রোমাঞ্চের অপেক্ষা
বৃষ্টিতে প্রথম দিন খেলা হলো মাত্র ৩৫ ওভার। পরের দুই দিনে একটি বলও মাঠে গড়ালো না। তৃতীয় দিন শেষে অনেকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার কানপুর টেস্টের ভাগ্যে ড্র লেখা দেখতে পাচ্ছিলেন। কিন্তু রোমাঞ্চকর চতুর্থ দিনে হিসেব গেল পাল্টে, এখন অনেকে ভারতের জয়ের সম্ভাবনাও দেখতে পাচ্ছেন। অপেক্ষা এখন শেষ দিনের রোমাঞ্চের।
কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে চলমান টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ২৬ রান তুলে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছে, সফরকারীরা পিছিয়ে ২৬ রানে। সাদমান ইসলাম অনিক ৭ ও আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক শূন্য রানে অপরাজিত আছেন। এর আগে জাকির হাসান ১০ রান করে থামেন, নাইট ওয়াচম্যান হাসান মাহমুদ করেন ৪ রান।
প্রথম দিনে ৩৫ ওভার, সেটাও এক দলের প্রথম ইনিংসের অংশ। সেখান থেকে আরেক দিনেই কতো কী হয়ে গেল কানপুর টেস্টে, বদলে গেল ম্যাচের চেহারাই। ৩ উইকেটে ১০৭ রান নিয়ে চতুর্থ দিন ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। এদিন ৩৯.২ ওভারেই অলআউট হয়ে যায় নাজমুল হোসেন শান্ত দল। দুই দিন ধরে অপরাজিত থাকা মুমিনুল কেবল আজ দলের হয়ে ব্যাট চালাতে পেরেছেন। বাকিরা ব্যাটিং উইকেটেও হয়ে ওঠেন হতাশার প্রতিচ্ছবি।
টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া মুমিনুল হয়তো দলের স্কোরকার্ডে আরও কিছু রান যেগি করতে পারতেন। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে সেটা সম্ভব হয়নি। ১৯৪ বলে ১৭টি চার ও একটি ছক্কায় ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে বাকি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কেউ ৪০ রানের গণ্ডি পেরোতে পারেননি।
প্রথম দিনের খেলা পরিত্যক্ত হওয়ার আগে ৩১ রান করেন অধিনায়ক শান্ত, যা দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সেদিন ২৪ রান করেন সাদমান। আজ মুশফিকুর রহিম ১১, লিটন কুমার দাস ১৩, সাকিব আল হাসান ৯ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২০ রান করেন। ভারতের পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান মোহাম্মদ সিরাজ, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও আকাশ দীপ। বাকি উইকেটটি নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে নিজের ৩০০ উইকেট পূর্ণ করেন রবীন্দ্র জাদেজা।
এরপর প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত যেন ভুলে যায় তারা টেস্ট খেলছে। টেস্ট ইতিহাসের দলীয় দ্রুততম ৫০, ১০০ ও ১৫০ রানের রেকর্ড গড়া ঘরের মাঠের দলটি ওভার প্রতি ৮.২২ রান তোলে। ৩৪.৪ ওভারে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা, প্রথম ইনিংসে তারা পায় ৫২ রানের লিড।
ভারতের ইনিংসে সবচেয়ে বেশি অবদান যশস্বী জয়সওয়ালের। ৩১ বলেই হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বাঁহাতি তরুণ এই ওপেনার। যা ভারতের টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি। ১৪১.১৭ স্ট্রাইক রেটে ৫১ বলে ১২টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭২ রান করেন জয়সওয়াল। রোহিত ১১ বলে একটি চার ও ৩টি ছক্কায় করেন ২৩ রান। দলীয় দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির পর আরও একটি রেকর্ডে নিজের নাম তোলেন ভারত অধিনায়ক।
টেস্ট ইতিহাসের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের ইনিংসের প্রথম দুই বলে ছক্কা মারেন তিনি। শুভমান গিল ৩৬ বলে ৩৯ রান করেন। ৪৩ বলে ৬৮ রান করেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া লোকেশ রাহুল, ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। বিরাট কোহলি ৩৫ বলে করেন ৪৭ রান। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ ৪টি উইকেট করে নেন। একটি উইকেট পান পেসার হাসান।