ম্যান্ডেলার পদরেখা ধরে...
একজন মালির মূল দায়িত্ব গাছে রঙ-বেরঙের ফুল ফোটানো। সকল ঋতুতে, সব ধরনের আবহাওয়ায়- গ্রীষ্মের দাবদাহ, বর্ষার জলসমারোহ, শীতের কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে আপাত ঊষর মাটিতেও জীবনের ফল্গুধারা নিয়ে আসাতেই তার সার্থকতা, এর ব্যতিক্রম বিশ্বের কোন দেশে তো নেই-ই, এমনকি বন্দীশালা কারাগারেও নেই।
তবে সাধারণত কারাগারের কোন বন্দীর কাঁধেই এই সুকঠিন দায়িত্ব অর্পিত হয়, লৌহকঠিন দেয়াল ঘেরা হলেও ছোট্ট গরাদের ফোকর থেকে খানিকটা মুক্তিই হয়ত বা নিয়ে আসে এই বাগান গড়ার কাজ, বুকের হাঁপরে সুবাতাস ভরে হয়ত নিজের অজান্তেই খালি পায়ে মখমল সবুজ ঘাসের স্পর্শে ফিরে আসে মুক্ত জীবনের স্মৃতি আর আশা জাগিয়ে রাখে সেই আলোকময় জীবনে ফিরে যাবার।
এমন এক প্রাক্তন কারাগারের প্রায় আকাশ ছোঁয়া উচ্চতার চার দেয়ালে ঘেরা চত্বরে দাড়িয়ে আছি, প্রাক্তন কারণ অনেক বছর আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার স্বর্ণশহর খ্যাত জোহান্সবার্গের এই কন্সটিটিউশন হিল কারাগারকে তার আঁধার ঘেরা ক্লেদময় ইতিহাস থেকে অব্যাহতি দিয়ে পরিণত করা হয়েছে জাদুঘরে, দর্শনার্থীরা যাতে দেখতে পারে ইতিহাসের কালোতম অধ্যায়গুলো আর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন এর পুনরাবৃত্তি না করে কখনোই।
প্রতিদিন হাজারো মানুষের ঢল নামে এই সাবেক কারাগার বর্তমান জাদুঘরের পানে, জোহান্সবার্গে আসা পর্যটকদের জন্য তো অতি অবশ্যদ্রষ্টব্য, তার মূল কারণ- এখানেইতো অনেক অনেক বছর আগে কালমানুষের মুক্তির দাবীতে সোচ্চার এক প্রতিবাদী তরুণ নেতাকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল লৌহকপাটের পেছনে, তার বন্দী জীবনে দায়িত্ব ছিল এই প্রাণহীন ঊষর পরিবেশে মালির কাজ করা, যাতে পেতেন তিনি নবজীবন সৃষ্টির আনন্দ, সেই কারাগারের মালির পরিবার প্রদত্ব নাম মাদিবা রোহিহলালা গোটা বিশ্বের কাছে খুব পরিচিত না হলেও শত শত কোটি মানুষের মনের মুকুরে তিনি চিরস্থায়ী আসন করে নিয়েছেন নেলসন ম্যান্ডেলা নামে!
হ্যাঁ পাঠক, এই কারাগারেই ১৯৬২ সালে বন্দী জীবন শুরু হয় নেলসন ম্যান্ডেলার। মানুষের মুক্তি, মানবতার মুক্তির দাবীতে সোচ্চার এই চিরতরুণ কণ্ঠকে চিরস্তব্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে সাজানো বিচারের নাটক দিয়ে বন্দী করা হয় তাকে, রুদ্ধ জীবনে হাতে তুলে দেওয়া হয় কোদাল-খুন্তি।
পরবর্তীতে রচিত বিশ্বের অন্যতম পঠিত আত্নজীবনী লং ওয়াক টু ফ্রিডম-এ ম্যান্ডেলা অকুণ্ঠভাবে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন বাগান জীবনের কথা- সেই এক চিলতে সবুজের ছোঁয়া তাকে নিয়ে যেত ইট- কাঠ- কংক্রিটের ক্লেদময় নরক থেকে অন্য কোথাও, নতুন কিছু গড়ার আনন্দ, নিজ হাতে রোপিত বীজ থেকে অঙ্কুরিত সবুজ লতানো চারার সরলতা সাময়িক মুক্তি দিত সেই দুর্বিষহ বন্দিদশা থেকে। প্রতিদিন সকালে ঘণ্টা বাজার পরপরই খড়ের টুপি মাথায় দিয়ে খসখসে দস্তানা পড়ে কাজের ময়দানে, প্রতি রোববারেই রান্নাঘরে টাটকা সবজি চালান দিতে হত যাতে বন্দীরা সপ্তাহে একটি দিন হলেও টাটকা কিছু খেতে পারে।
ইতিহাসের কয়েক পাতা উল্টালে দেখা যায় এই স্থাপনার যাত্রা শুরু হয়ে ছিল দুর্গ হিসেবে, পরবর্তীতে ১৮৯২ সালে থেকে তা কারাগারে রূপান্তরিত করা হয়, যদিও একপর্যায়ে শুধু মাত্র শ্বেতাঙ্গ বন্দীদের জন্য ব্যবহৃত হত, বিশেষ বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া। ১৯৮৩ সালে এই কারাগারের যবনিকাপাত ঘটলেও তার সাথেই অবস্থিত আদালতের কার্যক্রম চলতে থাকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত। কন্সটিটিউশন হিল কারাগারে বন্দী হিসেবে ছিলেন বিশ্বে অহিংস আন্দোলনের জনক মহাত্না গান্ধীও!
