করোনা ফিরে ফিরে আসছে…
লকডাউন তুলে দেওয়ার পর টানা ৫৫ দিন পর্যন্ত বেইজিংয়ে নতুন করে কারও সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছে সবাই। খুলেছিল অফিস-আদালত। স্কুল মুখরিত হয়ে উঠেছিল শিশুদের কলকাকলিতে।
কিন্তু এই স্বাভাবিক নিশ্চিন্ত জীবন গত সপ্তাহেই হঠাৎ থমকে গেল। কারণ বেইজিংয়ে আবার ফিরে এসেছে করোনা। গত শুক্রবার পর্যন্ত, বেইজিংয়ে আরও ১৮০ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এবার বেইজিংয়ের একটি পণ্য বাজার থেকে ছড়িয়েছে ভাইরাসটি। আর তারপর আবারও লকডাউনে বেইজিং।
কয়েকদিনে শহরের ২০ মিলিয়ন লোককে আংশিক লকডাউনের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। শুরুর দিকে ভাইরাস দমনে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সেগুলো আবার নতুন করে প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে ৩ লাখ ৬৫ হাজার লোকের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়াতেও একই ঘটনা ঘটেছে। পরীক্ষা, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং এবং লকডাউন ব্যবস্থাপনায় সফল হলেও, হঠাৎ করে করোনার প্রাদুর্ভাব নতুন করে ঘটছে। দেশটিতে লকডাউন শিথিল করার কিছুদিন পর মে মাসের শেষের দিকে আবার করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে।
একই চিত্র দেখা গেছে সিঙ্গাপুরেও। করোনার বিরুদ্ধে সফল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে দেশটি। কিন্তু গত এপ্রিলেই আবার প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ।
চীনের একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ঝাং ইয়ং বলেন, হয়তো ভাইরাসটি কোনো হিমায়িত খাবারে বা অন্ধকার-স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় লুকিয়ে ছিল। স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু হলে মানুষের সংস্পর্শে এসে আবার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে ভাইরাসটি।
বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতিকে 'সেকেন্ড ওয়েভ' বা করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় পর্যায় বলে উল্লেখ করছেন। চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায় 'সেকেন্ড ওয়েভ' বলতে মহামারী একবার কমে যাওয়ার পর আবার নতুন করে ছড়ানোটাকে বোঝায়। শুধু কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রেই নয়, অতীতেও মহামারীগুলোর ক্ষেত্রে এমনটা দেখা গিয়েছিল।
সুতরাং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখন বলছে, ভাইরাসটি হয়তো টিকে থাকার জন্যই এসেছে, তখন নতুন করে সংক্রমণের মুখোমুখি হবার বিষয়টা স্বীকার করে নিতে হবে বিশ্বের দেশগুলোকেও। এক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হলো, কীভাবে তা আগেই অনুমান করা যায়, এবং চিহ্নিত করে মোকাবিলা করা যায়।
সূত্র: সিএনএন