করোনাভাইরাসে চিড়িয়াখানা: একে অন্যের খাবার হয়ে যাবে প্রাণীগুলো!
রৌদ্রোজ্জ্বল ইস্টার হলিডের এই দিনগুলোতে চিড়িয়াখানাগুলোতে উপচে পড়া ভিড় হওয়ার কথা ছিল। অথচ করোনাভাইরাসের থাবায় খাঁখাঁ করছে; সাহায্যের হাত বাড়াতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
জার্মানির উত্তরাঞ্চলের এক চিড়িয়াখানা পরিচালক তো স্বীকার করেই নিয়েছেন, বেঁচে থাকতে হলে, চিড়িয়াখানাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সহসাই প্রাণীগুলোকেই একে অন্যের খাবারের জোগান হতে হবে।
নুমুনস্টার চিড়িয়াখানার পরিচালক ভেরেনা ক্যাসপারি বলেন, 'কোন প্রাণীগুলোকে আগে বলি দিতে হবে, সেই তালিকাও আমরা করে রেখেছি।' খবর বিবিসির।
এদিকে বার্লিন চিড়িয়াখানায় রয়েছে ফুটফুটে যমজ পান্ডা শাবক। কিন্তু ভক্তরা শুধু অনলাইনেই ওদের দেখতে পাচ্ছেন।
চিড়িয়াখানার মুখপাত্র ফিলিন হাখমিস্টার বলেন, 'পান্ডা যমজটি খুবই আদুরে ও মিষ্টি। আহা, যদি দর্শণার্থীরা সামনে থেকে ওদের দেখতে পেতেন! চিড়িয়াখানা আবার যখন খুলে দেওয়া হবে, ততদিনে তো বড় হয়ে যাবে ওরা।'
অন্যদিকে, নুমুনস্টার চিড়িয়াখানার ক্যাসপারি বললেন, অন্য প্রাণীদের আহার জোগাতে কিছু প্রাণীকে বলি দেওয়ার বিষয়টি শেষ সমাধান হিসেবে ধরা হলেও, এতেও অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটবে না।
তিনি জানান, সীল ও পেঙ্গুইনগুলোকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে টাটকা মাছ খেতে দিতে হয়। বলেন, 'প্রাণীগুলোকে ক্ষুধায় মরতে থাকা দেখার চেয়ে আমার পক্ষে বলি দিয়ে দেওয়াই বোধহয় বেশি সহনীয়।'
'পরিস্থিতি এতই খারাপ, কিছু প্রাণীকে কেটে অন্য প্রাণীদের খাওয়াতে হবে...'- বেদনাবিধুর কণ্ঠে জানালেন ক্যাসপারি।
তার চিড়িয়াখানাটি ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য সরকারের দেওয়া ইমার্জেন্সি ফান্ডের অন্তর্ভুক্ত নয়। তিনি হিসেব করে দেখেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে এই বসন্তে তাকে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ইউরো বা ১ কোটি সাড়ে ৬৩ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে জনসাধারণের কাছে অর্থসাহায্যের পাশাপাশি সরকারের কাছে ১০ কোটি ইউরো অনুদানের আবেদন সম্মিলিতভাবে জানিয়েছে জার্মানির চিড়িয়াখানাগুলো।
মানুষের জন্য ছটফট
চিড়িয়াখানা পরিচর্যাকারীদের কেউ কেউ বলেছেন, এই পরিস্থিতি কিছু প্রাণীর মনোজগতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে; কেননা, ওরা মানুষ দেখে, মানুষের মনোযোগ পেয়ে অভ্যস্ত।
বার্লিন চিড়িয়াখানার হাখমিস্টার বলেন, মানুষের দেখা না পেয়ে অনেক প্রাণীরই একঘেয়ে সময় কাটছে। বিশেষ করে উল্লুক, তোতা পাখি, সীল মাছ ধরনের প্রাণীগুলোর।