আগুনে বোলিংয়ে বিপিএল ইতিহাসের সেরা বোলিং তাসকিনের
শুরুটা ভালো না হলেও বেশ দ্রুতই রান যোগ হচ্ছিল ঢাকা ক্যাপিটালসের স্কোরকার্ডে। শুরুর ধাক্কা সামলে নেওয়ার পর স্টিফেন এসকিনজাই, শাহাদাত হোসেন দিপু, থিসারা পেরেরাদের ব্যাটে এগিয়ে যাচ্ছিল দলটি। কিন্তু এর মাঝেও ছিল দুর্বার রাজশাহীর উইকেট উদযাপন, যার মধ্যমণি তাসকিন আহমেদ। ঢাকার স্কোর দেখলে মনে হবে ব্যাট হাতে তারাই শাসন করেছে, আবার তাসকিনের বোলিং ফিগারে চোখ রাখলে মনে হবে উল্টোটা।
প্রতিপক্ষ রান পেলেও তাসকিন যে বোলিং করেছেন, তার জায়গা হয়েছে বোলিং রেকর্ড পাতার সবার উপরে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ইতিহাসের সেরা বোলিংই এখন ডানহাতি এই পেসারের দখলে। আগে ব্যাটিং করে ১৭৪ রান তুলেছে ঢাকা, উইকেট হারিয়েছে ৯টি। এর মধ্যে ৭টিই গেছে তাসকিনের ঝুলিতে, ৪ ওভারে খরচা মাত্র ১৯ রান। যা বিপিএলের ইতিহাসের সেরা বোলিং, টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের তৃতীয় সেরা।
দুর্বার বোলিংয়ে ঢাকার ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলা তাসকিন লম্বা সময় ধরেই বল হাতে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন। জাতীয় দলের হয়ে প্রায় সব উইকেটেই দাপট দেখানো অভিজ্ঞ এই পেসার এবার বিপিএলের রেকর্ড নতুন করে লিখলেন। রেকর্ড চূড়ায় ওঠার পথে তাসকিন পেছনে ফেলেছেন পাকিস্তানের পেসার মোহম্মদ আমিরকে। এতোদিন সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড ছিল তার দখলে।
২০২০ বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের হয়ে রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে ১৭ রানে ৬ উইকেট নেন আমির। তাসকিনের অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে দুইয়ে নেমে যেতে হলো তাকে। বিপিএলের তৃতীয় সেরা বোলিং আরেক পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ সামির। সাবেক ডানহাতি এই পেসার বিপিএলের প্রথম আসরে ২০১২ সালে দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে ৩.২ ওভারে মাত্র ৬ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। সেরা পাঁচের পরের দুই বোলার ওয়াহাব রিয়াজ ও আবু হায়দার রনি, দুজই পান ৫টি করে উইকেট।
বিপিএলের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড দখলে নেওয়া তাসকিন বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে আরেকটি রেকর্ডে নিজের নাম তুলেছেন, ছাড়িয়ে গেছেন সাকিব আল হাসানকে। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং ছিল বাঁহাতি এই স্পিনারের। ২০১৩ ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) বার্বাডোস ট্রাইড্রেন্টসের হয়ে ৪ ওভারে ৬ রানে ৬ উইকেট নেন সাকিব। এতোদিন বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে এটাই ছিল সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।
টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সেরা বোলিংয়ের তালিকায় তাসকিনের অবস্থান এখন তিনে। শীর্ষে মালয়েশিয়ার সায়াজরুল ইদ্রুস, গত বছর চীনের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৮ রানে ৭ উইকেট নেন তিনি। দুই নম্বরে থাকা নেদারল্যান্ডসের কলিন অ্যাকারম্যান ২০১৯ ভাইটালিটি ব্লাস্টে লেস্টারশায়ারের হয়ে বার্মিংহাম বিয়ার্সের বিপক্ষে ৪ ওভারে ১৮ রানে ৭ উইকেট নেন। এরপরই তাসকিন, তার বোলিং ফিগার ৪-০-১৯-৭। আজ তার শিকারে পরিণত হয়েছেন ঢাকার লিটন কুমার দাস, তানজিদ হাসান তামিম, শাহাদাত হোসেন দিপু, সুভম রঞ্জনে, চতুরঙ্গ ডি সিলভা, আলাউদ্দিন বাবু ও মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ।