ইস্ত্রির বিবর্তন: কাপড় মসৃণ করার যত পথ
রাফেল ড্র'তে গতবছর উপহার হিসেবে পেয়েছিলাম একটি ড্রাই আয়রন। যেহেতু ফরমাল পোশাকগুলো সব লন্ড্রিতেই দিয়ে আসা হয়, তাই আয়রনটি বাসায়ই পড়ে থাকে। শুধু হুটহাট বাহিরে বের হবার সময় খুব বেশি কুঁচকে থাকা কাপড়গুলোর উপরে পাঁচ-দশ মিনিট টান দিয়ে নিই। ওজনে হাল্কা হওয়ায় এই অল্প কাপড়ের জন্য পরিশ্রমও বেশি লাগেনা। কিন্তু মুশকিল হলো– কটন, লিলেন, উল, ডেনিমের মতো কাপড়গুলো সহজে মসৃণ হতে চায়না। তার জন্য দরকার হয় স্টিম আয়রনের।
স্টিম আয়রনগুলো সাধারণ আয়রনের মত দেখতে হলেও এর ওয়ার্কিং মেকানিজম সম্পূর্ণ আলাদা। এতে থাকে একটি ওয়াটার ট্যাংক, বাষ্প উৎপন্ন করার জন্য একটি হিটিং এলিমেন্ট, আয়রন থেকে বাষ্প বের করার জন্য অনেকগুলো ছিদ্র বিশিষ্ট সোলপ্লেট। স্টিম আয়রন দিয়ে তুলনামূলক অধিক পরিমাণে কাপড় আয়রন করা যায়। এটি ওজনেও ভারী, খরচও বেশি। তাই এ ধরনের আয়রন ব্যবহার করা হয় সাধারণত লন্ড্রিতে। পরিপাটি আর একদম নিখুঁত মসৃণ কাপড় পেতে চাইলে এখনও তাই লন্ড্রির দোকানগুলোই ভরসা।
বলা হয়, প্রাচীন মিশরে কাপড় ইস্ত্রি করা ছিল খুবই উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন একটি পেশা। কেননা সেখানে উন্নত, পরিস্কার, পরিপাটি কাপড়কে ধরা হতো আভিজাত্যের প্রতীক। একইভাবে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ইস্ত্রি করা কাপড় পরিধানকে ধরা হয় সম্মান প্রদর্শনের উপায় হিসেবে। একজন ব্যক্তি ইস্ত্রি করা পরিপাটি কাপড় পরলেন, তার মানে তিনি নিজের এবং অন্যদের প্রতিও সম্মান দেখালেন। বোধহয় একারণেই হুমায়ূন আহমেদ তার 'শ্রাবণ মেঘের দিন' চলচ্চিত্রে মতিকে দেখিয়েছেন কাপড় ইস্ত্রি করার চিত্রে। জমিদারের সাথে দেখা করবে বলে মতি চরিত্রটি খুব যত্নের সাথে তার শার্টটি ইস্ত্রি করে দেয়। শার্টের ওপর হাল্কা পানি ছিটিয়ে গরম গোল একটি লোহার পাত্র বা তাওয়া দিয়ে চেপে চেপে কুঁচকানো শার্টটি সমান করতে দেখা যায় তাকে।
পোশাক ইস্ত্রি করার এই চর্চা গ্রামগঞ্জ, শহর সবখানেই আছে। পোশাকের ব্যাপারে যারা পরিপাটি থাকতে পছন্দ করেন, ইস্ত্রি ছাড়া কাপড় তারা পরেন না বললেই চলে।
কাপড় মসৃণ করার জন্য যত পথ
ইস্ত্রির শুরুটা কেন, হয়েছিল কার হাত ধরে হয়েছিল— সেটি জানা না গেলেও চীনেই এর ব্যবহার প্রথম দেখা যায়। তবে সেটার আকৃতি আজকের দিনের আয়রন মেশিন বা ইস্ত্রির মতো ছিল না। ইস্ত্রি বলতে বোঝায় জামাকাপড় মসৃণ, চকচকে ও কঠিন করবার জন্য ধাতুনির্মিত যন্ত্রবিশেষ। প্রাচীন চীনে, লোকেরা সিল্কের পোশাক মসৃণ করার জন্য কাঠকয়লা ভর্তি উত্তপ্ত ধাতব প্যান ব্যবহার করতেন। একইসাথে প্রাথমিক মসৃণ সরঞ্জাম হিসাবে ইউরোপে ব্যবহৃত হতো কাঠ, পাথর বা কাচের সমতল টুকরা। এই পাথর বা সমজাতীয় বস্তুগুলোকে আগুনে গরম করে কাপড়ের ওপর চেপে রাখা হতো, যেন কাপড়ের ভাজগুলো মসৃণ হয়ে যায়।
যেমন— প্রাচীন গ্রিসের মানুষজন 'প্লেক্ট্রাম' নামক একধরনের যন্ত্র ব্যবহার করতেন— যা ছিল হাতির দাঁতের তৈরি এক ধরনের হাড়। একইভাবে প্রাচীন রোমানিয়ানরা 'ক্যালেন্ডার' নামক এক ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করতেন। এটাও ছিল পাথর বা ধাতবের তৈরি।
চীনাদের ইতিহাসে কয়লা দিয়ে গরম করা তাওয়ার ইস্ত্রির ব্যবহারও আছে। মধ্যযুগে ধাতব এই তাওয়ার পরিবর্তে এলো ধাতব লোহার ব্যবহার। এটিও চুলোয় গরম করে নেওয়া হত। জানা যায়, সমসাময়িক, অর্থাৎ মধ্যযুগে ধনীরা ব্যবহার করতেন এক ধরনের মেটাল বক্স— যার মধ্যে কয়লাভর্তি থাকত। এ প্রক্রিয়াকে বলা হতো 'মসৃণকরণ' এবং এ কাজটি বাড়ি বাড়ি ঘুরে করতেন পেশাদার ব্যক্তিরাই।
ইতিহাস এবং প্রত্নতাত্ত্বিক সূত্র থেকে জানা যায় ১৭ শতকের দিকে ভারী লোহা ব্যবহার করে 'ব' আকৃতির সমতল ইস্ত্রি ব্যবহার শুরু হয়। লোহার তৈরি ইস্ত্রির মধ্যে বিশেষভাবে থাকা একটি চেম্বারে জলন্ত কাঠকয়লা ভরে তার তাপেই কাপড় ইস্ত্রি করা হতো। অবশ্য এ ধরনের প্রযুক্তি তখনও সাধারণের নাগালের মধ্যে ছিলোনা। তা কেবল অভিজাত ধনাঢ্য পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। শিল্পবিপ্লবোত্তর ইংল্যান্ডের বাণিজ্যিক প্রসারের মাধ্যমেই তা ইংল্যান্ডের মধ্যবিত্ত শ্রেণির নাগালে চলে আসে এবং ক্রমশ তা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
তবে ভারতবর্ষেও ঠিক কোন আমল থেকে ইস্ত্রি করা কাপড় পরিধানের রেওয়াজ শুরু হয়, তা জানা যায়নি। খুব সম্ভবত তা ১৭ শতকের আগে নয়। তবে ইন্টারনেট বলছে, ঢাকায় পর্তুগিজরা প্রথম কাপড় ইস্ত্রির ধারণাটি প্রচলন করেন। 'ইস্ত্রি' শব্দটিও পর্তুগিজ।
আগে কয়লা ব্যবহৃত ইস্ত্রির প্রচলন ছিল। পাখা দিয়ে ক্রমাগত বাতাস করে জ্বালানো হতো কয়লা, তারপর চলত কাপড় মসৃণ করার কাজ। এই কয়লা, ধাতব ইস্ত্রি, বা বক্স ইস্ত্রিগুলো যেমন খুব শ্রমসাধ্য ছিল, তেমন ঠান্ডাও হয়ে যেত দ্রুত। কয়লার তৈরি ইস্ত্রিগুলোও বেশিক্ষণ তাপ ধরে রাখতে পারত না। এগুলোতে ব্যবহার হতো অ্যালকোহল, কেরোসিন, গ্যাসোলিন। ফলে এমন ইস্ত্রির প্রয়োজন দেখা দেওয়া শুরু করলো, যেটাতে তাপ থাকবে অনেক্ষণ।
