গ্রামীনফোন ও রবির ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দেয়ার নির্দেশ
বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করায় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির ব্যান্ডইউথ আংশিক কমিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ না করায় গ্রামীণফোন ও রবিকে এই শাস্তি দিয়েছে বিটিআরসি।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই), গ্রামীণফোনের ৩০ ভাগ এবং রবির ১৫ ভাগ ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দিতে দেশের সবগুলো আইআইজিকে (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) নির্দেশনা পাঠিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের বিরুদ্ধে এই প্রথমবারের মতো কোন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করলো বিটিআরসি।
যদিও এই শিল্প-সংশ্লিষ্ট লোকজন মনে করছেন এই নির্দেশনা কার্যকর হলে মোবাইল ব্যবহারকারীরা বড় ধরনের সমস্যায় পড়বেন, বিশেষ করে কল করা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে।এর ফলে কল ড্রপের সংখ্যা বাড়বে ও ইন্টারনেটের গতি কমে যাবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মোঃ জহিরুল হক বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) কে বলেন, “সাধারণ জনগণের টাকার কথা চিন্তা করেই গ্রামীনফোন ও রবির ব্যান্ডউইথ সক্ষমতা কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি আমরা।”
তিনি বলেন এর ফলে মোবাইল ব্যবহারকারীরা সমস্যার মুখে পড়বেন , কিন্তু তা অসহনীয় হবে না। “অপারেটরগুলো বকেয়া পরিশোধ করার সঙ্গে সঙ্গে এই নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে নেয়া হবে” বলে জানান তিনি।
এর আগে ১২ হাজার ৫৭৯ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা বকেয়া দাবি করে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন এবং ৮৬৭ দশমিক ২৩ কোটির জন্য রবিকে নোটিশ পাঠায় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। গত এপ্রিল মাসে অপারেটর দুটিকে চিঠি পাঠানো হয়। টাকা পরিশোধের জন্য অপারেটর দুটিকে দুই সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়। বিটিআরসি থেকে তখন বলা হয়, গ্রামীণফোন ও রবির সর্বশেষ অডিটের পরে এই ডিমান্ড লেটার পাঠানো হয়েছে।
তবে রবির দাবি, হিসাব নিরীক্ষকরা যেসব কারণে বকেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন, তা এখনও বিচারাধীন রয়েছে।
রবির করপোরেট ও রেগুলেটরি চীফ শাহেদ আলম বাসসকে বলেন, ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দেয়া খুবই দুঃখজনক হবে কেননা এতে সমস্যায় পড়বেন গ্রাহকরা।
শাহেদ বলেন, “ বিটিআরসির এমন কড়া পদক্ষেপে আমরা হতাশ হয়েছি। ত্রুটিপূর্ণ নীরিক্ষার বিরুদ্ধে আমাদের অনাস্থার কথা আমরা বিটিআরসিকে ইতোমধ্যে জানিয়েছি।”
তবে সীমিত ব্যান্ডউইথ দিয়েও সন্তোষজনক সার্ভিস দিতে পারবে রবি বলে জানান শাহেদ।
গ্রামীনফোনের জনসংযোগ বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক মোঃ হাসান বলেন, “এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের লাখ লাখ ডাটা ব্যবহারকারীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই পদক্ষেপের নৈতিকতার প্রশ্নে আমরা অবাক হচ্ছি।”
এই সিদ্ধান্তের আগে ফোন অপারেটর মার্কেটে শীর্ষ গ্রামীনফোন ২০৯.৯৩ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করতো। এখন গ্রামীনফোন ব্যবহার করবে ১৪৬.৯৫ জিবিপিএস।
এবং আগে রবির বরাদ্দ ছিল ১৫০.৬৭ জিবিপিএস আর এখন পাবে ১২৮ জিবিপিএস।
বিটিআরসির হিসেব অনুযায়ী গত মে মাস পর্যন্ত গ্রামীনফোনের ৭.৪৮ কোটি এবং রবির ৪.৭৭ কোটি কার্যকর গ্রাহক বা সংযোগ আছে। এবং এই গ্রাহকদের অর্ধেকই ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।