অর্থ জালিয়াতির প্রশ্ন কেন আসছে, বুঝতে পারছেন না ব্লাটার
বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সাবেক সভাপতি সেপ ব্লাটার জানিয়েছেন, মিচেল প্লাতিনি ও তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। একইসঙ্গে সুইস কোট কর্তৃক তাদের দুজনকে অর্থ জালিয়াতির বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি করাটাও অবান্তর।
ব্লাটার ও ফরাসি ফুটবল কিংবদন্তি প্লাতিনির বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে অর্থ জালিয়াতির অভিযোগে যে তদন্ত শুরু হয়, সেটারই অংশ হিসেবে সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল ক্রিমিনাল কোর্টে তাদেরকে হাজির করা হয়েছে। গত ছয় বছর ধরে মামলাটি চলছে।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফার তৎকালীন সভাপতি হিসেবে প্লাতিনির বিরুদ্ধে ২০১১ সালে দুই মিলিয়ন সুইস ফ্র্যাংক অবৈধভাবে গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। দুই সপ্তাহের শুনানীতে ব্লাটার প্রথমবারের মতো এ সম্পর্কে কথা বলেছেন। ৮৬ বছর বয়সী ব্লাটার বলেন, 'আমার সাথে তখন প্লাতিনি কাজ করেছেন, তিনি নিজেই তো মিলিয়ন ডলারের মালিক ছিলেন।'
১৯৯৮-২০০২ সাল পর্যন্ত ব্লাটারের মেয়াদে প্লাতিনি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। প্লাতিনির বার্ষিক পারিশ্রমিক হিসেবে ৩ লাখ সুইস ফ্র্যাংক দেওয়ার একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার পুরোটাই ফিফা কতৃর্ক বহন করার কথা ছিল। ব্লাটার ও প্লাতিনি উভয়ই এই বার্ষিক বেতনের বিষয়টি মৌখিকভাবে স্বীকার করেছেন। তবে তাদের মতে এর পরিমাণ ছিল এক মিলিয়ন সুইস ফ্র্যাংক।
১৯৭৫ সালে ফিফায় যোগ দেওয়া ব্লাটার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১৯৯৮ সালে। আদালতে ব্লাটার স্বীকার করেছেন তিনিই তিনবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী প্লাতিনিকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। আদালতে প্লাতিনিকে নিয়ে ব্লাটার বলেন, 'আমি যখন ফিফার সভাপতি নির্বাচিত হই, তখন সেখানকার রেকর্ড ততোটা ভাল ছিল না। আমি মনে করলাম এই মানুষটা ফিফা ও আমাকে অনেক দিক থেকে সহযোগিতা করতে পারে।'
ব্লাটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পরামর্শক হিসেবে প্রায় নয় বছর ধরে প্লাতিনি দুই মিলিয়ন সুইস ফ্র্যাংক গ্রহণ করেছেন। আর এসব চালানপত্রগুলোতে স্বাক্ষর করেছেন ব্লাটার। কিন্তু এ ধরনের বেতনের কোনো চুক্তিতে কখনও স্বাক্ষর করেননি বলে দাবি তাদের। ব্লাটার মৌখিকভাবে অবশ্য স্বীকার করেছেন, প্লাতিনির সাথে একটি চুক্তি হয়েছিল। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'প্লাতিনি বেতনের বিপরীতে সব অর্থ গ্রহণ করেছে। দুজন খেলার মানুষের মাঝে চুক্তি হয়েছিল। এখানে জালিয়াতির প্রশ্ন কেন আসছে।'
আগামী ২২ জুন এই মামলার শুনানি শেষ হবে। আগামী ৮ জুলাই তিনজন বিচারকের সমন্বয়ে একটি আদালতে রায় হওয়ার কথা রয়েছে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে ব্লাটার-প্লাতিনি উভয়েরই পাঁচ বছরের জেল অথবা জরিমানা হতে পারে।