কারাগার চত্বরের এক কোণে প্রহরীর পর্যবেক্ষণের টাওয়ার, খানিকটা ফাঁকা জায়গা, বন্দীদের নানা অনুশীলন বা মার্চপাস্টের জন্য, আর সারি সারি বন্দীদের কক্ষ।
নানা প্রান্ত ঘুরে গেলাম ম্যান্ডেলাকক্ষে, এখানেই সোনালী সময়গুলো ঘন আঁধারে অতিবাহিত করেছেন মর্তের এই স্বর্গবাসী।
একনিষ্ঠ মনে চালিয়ে যেতে চেয়েছেন লেখা-পড়া, সত্য জ্ঞানের অন্বেষণ থেকে কিছুই দমাতে পারেনি এই জ্ঞান সেবককে। এই কক্ষটিতে এখন স্থান হয়েছে তার বিভিন্ন সময়ে লেখা চিঠি, রোজনামচার।সেই সাথে তার লেখা বইতো আছেই, আর আছে তাকে নিয়ে হওয়া বিভিন্ন বিচার ও আন্দোলনের নানা স্মারক। উপরে লেখা কয়েদী নম্বর ৪৬৬-৬৪, কারাগারের মালি বন্দী!
এর খানিক দূরেই আইসোলেশন সেল, অতি ভয়ংকর বা অবাধ্য কয়েদীদের মারাত্মক শাস্তি দিতে হলে এই ছোট্ট বদ্ধ খুপরিতে (যেখানে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ ঠিকভাবে শুতেও পারে না ) আটকে রাখা হত। কোন মানুষের জন্য আর কোন শাস্তির প্রয়োজন নেই, আল-বাতাস-জানালা-দরজাহীন ঘরে সপ্তাহের পর সপ্তাহ আবদ্ধতা যে কাউকেই মানসিক ভাবে প্রবল অসুস্থ করে তুলতে পারে। টয়লেটের ব্যবস্থা ভিতরেই এক বালতিতে, খাবার মিলত হয়ত চব্বিশ ঘণ্টায় একবার। জানা যায়, অনেক বন্দীকে এর মধ্যেও এক বছরের অধিক সময় অতিবাহিত করতে হয়েছে। সাথের সঙ্গী জিম্বাবুয়ের স্ট্যানলে একটু মজা করেই বলল, ভিতরে যেয়ে থাক না কেন মিনিট পাঁচেকের জন্য? হাড়ে হাড়ে বুঝে যাবে বন্দীদের অভিজ্ঞতা।
না, সেই সাহস আর করলাম না বরং রওনা দিলাম ম্যান্ডেলার বাড়ির উদ্দেশ্যে ( যে বাড়ী তিনি নিজের শ্রম দিয়ে গড়েছেন, যেখান থেকে শুরু হয়েছিল মহান সেই আন্দোলন এবং তার পারিবারিক জীবন)। পথে চোখে পড়ে জোহান্সবার্গের বিশালাকৃতির ম্যান্ডেলা সেতু, যার উপরে শোভা পাচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ হাতে তার হাস্যজ্জল ছবি।
সোয়েটো, জোহান্সবার্গের অদূরেই এই শহরতলীর অবস্থান, যদিও এই এলাকার আদি বাসিন্দারা নিজেদের স্রেফ সোয়েটোর বাসিন্দা বলেই পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেন, এই এলাকাতেই অবস্থিত দুই নোবেল শান্তি বিজয়ীর আবাস, নেলসন ম্যান্ডেলা এবং আর্চ বিশপ ডেসমণ্ড টুটু। পশ্চিম সোয়েটোর অরলান্দোর ৮১১৫ নম্বর বাড়ীটার সামনে সারা বছরই দর্শনার্থীদের ভিড়।
১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৬২, সুদীর্ঘ ১৬ বছর গ্রেফতার হবার আগ পর্যন্ত এই বাড়ীতেই ছিলেন জীবন্ত কিংবদন্তী। আত্নজীবনীতে লিখেছেন, প্রায় তিন দশক জেলখাটার পর মুক্তি পেয়ে যখন স্ত্রী উইনির সাথে এই বাড়ীটিতে ফিরে আসেন তখনই কেবল তার মনে বিশ্বাস হয় যে তিনি আজ মুক্ত, একজন স্বাধীন মানুষ। এই বাড়ীটিই তার সমগ্র সত্ত্বার কেন্দ্রবিন্দুতে।