এরপর উনিশ শতকে নানা পরীক্ষা নিরিক্ষা নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৮৮২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হেনরি ডব্লিউ সিলে তৈরি করেন প্রথম বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি। কিন্তু এর ওজন ছিল প্রায় ১৫ পাউন্ড (৬ কেজি), তা গরম হতে দীর্ঘ সময় নিত। সেই সিলের উদ্ভাবিত ১৫ পাউন্ডের ইস্ত্রি থেকেই আজকের হালকা ইস্ত্রির যাত্রা শুরু, যা দিয়ে তৎক্ষণাৎ বৈদ্যুতিক সংযোগ লাগিয়ে কাপড় করে ফেলা যায় মসৃণ। সহজে ব্যবহার ও তাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকায় ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এটি। ফলে কাপড় ধোয়ার পর তা গাট্টিবেঁধে লন্ড্রির দোকানে রেখে আসতেই হবে এই তাড়া নেই আর। কোনো কাপড়ে আয়রন দরকার, দশ মিনিটের মধ্যে ইস্ত্রি গরম করে কাপড় হয়ে যায় পরিপাটি।
তবু কমেনি লন্ড্রির ভিড়
বাজারে এখন দুধরনের বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি পাওয়া যায়। স্টিম ও ড্রাই আয়রন। আগে গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। আর মানুষ ব্যবহার করতো পোলেস্টার, টেট্রন, টরে কাপড়সহ অন্যান্য রকমের কাপড়। এসব কাপড় দিয়ে তৈরি পোশাকগুলো ধোয়ার পরই এলোমেলোভাবে ভাঁজ হয়ে থাকতো।
এছাড়া, অনেকে কাপড়ে তরল জাতের মাড় দেওয়ার কারণেও ভাঁজ হতো। যার কারণে মানুষেরা ধোয়া পোশাক ইস্ত্রি না করা পর্যন্ত পরিধান করতেন না। এখন এদের স্থান দখল করে নিয়েছে উন্নত সুতোর তৈরি কাপড়– যেগুলো ধোয়ার পরও সোজা অবস্থায় থাকে। একেবারে নিখুঁত না হলেও ভাঁজ বা কুচকে যায়না সহজে। ফলে আয়রন ছাড়া পরাই যাবেনা এমনটা আর হয়না।
এছাড়া, বর্তমানে ঘরে ঘরে পৌঁছাছে বিদ্যুৎ। তাই গ্রাম-গঞ্জে বসবাস করা পরিবারগুলো নিজেরাই কিনেছে আয়রন মেশিন (ইস্ত্রি)। তাই যার যার পোশাক, তারা নিজ নিজ ঘরেই আয়রন করে চলেছেন। কিন্তু এরপরেও গলির মুখে লন্ড্রির দোকানের সেই কর্তব্যরত মানুষটিকে অলস বসে থাকতে দেখা যায়না। আসা-যাবার পথে তাদের দিকে চোখ পড়লেই দেখা যায় ব্যস্ততা। অনলাইন লন্ড্রি সার্ভিস, ক্যালকাটা ড্রাই ক্লিনার্স, ব্যান্ডবক্সের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো জায়গায় জায়গায় মাথা গজিয়ে উঠলেও, এই গলির ভেতরের লন্ড্রিগুলো এখনও নীরবে নিভৃতে কাপড় আয়রনের কাজ করে যাচ্ছে। ঘরে ঘরে ইস্ত্রি চলে আসলেও, প্রাতিষ্ঠানিক কাজে এবং যারা পোশাক আশাকে পরিপাটি তারা এখনও ধোয়া কাপড়ে ব্যাগ ভর্তি করে নিয়ে যান লন্ড্রিতে।
