সুমাইয়াকে হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বাফুফে
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/05/sumaiya_2.jpg)
গত কদিন ধরে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী দলের ফুটবলার মাতসুশিমা সুমাইয়া। মঙ্গলবার বিকালের দিকে নিজের ফেরিফাইড পেজে এক পোস্টে বিষয়টি জানান ২৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। বিষয়টি নজরে পড়ার পর হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে পাঠানো বাফুফের বিবৃতিতে বলা হয়, 'জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড় মাতসুশিমা সুমাইয়াকে হুমকি দেওয়া ও হয়রানির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বাফুফে। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বাফুফে। এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। দেশের প্রতিনিধত্ব করা কোনো ক্রীড়াবিদেরই এমন অপব্যবহারের মুখে পড়া উচিত নয়। বাফুফে তার খেলোয়াড়দের সুরক্ষা ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।'
নিজের ছোটবেলার এবং জাতীয় দলের জার্সিতে তোলা দুটি ছবি সংযুক্ত করে সুমাইয়া তার পোস্টে জানান, গত কয়েকদিন ধরে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি পেয়ে আসছেন তিনি। ক্রমাগত হুমকিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কথাও জানান জাপানি বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি এই ফুটবলার। জাতীয় দলের কোচ পিটার বাটলারের অপসারণ চেয়ে বাফুফে সভাপতি বরাবর ফুটবলারদের লেখা চিঠি ইংরেজিতে অনুবাদ করে দেওয়ার কারণে এই আক্রমণের শিকার হচ্ছেন সুমাইয়া।
বাটলারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ এনে ইংলিশ এই কোচের অপসারণ চেয়েছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুনসহ ১৭ জন ফুটবলার। তার অধীনে খেলবেন না বলে জানিয়েছেন তারা। বাটলারকে কোচ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে বাফুফে সরে না এলে গণ-অবসরের হুমকিও দিয়ে রেখেছেন ফুটবলাররা। এসব লিখিত আকারে বাফুফে সভাপতিকে দিয়েছেন তারা। লিখিত এই বক্তব্যটা অনুবাদ করে দেন সুমাইয়া।
বক্তব্যটি পাওয়ার পর বাফুফের বিশেষ কমিটি জানতে চায়, ইংরেজি লিখিত বক্তব্যটি কার লেখা। কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ফুটবলাররা জানান সুমাইয়ার কথা। জাপানে বেড়ে ওঠা সুমাইয়াও স্বীকার করেন বক্তব্যটি অনুবাদ করে দেওয়ার কথা। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ধর্ষণ ও মেরে ফেলার হুমকি পেতে থাকেন তিনি।
বিকালে দেওয়া ফেসবুক পোস্টের শেষের অংশে সুমাইয়া লেখেন, 'ফুটবল খেলার জন্য বাবা-মায়ের সঙ্গে লড়াই করেছি এই বিশ্বাসে যে, হয়তো একদিন দেশ আমার পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন। কেউ আসলে ক্রীড়াবিদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করে না। যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, সে সম্পর্কে নিজের এবং সতীর্থদের নিয়ে ইংরেজিতে একটি চিঠি লেখার ন্যূনতম দক্ষতা আমার আছে।
'গত কয়েকদিন ধরে আমি অগণিত মৃত্যু এবং ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি; যেসব শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা আমাকে এমনভাবে ভেঙে দিয়েছে, যা কল্পনাও করিনি। জানি না এই মানসিক আঘাত থেকে বেরিয়ে আসতে কতো দিন লাগবে। তবে এটা জানি, কেবল স্বপ্ন পূরণের জন্য কাউকে যেন এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে না হয়।' যোগ করেন তিনি।