টিকেটের জন্য লম্বা লাইন, বেশ খানিকক্ষণ অপেক্ষার পরে সুযোগ মিলল ভিতরে ঢোকার- প্রথমেই লাল ইটের দেয়াল, সেখানে থেকে থেকেই ভিন্ন ভিন্ন জায়গার ইটের উপরে ধাতব পাতে খোদাই করে লিপিবদ্ধ করা আছে এই বাড়ীকে ঘিরে ম্যান্ডেলার ও দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে নানা ঘটনা, যেমন ১৯৫১ সালে তার আফ্রিকার ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এ এন সি) যুব সঙ্ঘের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া, ১৯৪৬ সালে তার প্রথম স্ত্রী ইভেলিন ও পুত্র মাদিবা থেমবিকেলের সাথে এই লাল বাড়িতে আগমন।
সময়নুসারে নানা ঘটনার পরিক্রমা, উইনি ম্যান্ডেলার সাথে পরিণয়, গ্রেপ্তার। বাড়িটির দেয়ালে আজো দেখা যায় গুলির চিহ্ন, মলোটভ ককটেলের তৈরি ক্ষত। ১৯৯৭ সালে ম্যান্ডেলা বহুল স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করার জন্যে দান করে দেন।
প্রথমেই ম্যান্ডেলা পাস বই পোড়ানোর ঐতিহাসিক ছবি, কালোদের আপন দেশে অত্যাচারী সাদা শাসকরা কালোদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এই পাস বই ব্যবস্থা চালু করেছিল, পাস বই ছাড়া ধরা পড়লে ছিল কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা। ম্যান্ডেলা সহ অন্যান্য নেতারা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই আপন আপন পাস বই জনসমক্ষে পুড়িয়ে ফেলেন।
অতি ছোট একখানা বাড়ি, আফ্রিকার এই অঞ্চলের আর দশটি আটপৌরে বাড়ির মতই- টিনের ছাদ, সিমেন্টের মেঝে, সরু রান্নাঘর, পিছনের দিকে আদিকালের টয়লেট। শয়নকক্ষটি এতই ছোট যে দুই জনের শোয়ার উপযোগী বড় বিছানা পাতলে তা মেঝের অধিকাংশই দখল করে ফেলে, তাই-ই হয়তবা সেখানে চোখে পড়ল ছোট বিছানা, সাধারণ আসবাবপত্র।
ম্যান্ডেলার লেখা চিঠিপত্র, নানা গুরুত্বপূর্ণ নথি, তাকে নিয়ে প্রকাশিত সারা বিশ্বের নানা পত্রিকার সংগ্রহ, নানা বিশ্ব-বিদ্যালয়ের দেয়া সন্মানসূচক ডিগ্রী, ঘটনাময় জীবনের অসংখ্য বাঁকের দুর্লভ আলোকচিত্র, এমনকি সাবেক বিশ্ব মুষ্টিযোদ্ধা চ্যাম্পিয়ন সুগার রে লিওনার্ডের চ্যাম্পিয়ন বেল্টটিও রয়েছে এখানে, যা তিনি বিশ্ব নেতাকে দিয়েছিলেন শুভেচ্ছা স্বরূপ।
একদেয়ালে ঝুলছে দক্ষিণ আফ্রিকার অকৃত্রিম বন্ধু ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সাথে ম্যান্ডেলার হ্যাসোজ্জল আলোকচিত্র, পাঠক জানেন কি- কারাগারের প্রকোষ্ঠ থেকে ম্যান্ডেলার মুক্তি ও মানুষের স্বাধীনতার অধিকারের দাবীতে দীর্ঘ বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের জন্য নেলসন ম্যান্ডেলা সব সময়ই ক্যাস্ট্রোকে মাই প্রেসিডেন্ট বলে সম্বোধন করেন!
