বিলুপ্ত চিতা ফিরে আসবে ভারতে?
৭০ বছর আগে ভারত থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া চিতাকে ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।
সরকারের করা একটি আবেদনের শুনানির প্রেক্ষিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ভারতের ‘নিবিড়ভাবে বাছাই করা কিছু স্থানে’ আফ্রিকান চিতাকে এনে পুনর্বাসন করা যেতে পারে। খবর বিবিসির।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এনডেনজারড স্পিসিস এর ভাষ্য অনুযায়ী, চিতা একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রাণী। বর্তমানে সারাবিশ্বে ৭ হাজার ১০০ চিতা বেঁচে আছে যার অধিকাংশেরই অবস্থান আফ্রিকায়।
ভারতে আগে যেসব চিতার দেখা মিলতো, বর্তমানে সেই প্রজাতির কিছুর দেখা মেলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে। তবে সেই সংখ্যাটিও ৫০ এর বেশী নয় বলে বন্যপ্রাণীবিদদের ধারণা।
ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, এই প্রাণীকে (চিতা) ভারতে এনে পরীক্ষামূলকভাবে ছাড়া যেতে পারে যাতে তারা এই পরিবেশে ঠিকমতো অভিযোজন করতে পারে কিনা তা যাচাই করা যায়।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, ওপনিবেশিক আমল থেকে ভারতে ভেড়া এবং ছাগলপালকদের দ্বারা প্রায় ২০০ চিতা মারা গেছে। এটিই একমাত্র বড় স্তন্যপায়ী প্রাণী যা ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর এই উপমহাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়েছে।
বিগ ক্যাট প্রজাতির চিতাকে ভারতে ফের নিয়ে আসার ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের এমন নির্দেশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দেশটির সাবেক পরিবেশমন্ত্রী জয়রাম রমেশ।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্যপ্রাণিবিষয়ক কর্মকর্তা, চিতা এক্সপার্ট ও পরিবেশ সংরক্ষণবাদীরা ভারতে চিতার পুনঃপ্রবর্তনের বিষয়ে একমত হয়ে আসছেন।
তবে শীর্ষ পরিবেশ সংরক্ষণবাদীরা এ পরিকল্পনা নিয়ে আশঙ্কা করেছেন। তারা ধারণা করছেন, স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে না দিয়ে ভারতে চিড়িয়াখানা ঘরানার উন্মুক্ত স্থানে আধা-বন্দী অবস্থায় চিতাদের রাখা হতে পারে।
তারা বলেন, চিতাদের বাসস্থান ও শিকারের স্থান পুনরুদ্ধার না করা গেলে এবং মানুষের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ এড়ানো না গেলে নতুন করে চিতার সংখ্যা বাড়ানোটা দুষ্কর হয়ে যাবে।
এর আগে অন্যান্য প্রাণীদের পুনর্বাসনের রেকর্ডও তারা যাচাই করেন।
১৯৫০ সালে দেশটির উত্তর প্রদেশের চন্দ্রপ্রভা অভয়ারণ্যে সিংহ ছাড়া হয়। তবে সে প্রকল্প সফল হয় নি। ১৯২০ সালে রাজস্থানের দুর্গাপুরে বাঘ ছাড়া হয়। ১৯৫০ সালের আগেই বাঘগুলোকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়।