ভ্যান গখ-গগাঁ'র চিঠি: পতিতালয়ে গমন ও চিত্রকলার বর্ণনা সম্বলিত চিঠির দাম ২ লাখ ইউরো!
বিখ্যাত চিত্রকর ভিনসেন্ট ভ্যান গগ এবং তার সমকালীন শিল্পী বন্ধু পল গগাঁ'র পতিতালয়ে গমন এবং চিত্রকলা নিয়ে আলোচনা সংক্রান্ত চিঠি সম্প্রতি এক নিলামে দুই লাখ ১৬ হাজার ইউরোতে বিক্রি হয়েছে।
চিঠিটি কিনে নেয় ভিনসেন্ট ভ্যান গগ ফাইন্ডেশন। এটি তারা আমস্টারডামের একটি জাদুঘরের প্রদর্শনীতে রাখবে। ১৮৮৮ সালে ভ্যান গগ আরেক ফরাসি চিত্রকর এমিল বারনাদের কাছে চিঠিটি লিখেছিলেন। ফ্রান্সের আর্ল শহরে অবস্থানকালে তিনি এ চিঠি লেখেন এমিলকে। ওই শহরে ভ্যান গগ ফাইন্ডেশন পরিচালিত একটি জাদুঘরও রয়েছে। খবর রয়টার্সের।
ফ্রান্সে এসে আর্ল শহরের ডাচম্যান হাউস নামক পান্থশালায় এসে ওঠেন ভ্যান গগ। পরে তার সঙ্গে এসে যোগ দেন ফরাসি চিত্রকর পল গগাঁ। তিনি আসার এক সপ্তাহ পরেই দুই বন্ধুর পতিতালয়ে গমন ও চিত্রকলার গতি-প্রকৃতি, এবং আগামীর শিল্প দর্শন নিয়ে নিজেদের মধ্যকার আলোচনার কথা এ চিঠিতে উল্লেখ করেন ভ্যান।
তার চিঠির ভাষাতে কৌতুকের আভাসও ছিল। এক জায়গায় ভ্যান গগ লিখেছেন, 'তুমি শুনলে আসলেই কৌতুহলী হবে- ইদানীং আমরা দুজনে মাঝে মধ্যেই গণিকালয়ে ঢুঁ মারছি। (ছবি আঁকার) কাজের প্রয়োজনেই সেখানে এখন ঘন ঘন যাব বলে আমরা মনস্থির করেছি।'
'এই মুহূর্তে রাতের ক্যাফে নিয়ে গগাঁ একটি ক্যানভাসে কাজ করছে। আমিও এঁকেছি। তবে, গগাঁর ছবিতে ক্যাফের চরিত্র হিসেবে পতিতালয়ের নারী-শরীর উঠে আসছে। আমার মনে হচ্ছে, এটা খুব সুন্দর একটা কিছু হবে।'
এদিকে ভিনসেন্ট ভ্যান গগ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ভ্যান গগের লেখা চিঠির মধ্যে এটাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যা এতদিন তাদের সংগ্রহে ছিল না।
সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, 'সে যুগে শিল্পীদের সংলাপ ছিল বাঁধনছাড়া। কখনো সেই সংলাপ হতো পতিতালয়ে বসে, এই চিঠিতেও তেমনি কথা স্থান পেয়েছে। এ চিঠির মধ্য দিয়ে আধুনিক চিত্রকলার ভবিষ্যৎ নিয়ে যুগ শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের দূরদর্শী চিন্তা-চেতনা এবং পারস্পরিক সহযোগিতাও ফুটে ওঠে।'
চিঠিতে ভ্যান গগ তার বন্ধু গগাঁকে ' বন্য পশুর স্বভাব ভেতরে নিয়ে বেড়ানো এক নিষ্পাপ প্রাণী বলে উল্লেখ করে লিখেছেন, ওর কাছে উচ্চকাঙ্খার চাইতেও আকর্ষণীয় হচ্ছে রক্ত আর সঙ্গমের উন্মাদনা।
গগা'র সাথে ভ্যান গগের বন্ধুত্ব অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। একসঙ্গে, আর্ল-এ দুই মাস থাকার পরই দুজনের সম্পর্ক তিক্ততায় রূপ নেয়। এক সময় উন্মত্ত ভ্যান গগ নিজের কান কেটে ফেলেন। তুমুল এ বিকারের সময় তাকে ছেড়ে চলে যান গগাঁ।