লন্ড্রির দোকানে কাপড় ইস্ত্রি করতে দেওয়ার রেওয়াজ আমাদের সমাজে বহু পুরোনো। শহরে গ্রামে প্রায় প্রত্যেকটি গলিতে দেখা মিলবে অন্তত একটি লন্ড্রির। যেখানে আয়রন বা ইস্ত্রি হাতে সকাল থেকে সন্ধ্যা কাজ করে যাচ্ছেন কিছু মানুষ।
সবচেয়ে বেশি ভিড় থাকে শনিবারে। রোববার থেকে যেহেতু স্কুল-কলেজ-অফিস-আদালত সব শুরু, তাই কাপড় সব ডেলিভারি দেওয়া হয় শনিবারের মধ্যেই। যদিও বিভিন্ন রিপোর্টে লন্ড্রিতে কাজ নেই এমন তথ্য উঠে এসেছে, কিন্তু সরাসরি লন্ড্রির সাথে যুক্ত পেশাদার ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে তেমনটা জানা যায়না। হতে পারে গ্রামাঞ্চলে এর প্রয়োজনীয়তা এখন আর আগের মতো নেই। তবে শহুরে লোকদের চাহিদা রয়েছে এখনও।
সেই আগুনের ফুল্কিতে কখনও কখনো কাপড় পুড়ে যেত
আলতাফ হোসেন ২৫ বছর ধরে লন্ড্রিতে কাজ করছেন। কাজ শিখেছিলেন পটুয়াখালিতে। কয়লা, তাওয়া দুটো ইস্ত্রিতেই কাজ করেছেন তিনি। কয়লার ইস্ত্রিগুলো হতো পিতলের। একেকটি ইস্ত্রি বানাতে তখন খরচ পড়ে যেত ১৫,০০-১৬,০০ টাকা। কয়লার ইস্ত্রিগুলো হতো বড় পিতলের বাক্সের। উপরের অংশে হাতল যুক্ত ঢাকনা এবং কাঠ কয়লা রাখার মতো জায়গা নিয়ে নিচের অংশ। বাক্সের ভেতর কয়লা দিয়ে কেরোসিন আর আগুন লাগিয়ে দিলেই কয়লাগুলো জ্বলতে শুরু হতো পাঁচ মিনিটের মধ্যে। এরপর গরম হলে কাপড়ে কাজ শুরু হতো।
কিন্তু এতে থাকত ঝুঁকি। বাক্সের ভেতরে ছোটো ছোটো জানালার মতো ফাঁকা অংশ থাকত। সেখান থেকে বেরোতো কয়লার ফুল্কি। আর সেই আগুনের ফুল্কিতে কখনও কখনো কাপড় পুড়ে যেত।
কাঠ বা খড়ি আগুনে পুড়ালে যে কয়লা পাওয়া যায়, তা এ ইস্ত্রিতে ব্যবহার করা হয়। আবার, বেশিক্ষণ তাপ থাকার কারণে পাথরের কয়লা ব্যবহৃত হতো বেশিরভাগ। এক থেকে দেড় ঘণ্টা কাজ করা যেত একেক বক্স কয়লায়। ইস্ত্রি করা যেত ১০-১২টি কাপড় একনাগাড়ে। তাই আগে ভারী কাপড়গুলো করে নিয়ে তাপ কমে আসতে থাকলে হালকা কাপড়গুলো মসৃণ করা হত।
