নক্ষত্র পতনের এক বছর
আজ ১৫ নভেম্বর। সৌমিত্রকে ছাড়াই পৃথিবী কাটিয়ে দিলো ৩৬৫টি দিন। গতবছর এই দিনে ক্যান্সার ও কোভিড পরবর্তী অন্যান্য শারীরিক জটিলতার সামনে হার মেনে নেন এপার-ওপার বাংলার প্রবাদপ্রতিম পুরুষ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় নামটি শুধু একজন সফল অভিনেতার নামই নয়। এই নামের সঙ্গে জুড়ে আছে একজন সফল কবি, মঞ্চাভিনেতা, লেখক ও সম্পাদকের নাম। দীর্ঘ ৮৫ বছরের জীবনে শুধু অভিনয়ের জগতেই তিনি কাটিয়ে দিয়েছেন ৬০ বছরেরও বেশি সময়। তিনশ'র বেশি চলচ্চিত্রে দর্শক দেখেছে তার দাপুটে উপস্থিতি। তবে এত পরিচয়ের মধ্যেও, মানুষ তাকে বেশি মনে রেখেছে 'অপুর সংসার' এর 'অপু' হিসেবেই। চলচ্চিত্রের হাতেখড়ি 'অপুর সংসার' দিয়ে শুরু হয়েছে বলেই হয়তো এমনটা হয়েছে।
প্রারম্ভিক জীবন
বাংলা অভিনয় জগতের এই কিংবদন্তির জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি, পশ্চিমবঙ্গে নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে। আইনজীবী বাবা মোহিত কুমার চট্টোপাধ্যায় ও মা আশলতা চট্টোপাধ্যায়ও ছিলেন মঞ্চনাটকের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আশালতা ছিলেন স্থানীয় নাটকের দল 'প্রতিকৃতি'র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। সেই হিসেবে অভিনয় গুণ সৌমিত্রের জন্মসূত্রেই পাওয়া। তবে অভিনয়টা রক্তে থাকলেও তারুণ্যের প্রথমভাগে রূপালী পর্দা খুব একটা টানেনি তাকে। বরং তার হৃদয়ে তখন ছিল আবৃত্তি আর মঞ্চনাটকে্র প্রবল নেশা।
কলকাতার সিটি কলেজে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ার সময় নাট্যব্যক্তিত্ব শিশির কুমার ভাদুড়ীর সাথে যোগাযোগ হয়েছিল তার। তখন থেকেই অভিনয়কে জীবনের মূল লক্ষ্য করে নেবার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ভাদুড়ীর ন্যাটাভিনয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। তবে অনুপ্রেরণা ভাদুড়ীর থেকে এলেও, বীজ বুনে দিয়ে যান প্রখ্যাত অভিনেতা ও নির্দেশক অহীন্দ্র চৌধুরী। সৌমিত্রর প্রথম গুরু ছিলেন তিনি। তার হাত ধরেই মঞ্চনাটকে পা রাখেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
সৌমিত্রের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি যোগসূত্র আছে। যা আমাদের অনেকেরই অজানা। সৌমিত্রর পরিবারের আদিবাড়ি ছিল বাংলাদেশের কুষ্টিয়ায় শিলাইদহের কাছে কয়া নামে একটি গ্রামে। তার পিতামহের সময় থেকে তারা কৃষ্ণনগরে বসবাস শুরু করেন। সেদিক থেকে আমাদের লালন অঞ্চলের প্রতিবেশীও কিন্তু বলা যায় তাকে ।
সত্যজিত ও সৌমিত্র
চলচ্চিত্রে তার প্রথম আত্মপ্রকাশ ১৯৫৯ সালে সত্যজিত রায়ের 'অপুর সংসার' ছবিতে। সত্যজিত রায় তার প্রথম ছবি 'পথের পাঁচালী' করার পর যখন দ্বিতীয় ভাগ 'অপরাজিত' করবেন বলে কিশোর অপুর চরিত্রের জন্য একজনকে খুঁজছিলেন, তখন সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে আলাপ হয় সৌমিত্রর।
