টাইপরাইটার দিয়ে অবিশ্বাস্য ছবি
তার রঙের প্যালেটে কেবল দুটি রং- কালো আর লাল। ক্যানভাস এ৪ আকারের কাগজ। ক্যানভাসে তার স্টাইলটি নিঁখুত ব্রাশস্ট্রোকের চেয়েও কঠোর। আর তার মাস্টারপিসগুলো ট্যাপ আউট করতে সময় নেয় ৩০ ঘন্টা পর্যন্ত।
জেমস কুক তার মাস্টারপিসগুলো তৈরি করেন টাইপরাইটারে। তবে প্রচলিত রীতির বাইরে গিয়ে এই উপায়ে ছবি আঁকলেও গৃহীত শিল্প তৈরির পথে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও কেউই এই যুক্তি দিতে পারেনি যে, তার সমাপ্ত কাজগুলো বেশ কয়েকটি মনোযোগ আকর্ষণীয় কিছু নয়।
২৩ বছর বয়সী জেমস কুক স্থাপত্যকলার ছাত্র। টাইপরাইটারে অবিশ্বাস্য ছবি তৈরি করে চিত্রকলার সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছেন তিনি। শিল্প আর চিত্রকলা নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রচলিত ধারণাকে নতুন করে লিখছেন তিনি।
মার্কিন টাইপরাইটার শিল্পী পল স্মিথের কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হন জেমস। পল স্মিথ মস্তিষ্কের সেরিব্রাল প্যালসি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ফলে স্থির হাতে ব্রাশ বা কলম ধরতে পারতেন না। কিন্তু শিল্পীসত্তাকে তো দমানো যায় না। আর তাই টাইপরাইটারে ছবি আঁকা শুরু করেন পল।
পাঁচ বছর আগে নিজের টাইপরাইটারে কাজ করতে শুরু করেন জেমস। প্রথম প্রথম স্রেফ মজা করার জন্য শুরু করলেও এখন রীতিমতো পয়সা পান কাজের জন্য।
ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “কাজটি বেশ শ্রমনির্ভর। ডান হাতের তর্জনী আর বাম হাতের বুড়ো আঙুল রীতিমতো অবশ হয়ে আসে কাজ করতে করতে। কিন্তু আমার খুব ভালো লাগে। সবচেয়ে ভালো লাগে এই ভেবে যে, প্রযুক্তিটির এই অপ্রচলিত ব্যবহার দুর্দান্ত একটা জিনিস তৈরি করছে।
“ছবি ‘আঁকার’ জন্য আমি সাধারণত কাগজের মাঝখান থেকে শুরু করি। তারপর ধীরে ধীরে এগোই এবং আমার কাজ শেষ করি।”
ছবিতে নির্দিষ্ট অংশের জন্য নির্দিষ্ট অক্ষর বা চাবি ব্যবহার করেন জেমস। যেমন সোজা লাইন টানার জন্য ফুল স্টপ, আন্ডারস্কোর আর ফরোয়ার্ড স্ল্যাশ ব্যবহার করেন তিনি। আবার বক্ররেখার জন্য বন্ধনী আর জিরো ব্যবহার করেন তিনি।
জেমস জানান, @ প্রতীকটি শেডিংয়ের জন্য আদর্শ। তবে গভীরতা তৈরি করার জন্য তিনি অক্ষরগুলোকে একটি আরেকটির উপর দুটি বা তিনটি স্তরে আঁকেন।
জেমস লন্ডনের এসেক্সের ব্রেইনট্রি অঞ্চলের বাসিন্দা। লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজে স্থাপত্যকলা বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। তার পাঁচটি টাইপরাইটার রয়েছে।
সবচেয়ে পুরনোটি ১৯৫৩ সালের আর সবচাইতে সাম্প্রতিকটি ১৯৯১ সালের। এগুলোর মধ্যে কেবল একটি বৈদ্যুতিক, অন্য চারটি পুরানো ফ্যাশনের মেকানিক্যাল সংস্করণ।