মশার ওষুধ আনতে সিটি করপোরেশনকেই দায়িত্ব দিল হাইকোর্ট
মশা মারার কার্যকর ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব দিয়েছে হাইকোর্ট। আর এ কাজে স্বাস্থ্য এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে সার্বিক সহযোগিতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেয়।
আদালত বলে, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার বিভাগ মশা মারার ওষুধ দ্রুত আনার ব্যাপারে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে লাইসেন্স ও ছাড়পত্রসহ প্রয়োজনীয় সার্বিক সহযোগিতা দেবে।’
সেই সাথে সংকট মোকাবিলায় সম্ভব হলে সরকারকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ওষুধ এনে দুই সিটিসহ দেশব্যাপী স্থানীয় সরকারের সব দপ্তরে সরবরাহ করার কথা আদেশে বলা হয়েছে।
এছাড়া, হাইকোর্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ডেঙ্গু রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করাতে নির্দেশ দিয়েছে। সব সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার তত্ত্বাবধান করতে ২৪ ঘণ্টা একজন সহযোগী অধ্যাপকের নিচে নয় এমন চিকিৎসককে দায়িত্বে নিয়োজিত রাখতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে বলেছে আদালত। একজন রোগীও যেন বিনা চিকিৎসায় ফিরে না যায় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও মানবিক দিক বিবেচনা করে যতটুকু সম্ভব এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছে আদালত।
প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গু শনাক্ত করার কিট পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি করে সারা দেশে হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করতে বলেছে আদালত। পাশাপাশি নাগরিকরা যেন সুলভ মূল্যে এটা পেতে পারেন তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মশা নিধনে নতুন কার্যকর ওষুধ কবে দেশে আনা হবে সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য হলফনামা আকারে দুই সিটি করপোরেশনকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে জানাতে ৩০ জুলাই নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর বেঞ্চ।
সে অনুযায়ী, সকালে ঢাকা উত্তর সিটির আইনজীবী ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম টিপু আদালতকে বলেন, ‘আমরা চীন থেকে ওষুধ আনার উদ্যোগ নিয়েছি। দু-এক দিনের মধ্যে ওষুধের নমুনা চলে আসবে। এর পর মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করে ফল পেলে ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে ওষুধ আনা সম্ভব হবে।’
অন্যদিকে, উত্তর সিটির আইনজীবী ব্যারিস্টার সাইদ আহমেদ রাজা আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে বলেন, ‘ওষুধ আনবে সরকার। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ওষুধ এনে দেবে, আমরা সেটা প্রয়োগ করব।’
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মইনুল হাসান আদালতকে বলেন, ‘ওষুধ সিটি করপোরেশনকেই আনতে হবে।’
বিষয়টি নিয়ে ঠেলাঠেলির এক পর্যায়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ডেকে পাঠায় হাইকোর্ট। সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ আদালতে হাজির হয়ে জানান, ওষুধ বেসরকারি পর্যায়ে উৎপাদিত হয়। এটা সরকারিভাবে আনা কষ্টকর হয়ে যাবে। সিটি করপোরেশনকে ইতিমধ্যে ওষুধ আনার জন্য লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় হাইকোর্ট ওষুধ দুই সিটি করপোরেশনকে আনার নির্দেশ দিয়ে স্বাস্থ্য এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে সার্বিক সহযোগিতার আদেশ দেয়।