প্রথমে,অপরাজিত ছবির অডিশনে সৌমিত্রকে নিতে রাজি হননি পরিচালক সত্যজিত রায়। কারণ 'অপু' চরিত্রের বয়স অনুযায়ী সৌমিত্র কিছুটা বড় ছিলেন। কিন্তু এরপর যখন অপুর সংসার সিনেমা শুরু করেন তিনি তখন সৌমিত্রকে ডেকে নেন মূল চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সৌমিত্রকে। পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে তার গড়ে উঠেছিল এক গভীর বন্ধন।
সত্যজিৎ রায়ের পুত্র সন্দীপ রায়েরই এক লেখায় জানা যায়, সেই সময়ে অনেকে সত্যজিৎ রায়কে সৌমিত্রর 'মানসপিতা' বলতেন আর সৌমিত্রকে সত্যজিৎ এর 'মানসপুত্র'। পরিচালক ও অভিনেতার নির্ভরতা, রসায়ন দেখে অনেকে বলতেন, দুজনের মধ্যে পিতা-পুত্রের সম্পর্কই হয়ে গেছে।
অপুকে যেভাবে বাঙালি বুকে জড়িয়েছে, তেমনি বইয়ের ফেলুদার সঙ্গেও পরিচয় করে দিয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সত্যজিত রায়ের ১৪টি ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র। এর মধ্যে হিরক রাজার দেশে, ঘরে বাইরে, চারুলতা, অরণ্যের দিনরাত্রি, অশনি সঙ্কেত ইত্যাদি ভীষণ সাফল্য অর্জন করে। এভাবে নিত্যনতুন ভূমিকায় নিজেকে ভেঙেছেন অশনিসংকেতের গঙ্গাচরণ, হীরক রাজা দেশের উদয়ন পণ্ডিত। শোনা যায়, তাঁকে ভেবেই অসুখ ছবির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ।
সাহিত্য ও সৌমিত্র
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম প্রেম ছিল নাটক আর দ্বিতীয় প্রেম ছিল সাহিত্য। তিনি এবং নির্মল আচার্য ১৯৬১ সালে তৈরি করেছিলেন এক্ষণ নামে একটি সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা। তিনি ছিলেন এই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রতিষ্ঠাতা।মননশীল পাঠকরা ওই পত্রিকার জন্য অপেক্ষা করে থাকতেন। তবে এই পত্রিকার নামকরণ করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। সত্যজিৎ ও সৌমিত্রের সম্পর্কের আন্তরিকতাই প্রকাশ পায় এর মধ্য দিয়ে।
লেখক সৌমিত্র
সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে "মানিকদার সঙ্গে" নামে একটি বইও লিখেছিলেন লেখক সৌমিত্র। তার ইংরেজি অনুবাদটির নাম "দা মাস্টার অ্যান্ড আই"। 'মানিকদার সঙ্গে ' মুক্তি পাওয়ার আগে সৌমিত্রের আত্মজীবনী মূলক বই ছিল 'পরিচয় '। এছাড়াও 'অগ্রপথিকেরা', 'চরিত্রের সন্ধানে', 'শব্দরা আমার বাগানে', 'মধ্যরাতের সংকেত' সহ বহু বই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে বাঙালির কাছে আসে।
কবি ও সৌমিত্র
অভিনেতা হিসেবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের খ্যাতির কাছে তার কবি সত্ত্বা কিছুটা আড়ালে পড়লেও যারা কবিতার খোঁজ খবর রাখেন তাদের কাছে কবি সৌমিত্র নামটা অবশ্য নতুন নয়। আবৃত্তিকে শিল্পের একটি অনন্য শাখায় নিয়ে যাওয়াতেও রয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অসামান্য অবদান।
কবিতা প্রসঙ্গে অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলতেন, 'কবিতার ক্ষেত্রে, বেরিয়ে আসে আমার সেই আমি, যে নিজেকে আড়াল থেকে টেনে এনে প্রকাশ করতে চায়। সেই আমি মুক্ত। কবিতা আমাকে মুক্ত করে দেয়।'
তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে 'ব্যক্তিগত নক্ষত্রমালা', 'জলপ্রপাতের ধারে দাঁড়াবো বলে', 'শব্দরা আমার বাগানে', 'যা বাকি রইল', 'পড়ে আছে চন্দনের চিতা', 'ধারাবাহিক তোমার জলে' উল্লেখযোগ্য।
কবিতা অন্তঃপ্রাণ সৌমিত্র ছিলেন একজন সত্যিকারের রবীন্দ্রপ্রেমী। তার কথায় সব সময় উঠে আসতো রবীন্দ্রনাথ। বাদ পড়ত না জীবনানন্দ দাশ থেকে এ কালের তরুণ কবিদের কবিতাও। রবীন্দ্রনাথ আর জীবনানন্দের কবিতা যেন তার কাছে পেত ভিন্ন এক মাত্রা। কবিতাপ্রেমী মানুষের হৃদয়ে-মননে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের উদাত্ত কণ্ঠ চিরজীবী হয়ে থাকবে চিরকাল।
চলচ্চিত্র জগত
অভিনয়ে তাঁর প্রথম গুরু ছিলেন অহীন্দ্র চৌধুরী। কিন্তু অভিনেতা হিসেবেই যে জীবনে তিনি এগোতে চান, সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শিশির ভাদুড়ির একটি নাটক দেখার পর।
আত্মপ্রকাশের শুরুর পথ সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে হলেও, বাংলা ছবির প্রায় সমস্ত মননশীল পরিচালক যথা মৃণাল সেন, তপন সিনহা, তরুণ মজুমদার, গৌতম ঘোষ, ঋতুপর্ণ ঘোষ, অপর্ণা সেন, কৌশিক গাঙ্গুলী, অতনু ঘোষ, শিবপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়,নন্দিতা চৌধুরী,সৃজিত মুখার্জীর সাথে তিনি অভিনয় করেছেন। শুধু তাই-ই নয়,সত্যজিৎ এর সমসাময়িক যারা ছিলেন তাদের সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি সেই সময়ে।
বাংলা সিনেমার মহানায়ক যাকে আমরা বলি, সেই উত্তম কুমারের সঙ্গে এক সারিতে তার নাম চলে এসেছে বারংবার। বাংলা ছবির দর্শক এক সময় দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল এই দুই প্রবাদপ্রতীম অভিনেতার পক্ষে বিপক্ষে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় শুধু যে আর্ট হাউজ সিনেমা করেছেন সেরকম নয়, রোমান্টিক এবং কমেডি ছবিতেও তার বিচরণ ছিল।
তবে সব ছাপিয়ে সত্যজিতের ফ্রেমের জন্যই যেন তিনি এসেছিলেন এই সংসারে।
ঘোষক সৌমিত্র
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম পরিচয় অভিনেতা হলেও অল ইন্ডিয়া রেডিও'র ঘোষক হিসেবেই কিন্তু তার পেশাগত জীবনের শুরু। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জলদগম্ভীর কণ্ঠস্বর,কলেজ জীবন থেকে মঞ্চাভিনয়ে হাতেখড়ি তার বাচনিক দক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
মঞ্চ বা পর্দা কোনোটিই নয়, রেডিওই ছিল তাঁর প্রথম পেশাগত মাধ্যম।
রাজনৈতিক সৌমিত্র
রাজনৈতিক ভাবনাতেও তাঁর অবস্থান ছিল স্পষ্ট। ধর্মের নামে গোঁড়ামি আর বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে তিনি বরাবরই ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। বামপন্থী সৌমিত্র ছিলেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির কট্টর সমালোচকদের একজন, তিনি ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (মার্ক্সবাদী) সমর্থক।
