স্প্রিংহেয়ার: দ্যুতিমান প্রাণীদলের নতুন সদস্য
স্তন্যপায়ী ফ্লুরোসেন্ট প্রাণীদলে যুক্ত হলো নতুন আরেকটি নাম। খরগোশ আকৃতির এই প্রাণী 'স্প্রিংহেয়ার' নামে পরিচিত।
ফ্লুরোসেন্ট বা দ্যুতিমান প্রাণী বলতে বোঝায় যেসকল প্রাণী ব্ল্যাক লাইটের নিচে এলে শরীর থেকে এক ধরনের উজ্জ্বল আলো বেরোতে থাকে। আর এই দলে পৃথিবীর নানা জাতের প্রাণী রয়েছে, যেগুলোকে বিভিন্ন সময়ে জীববিজ্ঞানী ও পশুপ্রেমীরা আবিষ্কার করেছেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্লাটিপাস, ওপোসাম, উত্তর আমেরিকার উড়ন্ত কাঠবিড়ালী থেকে শুরু করে তাসমানিয় ডেভিল, ইচিদানা ও ওমব্যাটদের কোনো কোনো প্রজাতির মধ্যেও এই বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু দক্ষিণ ও পূর্ব আফ্রিকার সাভানা অঞ্চলে ঘুরে বেড়ানো এই স্প্রিংহেয়ারগুলো কখনোই কারও ফ্লুরোসেন্ট প্রাণী তালিকায় ছিল না।
অন্যসব দ্যুতিমান প্রাণীর মতো এরাও নিশাচর। তবে এরা অন্যদের চেয়ে আলাদা। কেননা, এই প্রজাতি খুব পুরনো প্লাসেন্টাল স্তন্যপায়ী, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। প্রাণীটির গা থেকে এক ধরনের উজ্জ্বল কমলা-গোলাপি মেশানো আলো বেরোয়, যাকে বিজ্ঞানীরা খুবই 'মজাদার ও বিচিত্র' বলে উল্লেখ করেছেন। এই আলো ওদের শরীরজুড়ে বিভিন্ন অংশে বেশ বৈচিত্র্যময় রেখার মতো ফুটে থাকে।
ফ্লুরোসেন্স শারীরিকের চেয়ে বস্তুগত এক ধরনের বিষয়। নির্দিষ্ট এক প্রকার পিগমেন্ট সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকে শুষে নিয়ে একে উজ্জ্বল আলোরূপে পুনরায় নির্গত করতে পারে। কিছু প্রজাতির পাখি ও উভচর প্রাণীর মধ্যে এটি দেখা যায়।
কিন্তু স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সেই পিগমেন্ট নেই। তবু বিজ্ঞানীরা এই জাতের প্রাণীর দেহে ফ্লুরোসেন্ট পেয়েছেন কয়েক বছর ধরে। ইউভি লাইট ফেললে এদের গায়ে গোলাপিরঙা আভা ফুটে ওঠে।
স্প্রিংহেয়ার নিয়ে গবেষণাকারী দল খুঁজে বের করেছে, ফ্লুরোসেন্স আসলে আসে 'পরফিরিনস' নামে একটি পিগমেন্ট সেট থেকে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন নিয়ন আলোর মতো জ্বলে ওঠে এই প্রাণীগুলোর দেহ?
এর একটি সম্ভাব্য কারণ, ইউভি-সেন্সিটিভ ভিশন আছে- এমন বড় প্রাণী থেকে বাঁচতে এই ফ্লুরোসেন্স কাজ করে। ওয়েভলেংথ শুষে নিয়ে উজ্জ্বলভাবে প্রতিফলিত হয় আর নয়তো কম চোখে পড়ে, এমনভাবে নির্গমনের মাধ্যমে কাজটি করে। সেক্ষেত্রে এ রকম এলোমেলো আলোর প্যাটার্ন থাকলে তা কাজ করতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
- সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস