আকাশ কেন নীল?
আকাশ কেন নীল? এর পেছনে সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকলেও আমাদের অনেকের কাছেই প্রশ্নটির উত্তর অজানা। কিন্তু যখন আমরা আকাশের নীল হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য একটি মুহূর্ত সময় নিই, তখন এটি আমাদের কাছে একটি মজার প্রশ্ন হয়ে ওঠে।
আকাশের রঙ নীল হওয়ার পেছনে সূর্যের আলোর ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালির প্রতিটি তরঙ্গ থেকে শুরু করে বায়ুমণ্ডলে থাকা অধিক পরিমাণের অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন অণু এবং আমাদের রেটিনায় থাকা শঙ্কু কোষের সমান ভূমিকা রয়েছে।
সূর্যের আলো যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পৌঁছায় তখন এটি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালির প্রতিটি তরঙ্গ ধারণ করে। এতে দৃশ্যমান আলোর বেগুনি ও নীল রঙের ছোট তরঙ্গ থেকে শুরু করে কমলা ও লাল রঙের দীর্ঘ তরঙ্গ থাকে।
আমাদের চোখ যখন এই সমস্ত তরঙ্গকে একত্রে দেখতে পায় তখন এগুলোকে খাঁটি সাদা রঙের মতো দেখায়।
সূর্যের আলোর পাশাপাশি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের অণু থাকে। একই সাথে থাকে ধুলো, জলীয় বাষ্প এবং দূষণকারী কণা।
সূর্যের আলো যখন প্রথমে বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে পৌঁছায় তখন এটি বাতাসে থাকা নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেনের অণুকে আঘাত করে।
এই অণুগুলো আকারে ছোট হওয়ার দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো সহজেই নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন অণুর বাধা পার করতে পারে।
কিন্তু আলোর ছোট তরঙ্গ অণুগুলোকে আঘাত করার ফলে বাধাগ্রস্ত হয় এবং বিক্ষিপ্ত হয়ে চারদিকে নীল এবং বেগুনি আলো ছড়িয়ে দেয়। এটিকে বলা হয় রেলে স্ক্যাটারিং (রেলে বিক্ষিপ্ততা) যার নামকরণ এটির আবিষ্কারক ও পদার্থবিদ রেলের নামানুসারে করা হয়েছে।
আকাশ নীল দেখায় কারণ বায়ুমণ্ডলে থাকা নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেনের অণুগুলো দৃশ্যমান বর্ণালির নীল প্রান্তের দিকে স্বল্প তরঙ্গদৈর্ঘ্যে আলোকে ছড়িয়ে দেয়।
অন্যান্য রঙগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আমাদের কাছে পৌঁছালেও নীল আলোর তরঙ্গের প্রাচুর্যের কারণে আমাদের চোখে আকাশকে নীল দেখায়।
আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ছোট তরঙ্গগুলো নীল এবং বেগুনি রঙের সাথে মিলে যায় যা আকাশের প্রকৃত রঙকে নীলচে বেগুনি করে তোলে।
আমাদের চোখে থাকা শঙ্কু কোষ বেগুনি রঙের প্রতি খুব সংবেদনশীল না হওয়ায় বেগুনি রঙ শনাক্ত করতে পারি না। এর জন্য আমাদের চোখে আকাশের রঙ নীল দেখায়।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়