বার্জার আর্টিস্তা: দেশে তৈরি প্রথম অ্যাক্রলিক রঙ
রঙের বাজারে বহুল পরিচিত নাম বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড (বিপিবিএল)। বহু বছর ধরে চারু ও কারুশিল্পের পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকা পালন করে আসছে কোম্পানিটি।
সম্প্রতি প্রথমবারের মতো দেশে তৈরি অ্যাক্রলিক পেইন্ট 'বার্জার আর্টিস্তা' বাজারে এনেছে কোম্পানিটি।
দেশের বেশিরভাগ অ্যাক্রলিক রঙই আমদানিকৃত, দামও চড়া। ফলে বাংলাদেশি শিল্পীদের রঙ কিনতেই বেগ পোহাতে হয়।
এ সমস্যার কথা মাথায় রেখেই দেশি শিল্পীদের কষ্ট লাঘব করতে আন্তর্জাতিক মানের ও একইসঙ্গে দামে সুলভ এ রঙ বাজারে এনেছে বার্জার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেনের পরামর্শে প্রাথমিকভাবে সাতটি রঙের শেড বাজারে এনেছে বার্জার।
রঙগুলো হলো- কালো, টাইটেনিয়াম হোয়াইট, কোবাল্ট ব্লু, ভিরিডিয়ান গ্রিন, ক্যাডমিয়াম ইয়েলো, ইয়েলো ওক্রে ও ভারমিলিয়ন।
অধ্যাপক নিসার হোসেনের মতে , রঙের এ সাতটি মৌলিক শেড একটি চিত্রকর্ম রঙ করার জন্য যথেষ্ট।
১২০ মি.লি. আকারের টিউবে বাজারে এসেছে রঙগুলো, প্রতি টিউবের দাম ১৮০ টাকা। আমদানিকৃত বেশিরভাগ অ্যাক্রলিক রঙের দামই টিউবপ্রতি ২৩০ থেকে ২৮০ টাকা। সে তুলনায় বেশ কম দামেই পাওয়া যাচ্ছে বার্জার আর্টিস্তা।
নিউ মার্কেটের মডার্ন স্টেশনারি ও বই বিচিত্রার সব শাখায় বার্জার আর্টিস্তা পাওয়া যাচ্ছে। এফ-কমার্স পেজ 'এপিলোগ' থেকেও অর্ডার করতে পারবেন গ্রাহকরা।
খুলনা, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রধান প্রধান স্টেশনারিতেও এ রঙ পাওয়া যাচ্ছে।
বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের মার্কেটিংয়ের ক্যাটাগরি ম্যানেজার সৈয়দ শরীফ রাসেল বলেন, "নতুন ডিস্ট্রিবিউটর নিয়োগ দিচ্ছি আমরা। খুব শিগগিরই সারাদেশে এ রঙ পাওয়া যাবে।"
২০১৯ সাল থেকে এ পণ্যটি তৈরির কাজ করছে বার্জার।
"আমাদের এ পণ্যটি বাজারে আনার আগে, বাজারে সহজলভ্য সব রঙ সংগ্রহ করে গুণাগুণ যাচাই করে দেখেছি," বলেন তিনি।
"আন্তর্জাতিক গুণসম্পন্ন পণ্য উৎপাদনে আমাদের আর&বি টিম, প্রোডাকশন, সাপ্লাই চেইন ও মার্কেটিং টিম নিবিড়ভাবে কাজ করেছে," যোগ করেন তিনি।
বার্জারের মার্কেটিংয়ের প্রোডাক্ট অফিসার আমরিনা তাসনিম রশনি বলেন, "পণ্যটি তৈরির পুরো সময়জুড়ে চারুকলার অনেক শিক্ষকই আমাদের ফিডব্যাক দিয়েছেন,"
রঙ তৈরির সময় জুড়ে ২০ বারেরও বেশি প্রদর্শনের পর স্টেকহোল্ডাররা রঙের গুণ নিয়ে সন্তুষ্ট হওয়ার পরই বাজারে পণ্যটি ছাড়া হয় বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক নিসার হোসেন সহ সহকারি অধ্যাপক শহীদ কাজী ও প্রভাষক বিশ্বজিৎ বার্জার আর্টিস্তা তৈরির পুরো প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে অবদান রেখেছেন।
পণ্যটির বাজারে আনতে কোম্পানিটির চ্যালেঞ্জের বিষয়ে রাসেল বলেন, "আমাদের বিদ্যমান কাঠামোতে প্যাকেজিং একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রোডাকশন ফ্যাসিলিটিতে বড়সড় পরিবর্তন আনতে হয়েছে,"
বর্তমানে কোনো প্রদর্শনীতে বা শিল্পীকে স্পন্সর করছে না বার্জার।
"প্রস্তাব পেলে আমরা অবশ্যই এবিষয়ে এগুবো। দেশের শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গে আরও নিবিড় যোগাযোগ রাখতে আগ্রহী আমরা।"
বাংলাদেশে আঁকার রঙের বাজার ৮-১০ কোটি টাকার। আমদানিকৃত পণ্যের ওপরই নির্ভরশীলতা বেশি।
রাসেল বলেন, "আমরা বাংলাদেশে শুধু ব্যবসাই করি না, মানুষের প্রয়োজনের বিষয়েও লক্ষ্য করি আমরা। আশা করি ভবিষ্যতে আরও দেশীয় কোম্পানি আমাদের সঙ্গে যোগ দেবে, একত্রে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারব আমরা,"
উঠতি শিল্পী ও তরুণ প্রতিভাবানদের জন্য বার্জার আর্টিস্তা বার্জারের পক্ষ থেকে ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ।
সামনের দিনগুলোতে কোম্পানিটি রঙের প্যালেটে আরও বৈচিত্র্য নিয়ে হাজির হবে।
ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতা, অংশগ্রহণমূলক সেশন ও ক্যাম্পেইনের আয়োজন করতে চায় বার্জার।
দাম: ১৮০ টাকা (প্রতিটি ১২০ মিলির টিউব)
রঙ: কালো, টাইটেনিয়াম হোয়াইট, কোবাল্ট ব্লু, ভিরিডিয়ান গ্রিন, ক্যাডমিয়াম ইয়েলো, ইয়েলো ওক্রে ও ভারমিলিয়ন।
কোথায় পাওয়া যাবে: মডার্ন স্টেশনারি, বই বিচিত্রা, এফ-কমার্স পেজ 'এপিলোগ'