করোনার ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের উপসর্গ ও সুরক্ষাবিধি
সারা বিশ্বে দ্রুত করোনাভাইরাসের ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। অধিক সংক্রামক এই ভ্যারিয়েন্টটির কিছু ঔষধ ও থেরাপি প্রতিরোধেরও ক্ষমতা আছে।
মহামারির আঘাতে বিপর্যস্ত ভারত ইতোমধ্যে ভ্যারিয়েন্টটিকে উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট ঘোষণা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটির ১২টি রাজ্যের ৪৯টি নমুনায় ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয়েছে। মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
করোনাভাইরাসের ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট থেকে সুরক্ষা পেতে টিকাদান ও মাস্ক পরার মতো সুরক্ষা বিধি মেনে চলা অত্যাবশ্যকীয়, জানান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রাশিয়া প্রতিনিধি মেলিটা ভাজনোভিচ।
"খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের কিছু করতে হবে, অন্যথায় আবারও লকডাউন দিতে হবে," বলেন তিনি।
ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিবর্তিত ধরন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট প্রথম ভারতে শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত ৮৫টি দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায়ও নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী এই ভ্যারিয়েন্টটি।
এ মাসের শুরুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
ডেল্টা প্লাস কেনো উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট?
এওয়াই.১ (AY.1) নামেও পরিচিত করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়েও ৬০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। এটি তুলনামূলকভাবে আরও সহজেই ফুসফুসের কোষের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে। কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহৃত বেশ কিছু ঔষধও প্রতিরোধ করতে সক্ষম এই ভ্যারিয়েন্টটি।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) মহামারিবিদ্যা ও সংক্রামক রোগের সাবেক প্রধান বিজ্ঞানী ড. রামান আর গঙ্গাখেদকার জানান, বর্তমানে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দুটি গ্রেডেড মিউটেশনের কথা জানা গেছে। দেশটিতে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রভাবশালী ভাইরাস স্ট্রেইন। এ দুটি গ্রেডেড মিউটেশন হলো এল৪৫২আর (L452R) ও পি৮৭১আর (P871R)।
"এই মিউটেশনের কারণেই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, আরও দ্রুত একজন মানুষ থেকে অন্যজনে সংক্রমিত হতে পারে। অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে দেহ কোষেও দ্রুত প্রবেশ করতে পারে," বলেন ড. গঙ্গাখেদকার।
উপসর্গগুলো কী কী?
ভারতের শীর্ষ ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের উপসর্গের মধ্যে ডেল্টা ও বেটা দুটি ভ্যারিয়েন্টেরই উপসর্গ দেখা যায়। এসব উপসর্গগুলো হলো কাশি, ডায়রিয়া, জ্বর, মাথাব্যথা, ত্বকে র্যাশ, হাত ও পায়ের আঙ্গুল বর্ণহীন হয়ে যাওয়া, বুক ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি।
অন্যান্য আরও কিছু উপসর্গের মধ্যে রয়েছে পেট ব্যথা, বমিভাব ও ক্ষুধা কমে যাওয়া।
- সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস