তামিমের ব্যাটে ঝড়, দারুণ ইনিংসে রংপুরকে জেতালেন আকবর
সাত মাস পর মাঠে ফেরার দিন সময়টা ভালো যায়নি তামিম ইকবালের। জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ম্যাচে ১৩ রান করেই বিদায় নেন। পরের ম্যাচে ছন্দময় তামিমের দেখা মেলে, ব্যাট হাতে ঝড় তুলে ৩৩ বলে করে ৬৫ রান করেন। তৃতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ অল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ায় বড় ইনিংস খেলার সুযোগ ছিল না। আজ আবারও দেখা গেল তামিমের খুনে ব্যাটিং, এরপরও অবশ্য বরিশালের সালমান হোসেন ইমনের তাণ্ডবে হেরে গেছে তার দল চট্টগ্রাম বিভাগ।
তামিমের ৯১ রানের ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়ার পরও বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে ৫ উইকেটে হেরেছে চট্টগ্রাম। এর আগে রোববারের প্রথম দুই ম্যাচের একটিতে ব্যাট হাতে রাজত্ব করেন আকবর আলী। তানবীর হায়দারের সঙ্গে বড় জুটি গড়ার পর দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান দুর্দান্ত ইনিংস খেলা অধিনায়ক আকবর, রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে রংপুর জেতে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে ১৯ রানে জিতেছে ঢাকা মেট্রো। খুলনা বিভাগকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সিলেট বিভাগ।
এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে আজ চতুর্থ রাউন্ডের খেলা ছিল। এই রাউন্ড শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে চার ম্যাচের সবকটিতে জেতা রংপুর। ঢাকা মেট্রোও চার ম্যাচ জিতেছে, তবে নেট রান রেটে পিছিয়ে থাকায় দুই নম্বরে তারা। চার ম্যাচে দুটি করে জিতে চট্টগ্রাম ও বরিশাল যথাক্রমে তিন ও চার নম্বরে আছে। রাজশাহী, সিলেট, ঢাকা ও খুলনা একটি করে ম্যাচ জিতেছে। আজই প্রথম জয়ের স্বাদ পেল সিলেট।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রংপুরের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে রাজশাহী। সাব্বির হোসেনের অপরাজিত ৭০, হাবিবুর রহমানের ৩০ ও গোলাম কিবরিয়ার ৩৮ রানে ৮ উইকেটে ১৮৯ রান তোলে তারা। সাব্বির তার ৫২ বলের ইনিংসটি ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজান। রংপুরের আলাউদ্দিন বাবু ও মো. রিজওয়ান ৩টি করে উইকেট নেন।
জবাবে তানবীর ও আকবরের দাপুটে ব্যাটিংয়ে ১২ বল হাতে রেখেই জিতে যায় রংপুর। তানবীর ৪৫ বলে ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭১ রান করেন। ২৯ বলে ৪টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন আকবর। ১৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। বরিশালের তাইজুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান পায়েল ও ফরহাদ রেজা একটি করে উইকেট নেন।
সিলেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাটিং করা ঢাকা মেট্রো ৭ উইকেটে ১৯০ রান তোলে। ৫৪ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় ৬৯ রান করেন অধিনায়ক নাঈম শেখ। ২২ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন শামসুর রহমান শুভ। আনিসুল ইসলাম ১৩ বলে ১৩, ইমরানুজ্জামান ১৫ বলে ২০ ও আবু হায়দার রনি ১১ বলে ১৮ রান করেন। ঢাকার সুমন খান ও নাজমুল ইসলাম অপু ২টি করে উইকেট নেন।
জবাবে আনিসুল ইসলামের বোলিং তোপের মুখে ৮ উইকেটে ১৭১ রানে থামে ঢাকা বিভাগ। দলটির কোনো ব্যাটসম্যান হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাননি। রনি তালুকদান ৩৯, আরিফুল ইসলাম ৪২, আরাফাত সানি জুনিয়র ২৯ ও তৈবুর রহমান ২১ রান করেন। মেট্রোর ডানহাতি পেসার আনিসুল ৪ ওভারে ৩৮ রান খরচায় ৪টি উইকেট নেন। রাকিবুল হাসান, আলিস আল ইসলাম, আবু হায়দার ও শহিদুল ইসলাম একটি করে উইকেট পান।
দিনের দ্বিতীয় ভাগে একাডেমি মাঠে সিলেটের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিং করা খুলনা ৭ উইকেটে ১৪৪ রান তোলে। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন, তার ব্যাট থেকে আসে ৩৪ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৮ রান। ইমরুল কায়েস ১৪, মোহাম্মদ মিথুন ২০ ও জিয়াউর রহমান ২১ রান করেন। দলটির আর কেউ দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। সিলেটের ইবাদত হোসেন ও নাবিল সামাদ ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান জিসান আলম ও খালেদ আহমেদ।
জবাবে জিসানের দারুণ ইনিংসে ৯ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় সিলেট। জিসান ৪৮ বলে ৪টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৭৩ রান করেন। তৌফিক খান তুষার ২৪, অমিত হাসান ১১ ও তোফায়েল আহমেদ অপরাজিত ২৩ রান করেন। খুলনার জায়েদ উল্লাহ, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও নাহিদুল ইসলাম একটি করে উইকেট নেন। আল আমি হোসেন, জিয়াউর রহমানরা কোনো উইকেট পাননি।
আরেক ম্যাচে সিলেট স্টেডিয়ামের মূল মাঠে বরিশালের বিপেক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিং করা চট্টগ্রাম তামিমের ব্যাটে সবচেয়ে বেশি পথ পাড়ি দেয়। অভিজ্ঞ এই ওপেনারের ইনিংসে চড়েই ৭ উইকেটে ১৮২ রান তোলে তারা। তামিম ৫৪ বলে ৭টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৯১ রান করেন। মাহমুদুল হাসান জয় ২২ ও সাব্বির হোসেন শিকদার ২১ রান করেন। বরিশালের মেহেদী হাসান ৩টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান কামরুল ইসলাম রাব্বি, তানভীর ইসলাম ও মইনুল ইসলাম একটি করে উইকেট পান।
জবাবে ইফতেখার হোসেন ইফতির হাফ সেঞ্চুরির পর সালমান হোসেন ইমনের শেষের ঝড়ে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় বরিশাল। শেষ বলে জয় নিশ্চিত হয় তাদের। ইফতি ৩৯ বলে ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৬ রান করেন। বরিশালের জয়ের নায়ক সারমান ২৮ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন, শেষ ওভারে ২৭ রান তোলেন তিনি। আব্দুল মজিদ ১৯ ও মঈন খান ২৬ রান করেন। চট্টগ্রামের আহমেদ শরিফ ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান ফাহাদ হোসেন, ইরফান হোসেন ও নাঈম হাসান।