বিভিন্ন সময় লেখালেখিতেও তার রাজনৈতিক ভাবনার কথা উঠে এসেছে। তিনি কখনো তার রাজনৈতিক মতাদর্শ লুকোননি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাই-ই ছিলেন। তার অভিনীত শেষ ছবি 'বরুনবাবুর বন্ধু'তে ছিল রাজনৈতিক বার্তা। দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই সৌমিত্রবাবুর বাম-প্রতিবাদী সত্ত্বার প্রকাশ ঘটেছে এই ছবিতে।
অর্জন
চলচ্চিত্রে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা 'দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার' ছাড়াও বেশ কয়েকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ফ্রান্স সরকার তাকে 'লিজিয়ন অব দ্য অনার' পদকে ভূষিত করেছে। ২০০৪ সালে ভারত সরকার তাকে দিয়েছে 'পদ্মভূষণ' খেতাব।
ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্যাথরিন বার্জ তার জীবন নিয়ে তৈরি করেছিলেন একটি তথ্যচিত্র 'গাছ'।
ব্যক্তিগত জীবন
পর্দায় তো নয়ই, ব্যক্তিজীবনেও দায়িত্ব ,ভালোবাসায় ,যত্নে তিনি কোনো কমতি রেখে যাননি। পরিবারের সদস্যদের কাছেও তিনি হয়ে উঠতে পেরেছিলেন একজন আদর্শ পিতা ও স্বামী। সৌমিত্রের স্ত্রী দীপা চট্টোপাধ্যায়ও ছিলেন সংস্কৃতিকর্মী। মেয়ে পৌলমী বসু মঞ্চনাটকের নির্দেশক, ছেলে সৌগত চট্টোপাধ্যায় একজন কবি।
১৯৬০ সালের ১৮ এপ্রিল বিয়ে হয়েছিল সৌমিত্র-দীপার। সৌমিত্রের পারিবারিক জীবনে পর্বতের মতো মহীয়ান হয়ে ছিলেন দীপা চট্টোপাধ্যায়। নানাভাবে সমর্থন জুগিয়েছেন সৌমিত্রের ক্যারিয়ারে। সৌমিত্রের সাফল্যের অন্যতম কান্ডারি তিনি।হাতে গোনা ছবিতে অভিনয়ও করেছেন দীপা চট্টোপাধ্যায়। এর মধ্যে উল্লেখ্য, 'বিলম্বিতলয়', 'গাছ' ও 'দুর্গা'। সৌমিত্রের প্রয়াণের চার মাস পরে তিনিও চলে যান অনন্তযাত্রায়। পর্দার 'অপু'র সঙ্গে ছিল তাঁর সাজানো সংসার।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নাতি (পৌলমীর ছেলে) রণদীপ বসু টালিগঞ্জের উদীয়মান অভিনেতাদের একজন। নির্মাতা ও গায়ক অঞ্জন দত্ত পরিচালিত 'দত্ত ভার্সেস দত্ত' চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পাওয়া রণদীপ পরবর্তীতে 'লুডো', 'ফ্যামিলি অ্যালবাম', 'মেসি'সহ আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
গত বছর শেষ জন্মদিনেই তাঁর জীবনীভিত্তিক ছবি (বায়োপিক) নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। বায়োপিকে তরুণ সৌমিত্রর ভূমিকায় যিশু সেনগুপ্ত আর পরিণত বা শেষ বয়সের অংশে অভিনয় করেছেন স্বয়ং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। 'অভিযান' নামের সেই বায়োপিকের কাজ জুলাই মাসেই শেষ করেন তিনি। সৌমিত্র অভিনীত শেষ ফিচার ফিল্ম এটি। 'অভিযান' ছাড়াও মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে সৌমিত্র অভিনীত সিনেমা 'বেলা শুরু'।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়' নামটির সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির আবেগ। আমাদের জীবনের ঠিক কতটা জায়গা জুড়ে তিনি রয়েছেন, তা অক্ষরের বিন্যাসে তুলে ধরা সত্যিই কঠিন। তিনি হলেন এক বিশাল বটবৃক্ষ যা সারাজীবন আগামী প্রজন্মকে ছায়া দিয়ে যাবে।