আজ মহামানবের শততম জন্মদিন
তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ তার শততম জন্মদিন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে মুজিববর্ষ। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এটি উদযাপন করা হবে।
১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রতি জাতির বিনম্র শ্রদ্ধাস্বরূপ এই দিনটি জাতীয় শিশু কিশোর দিবস হিসাবে উদযাপিত হয়।
১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। এরপর কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ১৯৪৬ সালে।
১৯৪৯ সালে নির্বাচিত হন তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম-সম্পাদক। ১৯৫৩ সালে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং পরের বছর যুক্তফ্রন্টের হয়ে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্য নির্বাচিত হন। মানুষের মুক্তির পক্ষে, ন্যায়ের পক্ষে আজীবন সোচ্চার বঙ্গবন্ধুকে রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তীকালে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। তার বিচক্ষণ ও সাহসী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ধাপে ধাপে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকে।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় পেলেও পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালি জাতির ওপর নানা নির্যাতন শুরু করে।
এর প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু। তার সেই ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
২৫ মার্চ মধ্যরাতে (২৬ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন তিনি। তার নেতৃত্বে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই ভূখণ্ডের মানুষ ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা।
যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশকে গড়ে তোলার দায়িত্বও তিনি কাঁধে নিয়েছিলেন। সে পথে এগিয়েছিলেন অনেকটুকু। কিছু কিছু ঘৃণ্য কুচক্রকারীর কারণে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ প্রাণ দিতে হয় জাতির এই সর্বশ্রেষ্ঠ নেতাকে।