এইটিই ছিল সত্যিকার অর্থে ম্যান্ডেলার প্রথম বাড়ি এবং এই ক্ষুদে বাসস্থানকে নিয়ে সবসময়ই অত্যন্ত গর্ব অনুভব করেন তিনি। মন্ত্রমুগ্ধের মত বেশ খানিকটা সময় অতিবাহিত করে বাহির হয়ে আসলাম রোদেলা লাল ধুলোর রাস্তায়।
পরের গন্তব্য ছিল বিশ্বকাপ ফুটবল দেখার উদ্দেশ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে প্রাচীন শহর ও সেই সাথে সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে নয়নাভিরাম শহর কেপটাউন।
কেপটাউন যাওয়া মানেই তো অবশ্য দ্রষ্টব্য এককালের কারাগার ও বর্তমানে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট কুখ্যাত রোবেন আইল্যান্ড। শহর থেকে মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে মহাসমুদ্রের মাঝের এই ছোট দ্বীপেই ১৮ বছর বন্দী ছিলেন ম্যান্ডেলা। সেখানে যেতে হলে জলযান বিনা অন্য গতি নেই, কাজেই ফেরির টিকেট কিনতে সোজা বন্দরে হাজির হওয়ায় ছিল শহরে ঢোকার পর প্রথম কাজ, বন্দরের নাম আবার নেলসন ম্যান্ডেলা গেটওয়ে।
বিশ্বকাপ ফুটবলের জোয়ারে তখন চলছিল এক প্রদর্শনী, তাতে ছিল ১৯৬৯ সালে গঠিত রোবেন আইল্যান্ড ম্যাকানা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ঐতিহাসিক যাত্রার নানা আলোকচিত্রের সম্ভার, ম্যান্ডেলা স্বয়ং বন্দিত্বকালে এই অ্যাসোসিয়েশনের সাথে নানা ধরনের ক্রীড়ার মাধ্যমে শরীরচর্চায় যুক্ত ছিলেন।
আর আছে টেবিল মাউন্টেন। বিশ্বের অন্যতম প্রাকৃতিক বিস্ময় এই পর্বতের পাদদেশেই গড়ে উঠেছে কেপ টাউন শহর, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে খাড়া সাড়ে তিন হাজার ফিট উপরে উঠে গেলেও এর মাথাটা টেবিলের মতই সমতল কয়েক বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে।
আত্মজীবনীতে ম্যান্ডেলা বারংবার উল্লেখ করেছেন এই পর্বতের কথা, জানিয়েছেন যখনই পর্বতটি তার দৃষ্টি পথে পড়ত, জানতেন ঐ তো প্রিয় স্বদেশ, একদিন ফিরবেনই তিনি সেখানে মুক্ত স্বাধীন মানুষ হিসেবে।
এখানে আগত পর্যটকদের মাঝে ব্যপক জনপ্রিয় টেবিল মাউন্টেনে আরোহণ করা, অধিকাংশ জনই কাজটা সারে কেবল কারে চেপে আর আমাদের মত ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়রা হাইকিং করে। ট্রেকিং করে সরু সরু পাথুরে ট্রেইল বেয়ে মিনিট চল্লিশেক ওঠার পরেই দূর নীল সমুদ্রের মাঝে কালো টিপ রোবেন দ্বীপ নজরে আসল, মনে হল প্রিয় নেতা ম্যান্ডেলার অনুভূতির কথা, ভাবলাম- আর মাত্র কয়েকটা ঘণ্টায় তো, পরের দিনই তো যাচ্ছি রোবেন দ্বীপে।
কিন্তু বিধিবাম, পরের দিন উত্তাল সাগরের কারণে সমস্ত ফেরি যাত্রা বাতিল হয়ে গেল, এমনকি পরের দিনও ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ল না মহাসমুদ্রের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে সৃষ্ট খারাপ আবহাওয়ায়। মনকে প্রবোধ দিলাম- এক যাত্রায় তো আর সবকিছু সম্ভব হয় না, তবে জীবনের কোন প্রান্তে নিশ্চয়ই আসব দক্ষিণের এই অপরূপা ভূখণ্ডে, তখন নিশ্চয় যাব রোবেন দ্বীপে।
এক মাসের ভ্রমণ কালীন সময়ে ম্যান্ডেলা জন্মভূমিতে সর্বক্ষণ তার বাণী, সংগ্রাম, জীবন মানসপটে সমুজ্জল থাকত। বিশ্বের সব রাজনীতিবিদরাই মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতির কথা বলে যান, কিন্তু তা ব্যক্তিগত জীবনে কঠোর ভাবে পালন করতে পেরেছেন একমাত্র নেলসন ম্যান্ডেলা, আর তাইতো তিনি পৃথিবীর সমস্ত অত্যাচারিত মানুষের মুক্তির প্রতীক।।
(আজ নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মদিন। ২০০৯ থেকে জাতিসংঘ এই দিনটিকে ম্যান্ডেলা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। ম্যান্ডেলা দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে একজন মানুষও পৃথিবী পরিবর্তন করতে পারে, সমাজে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।)