গবেষণার জন্য মহাকাশে স্কুইড প্রেরণ নাসার
এবার হাওয়াই থেকে কয়েক ডজন বেবি স্কুইড গবেষণার জন্য মহাকাশে পাঠানো হয়েছে।
হাওয়াইয়ান ববটেইল প্রজাতির এসব বেবি স্কুইডের প্রজনন ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইয়ের কেওয়ালো মেরিন ল্যাবরেটরিতে সম্পন্ন করা হয়। এরপর এ মাসের গোড়ার দিকে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে স্পেসএক্স পুনর্নির্মাণ মিশনে তাদের মহাকাশে প্রেরণ করা হয়।
মূলত মহাকাশ অভিযানের সময় নভোচারীদের দেহে কী ধরনের প্রভাব পড়ে, সেটি জানাই এ মিশনের উদ্দেশ্য।
সোমবার হনলুলু স্টার-অ্যাডভাইটাইজার জানিয়েছে, ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইতে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনকারী গবেষক জেমি ফস্টার দীর্ঘদিন যাবত মহাকাশ মিশনের সময় মানব স্বাস্থ্যের উন্নতির আশায় স্পেসফ্লাইট কীভাবে স্কুইডকে প্রভাবিত করে তা নিয়ে গবেষণা করছেন।
প্রকৃতির ব্যাকটেরিয়ার সাথে স্কুইডের একটি সিম্বায়োটিক (মিথোজীবিমূলক) সম্পর্ক রয়েছে যা তাদের বায়োলুমিনেসেন্স নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। বায়োলুমিনেসেন্স হলো জীবের মাধ্যমে আলোর উৎপাদন এবং নির্গমন।
হাওয়াই ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মার্গারেট ম্যাকফল-এনগাই বলেন, যখন নভোচারীরা লো গ্র্যাভিটি বা কম মাধ্যকর্ষণ শক্তিতে থাকেন তখন তাদের দেহে বিদ্যমান কীটাণুগুলোর সাথে মানবদেহের সম্পর্কের পরিবর্তন ঘটে।
তিনি বলেন, "আমরা দেখতে পেয়েছি, যে মানুষের সাথে তার দেহের অভ্যন্তরে থাকা জীবাণুগুলোর মিথোজীবিতা মাইক্রো গ্র্যাভিটিতে এসে যেন বিভ্রান্ত হচ্ছে, স্কুইডের ক্ষেত্রেও এটির প্রমাণ পেয়েছে জেমি।"
"এবং যেহেতু এটি একটি সরল প্রক্রিয়া, ফলে জেমি এর গভীরে প্রবেশ করে কারণ অনুসন্ধান করতে পারবেন"।
জেমি ফস্টার বলেন, "নভোচারীরা মহাকাশে যত বেশি সময় কাটাতে থাকেন, ততই তাদের ইম্যুউন সিস্টেম (রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা) অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। এটি কার্যকারিতা হারাতে থাকে। তাদের ইম্যুউন সিস্টেম তখন সহজে ব্যাকটেরিয়া চিহ্নিত করতে পারে না আর। ফলে অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন নভোচারীরা"।
তিনি বলেন, মহাকাশে স্কুইডের কী ঘটে তা বোঝা গেলে মহাকাশচারীদের মুখোমুখি হওয়া এসব স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
নাসার এই নারী গবেষক আরও বলেন, "মানুষের ইম্যুউন সিস্টেমের এমন কিছু দিক রয়েছে যা দীর্ঘমেয়াদী স্পেসফ্লাইটের ক্ষেত্রে ঠিকমতো কাজ করে না। মানুষ যদি চাঁদে বা মঙ্গল গ্রহে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতে চায়, তবে তাদের নিরাপদে সেখানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে"।
বিশ্বব্যাপী গবেষণা প্রকল্প পরিচালনার জন্য কেওয়ালো মেরিন ল্যাবরেটরি স্কুইডের প্রজনন করে থাকে। হাওয়াইয়ের জলে ক্ষুদ্র এই সামুদ্রিক প্রাণির প্রচুর দেখা মেলে; প্রাপ্তবয়স্ক স্কুইড ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত দীর্ঘ হয়ে থাকে।
আগামী মাসে পৃথিবীতে ফিরে আসবে স্কুইডগুলো।
- সূত্র- ইউএনবি/এপি