আগে সারাদিন কাজও চলত না। সকালে ধোপার কাছে কাপড় ধোয়ার কাজ। এরপর শুকিয়ে এলে দুপুরে খাবার পর সেই কাপড় মসৃণ করতে বসতেন তারা। সন্ধ্যায় ৭-৮টা পর্যন্ত কাজ করতেন। চুলোয় তাওয়া থাকত। তাওয়ার ওপর আয়রন রেখে ইস্ত্রি গরম করা হতো।
আলতাফ হোসেন ৯৭-৯৮এর দিকে কাজ করতেন তাওয়ার ইস্ত্রিগুলো দিয়ে। তাওয়ার ইস্ত্রি এখন আর নেই, তবে কয়লার ইস্ত্রি এখনো প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে গেলে দেখা মিলবে বলে জানান অনেক লন্ড্রির মালিক। অনেকেই বৈদ্যুতিক খরচ বাঁচাতে কয়লা কিনে এনে এরপর ইস্ত্রির কাজ করেন।
এমনকি ২০২২ সালের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শ্রীলংকাতেও এই আধুনিক যুগে ব্যবহৃত হচ্ছে কয়লার ইস্ত্রি। চরম আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। যে কারণে কাপড় ইস্ত্রি করার জন্য পুরোনো কাঠ কয়লার আয়রন মেশিন আর কেরোসিন দিয়ে জ্বালানো বাতির ব্যবহার বাড়ছে দেশটিতে।
ঢাকার ভূতের গলি এলাকায় লন্ড্রির দোকান দিয়েছেন মোহাম্মদ সালেহীন। তিনি জানান, কয়লার কাজ তিনি করতেন ক্যান্টনমেন্টে থাকাকালীন। সেনানিবাসগুলোতে এখনও মাঝে মাঝে কয়লার ইস্ত্রি দেখা যায়। যেহেতু প্রশিক্ষণের সময় সবজায়গায় বৈদ্যুতিক সররবরাহ থাকার নিশ্চয়তা নেই, তাই এ ধরনের কয়লা রাখা হয়।
তবে বৈদ্যুতিক ইস্ত্রির আবিষ্কারের পর এবং ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ চলে আসায় বৈদ্যুতিক আয়রনেই নির্ভরতা বেশি। এতে কাজ করে যেমন আরাম তেমন কাজের মানও ভালো।
স্বাস্থ্যসুরক্ষায়ও রয়েছে ইস্ত্রির কার্যকারিতা
কাপড় পরিপাটির বাইরে স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও আয়রনের ভূমিকা রয়েছে। গরম তাপ দেওয়ার ফলে, কাপড়ে লেগে থাকা ব্যাক্টেরিয়া বা উকুনের মতো নানান পরজীবী পতঙ্গ দূরীভূত করা যায়।
ক্রিমিয়ার যুদ্ধের(১৮৫৩-১৮৫৬) একটি রেকর্ড বলছে, উকুনের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সৈন্যরা তাদের ইউনিফর্ম ইস্ত্রি করতেন। যেহেতু যুদ্ধকালীন কাপড় ধোয়ার সুযোগ ছিল না সেভাবে, তাই ইস্ত্রির মাধ্যমে কাপড় পরিস্কার বা জীবাণুমুক্ত রাখতে পারতেন।
এমনকি, ইস্ত্রি নিয়ে পাব্লো নারুদার 'ode to ironing' শীর্ষক এক কবিতাও আছে। কাপড় ইস্ত্রি করার এই চর্চা গোটা দুনিয়াজুড়েই সমাদৃত আরও কয়েক হাজার বছর আগ থেকেই। ব্যস্ততা, কাপড়ের ধরনে ভিন্নতার মতো যত পরিবর্তনই আসুক, নিজেকে পরিপাটি ও আত্মবিশবাসী করে তুলে ধরতে পরিষ্কার আর ইস্ত্রি করা পোশাকের বিকল্প নেই।