রক্তে ৫০% পর্যন্ত শর্করার মাত্রা কমাবে পেঁয়াজ
যুক্তরাজ্যে চল্লিশোর্ধ্ব প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ রোগে রক্তে সুগার বা শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা রক্তের শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অগ্ন্যাশয় থেকে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। এতে তাদের রক্তের সুগার বিপজ্জনকভাবে উচ্চ মাত্রায় পৌঁছানোর আশংকা তৈরী হয়।
তবে জানেন কি, আমাদের প্রতিদিনের খাবারে এমন একটি মশলা জাতীয় উদ্ভিদ রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে!
আমেরিকার সান ডিয়েগোতে দ্য এন্ডোক্রাইন সোসাইটির ৯৭তম বার্ষিক সভায় উপস্থাপিত ২০১৫ সালের এক সমীক্ষার ফলাফলে এসেছে, অ্যান্টিডায়াবেটিক ওষুধ মেটফর্মিনের সাথে পেঁয়াজের বাল্বের নির্যাস মেশানো হলে রক্তে উচ্চ শর্করা এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা তীব্রভাবে হ্রাস পেতে পারে।
সমীক্ষাটির প্রধান লেখক এবং নাইজেরিয়ার ডেল্টা স্টেট ইউনিভার্সিটির অ্যান্টনি ওজিয়েহ বলেন, "পেঁয়াজ সস্তা এবং সহজলভ্য। আগে থেকেই এটি পুষ্টির সম্পূরক হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এখন ডায়াবেটিক রোগীদের চিকিৎসায়ও পেঁয়াজ ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে।"
গবেষকরা ইঁদুরের উপর এটি পরিচালনা করেন। প্রথমে তিনটি গ্রুপের ইঁদুরকে 'মেডিক্যালি ইনডিউসড ডায়াবেটিস' প্রয়োগ করা হয়। এরপর এদেরকে পেঁয়াজের নির্যাসের বিভিন্ন ডোজ দিয়ে দেখা হয় তাতে ওষুধের প্রভাবে কোনো পরিবর্তন আসে নাকি।
ডোজগুলো ছিল প্রতি কিলোগ্রাম দৈহিক ওজনের ২০০, ৪০০ ও ৬০০ মিলিগ্রামের। একই সাথে নন-ডায়াবেটিক ইঁদুরের তিনটি গ্রুপকেও ওষুধ এবং পেঁয়াজের নির্যাস প্রয়োগ করা হয়।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিক ইঁদুরদের মধ্যে যাদের ৪০০ এবং ৬০০ মিলিগ্রামের ডোজ প্রয়োগ করা হয়, তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেজলাইন স্তরের তুলনায় যথাক্রমে ৫০ এবং ৩৫ শতাংশ হ্রাস পায়।
পেঁয়াজের নির্যাস ডায়াবেটিক ইঁদুরের মোট কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমিয়েছে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, পেঁয়াজের নির্যাস নন-ডায়াবেটিক ইঁদুরের ওজন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে, যদিও ডায়াবেটিক ইঁদুরের ওজনে কোন পরিবর্তন দেখা যায়নি।
এক্ষেত্রে ওজিয়েহের ব্যাখ্যা হলো, "পেঁয়াজে তেমন ক্যালরি নেই। তবে এটি বিপাকীয় হার বাড়ানোর সাথে ক্ষুধা বাড়িয়ে তোলে।"
"ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় পেঁয়াজ রক্তে গ্লুকোজ কমিয়ে আনে তা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।"
- সূত্র- ইয়াহু ডট কম