শেয়ার বাজার: লভ্যাংশ ঘোষণার মৌসুমেও ধীরগতি
অফশোর ব্যাংকিংয়ে ঋণ দিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দিষ্ট হারে নগদ জমা রাখতে হবে। এ কারণে ব্যাংকগুলোর হাতে নগদ অর্থ কমে যাবে। পাশাপাশি, ঋণ-আমানত অনুপাত সমন্বয়ের সময় আর বাড়ানো না হলে তারল্য সংকট বাড়বে। যা শেয়ার বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারো বলে আশঙ্কা বাজার বিশ্লেষকদের।
তাঁরা বলছেন, শেয়ার বাজারে অধিকাংশ কোম্পানির অর্থবছর জুনে শেষ হয়। এরই মধ্যে কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণা শুরু হয়েছে। তবে লভ্যাংশ ঘোষণার মৌসুম সত্ত্বেও বাজার রয়েছে সতর্ক অবস্থানে।
এ বিষয়ে আইসিবির সাবেক পরিচালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “বাণিজ্যিক ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিংয়ে ঋণ দেওয়ার উপর নগদ জমার অনুপাত (সিআরআর )ও বিধিবদ্ধ জমার অনুপাত (এসএলআর) সংরক্ষণের নতুন বিধান পালন করতে গিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আগের চেয়ে বেশি নগদ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হবে। ফলে ব্যাংকগুলোর হতে নগদ অর্থ কমবে। তাছাড়া খেলাপি ঋণের চাপেও আমাদের ব্যাংকগুলোর আর্থিক ভিত্তি তত শক্তিশালী নয়। এসব কারণে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সরব হননি। আর তাই লভ্যাংশ ঘোষণার মৌসুমেও শেয়ার বাজারে ধীরগতি চলছে।”
ড. মাহমুদ আরও বলেন, “২০১০ সালের মহাধসের অন্যতম বড় কারণ ছিল ব্যাংকের প্রতি শেয়ার বাজারের অতিনির্ভরতা। তারপর কার্যকর বন্ড মার্কেট গড়ে তোলা সম্ভব হলে এ সংকট মোকাবিলা সহজ হত।”
এদিকে, ঈদের ছুটির আগের এবং পরের দুটি সপ্তাহে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক বেড়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৫.৪৩ পয়েন্ট বা ০.৬৮ শতাংশ বেড়ে ৫২৩৬ পয়েন্টে রয়েছে। এর আগের সপ্তাহে প্রধান সূচক ২.৫৬ পয়েন্ট বা ০.০৫ শতাংশ বেড়েছিল।
তব লেনদেনে গতি কম। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা এবং দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৪৬০ কোটি টাকা। যা এর আগের সপ্তাহের তুলনায় ২.৭৯ শতাংশ কম।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সপ্তাহজুড়ে ০.৭৫ শতাংশ বেড়ে ৯৭৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শাকিল রিজভি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নিয়মের কারণে আপাতত শেয়ার বাজারে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও পরে তা ঠিক হয়ে যাবে। কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন, ডিএসইর পিই (শেয়ার প্রতি আয়) রেশিও ১৩.৮১ এবং সূচক ৫২৩৬ পয়েন্ট। যা অনেক কম। যদি পিই রেশিও বেশি হত তাহলে দূশ্চিন্তা বাড়ত ।