খানসামা কারা? যাদের কিংবদন্তি, সত্য ও কল্পকাহিনী একাকার হয়ে গেছে!
ভারতীয় ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম লেখক রাসকিন বন্ড যেন গল্পের ভাণ্ডার। ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত এই সাহিত্যিকের লেখা কল্পনাশক্তিতে ভরপুর। তারপরেও সম্ভবত মাহমুদ দ্য খানসামা'র গল্পগুলোকে তা হার মানাতে পারবে না।
রাসকিন যে বাড়িতে তার শৈশব কাটিয়েছেন, মাহমুদ ছিলেন সেখানকার পারিবারিক বাবুর্চি। ভারতে ব্রিটিশ শাসনামলের কিংবদন্তি শিকারি জিম কর্বেট-এর মারফতে তিনি বন্ড পরিবারে কাজ করতে আসেন।
মাহমুদের পাগলামো স্বভাবের পরিচয় পাওয়া যায় রাস্কিনের লেখা টাইগার ফর ডিনার গল্পে। বন্ডের দাবি, মাহমুদ অনায়াসে লেপার্ড শিকার করতে পারতেন। এছাড়াও মারতে পারতেন কোবরা সাপ। ঠিক যেমন অনায়াসে রাঁধতে পারতেন কোফতা কারি, পাই, হাঁসের মাংসের রোস্ট এবং আরও কত কী!
মাহমুদের গল্পগুলো হাস্যকর এবং উদ্ভট হলেও তার কাজ মোটেও মামুলি ছিল না। ঔপনিবেশিক ভারতে খানসামার চাকরি ছিল বেশ রাশভারী একটি কাজ।
সেসময়ে জাঁকজমকতার দিক দিয়ে ব্রিটিশ বাড়িগুলো রাজবাড়ির চেয়ে কম ছিলনা। শাসনকার্য পরিচালনা করতে সম্রাটদের যেমন বাইজ্যান্টাইন আমলাতন্ত্রের প্রয়োজন হতো, তেমনি ব্রিটিশ মেমসাহেবদের প্রয়োজন হতো দেশীয় গৃহকর্মীদের একটি সৈন্যদল! বাড়ির কাজ সুচারুরূপে করার জন্য খেদমতগার, বাবুর্চি, মাসালচিসহ আরও অনেক কর্মচারীর দরকার হতো।
এটা সহজে অনুমেয় যে, দায়িত্ব কিংবা ক্ষমতার বিচারে এসব কর্মচারীদের অনুক্রম বেশ জটিল ছিল। কিন্তু খানসামারা যে সবার শীর্ষে থাকত তা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই।
পপুলার কালচার হয়তো আমাদের বিশ্বাস করিয়েছে যে খানসামারা কেবল পেশাদার বাবুর্চি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এর চেয়ে অনেক কিছুই ছিলেন তারা। ১৮৫৪ সালে প্রকাশিত দ্য হ্যান্ড-বুক অভ ব্রিটিশ ইন্ডিয়া নামক বইয়ে সাংবাদিক জোকিম হেইওয়ার্ড স্টকুয়েলার একটি সাধারণ অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান গৃহস্থে খানসামার স্থান বর্ণনা করেন। তিনি বলেছিলেন, 'একটি মধ্যবিত্ত ইংরেজ পরিবারে গৃহকর্ত্রী এবং বাবুর্চিরা মিলে যে কাজ করেন, একজন খানসামা বা প্রধান পরিচারক একই ভূমিকা পালন করেন। অর্থাৎ বাজার করা থেকে শুরু করে মসলা বাটা, খাবার সংরক্ষণ করাসহ রসুইঘরের যাবতীয় কাজ দেখাশোনার ভার থাকে খানসামার ওপর। কেবল রাঁধার দায়িত্ব অন্য বাবুর্চিকে দিয়ে বাকি সব কাজ করেন খানসামা নিজে।'
খানসামারা ছিলেন মুসলমান অথবা ফারসি। তাদেরকে হতে হতো একাধারে বুদ্ধিমান, শ্রদ্ধাশীল এবং সদাচারী। তাদের নির্ধারিত পোশাক ছিল সাদা রঙের লিনেন কাপড়ে তৈরি, মাথায় বড়সড় পাগড়ি, কোমরে জড়ানো থাকত বহুভাজ করা মসলিন কাপড় এবং তাদের চালচলন ছিল উন্নতশির- মেন-সার্ভেন্টস ইন ইন্ডিয়া নামক একটি প্রবন্ধে এমনটাই লিখেছিলেন সরকারি কর্মকর্তা সি টি বাকল্যান্ড।
উর্দি পরা খানসামা উত্তর ঔপনিবেশিক কল্পনায় রাজ-যুগের সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠলেও ব্রিটিশরা ভারতে আসার বহু আগেই খানসামার অস্তিত্ব ছিল। 'খানসামা' শব্দটি ফারসী; খান অর্থ মনিব এবং সামান অর্থ বাড়ির জিনিসপত্র।
মোগল সভায় খান সামান অথবা মীর সামান ছিল গুরত্বপূর্ণ পদগুলোর একটি। তারা ছিলেন রাজকীয় পরিবারের রাজভাণ্ডারের প্রধান। ফরাসি চিকিৎসক ফ্রাঙ্কোইজ বার্নিয়ার ১৭ শতকে মোগল শাসনামলে একবার ভারতে আসেন। তিনি তার বর্ণনায় খানসামাদের 'সম্রাট পরিবারের 'প্রধান গৃহাধ্যক্ষ' (গ্রান্ড চ্যাম্বারলেইন) বলে উল্লেখ করেন। বার্নিয়ারের মতে, তাদের ভূমিকা মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় রাজপ্রাসাদে মেয়রদের দায়িত্বের সাথে সদৃশ। প্রাসাদসহ রাজকীয় স্থাপত্য এবং কারখানার শৃঙ্খলা দেখাশোনা করার দায়িত্ব থাকত খানসামার ওপর।
সামন্ততান্ত্রিক কাঠামো
নবাবের দরবারে খানসামারা ছিলেন প্রধান কর্মকর্তা। তারা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন যে তাদের অনেকে উচ্চ রাজনৈতিক দপ্তরে পদোন্নতি পেতেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৮১৪ সালে গাজী উদ্দিন হায়দার শাহ আওধ-এর শাসনভার গ্রহণের পর তার বাবা নবাব সাদাত আলি খানের খানসামা আঘা মীরকে প্রধান মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
লন্ডনের কিংস কলেজের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক অনন্যা জাহানারা কবির বলেন, 'খানসামারা ভারতের সামন্ততান্ত্রিক কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। সেসময় বিশেষ করে রাজকীয় ও সম্ভ্রান্ত পরিবারে গৃহস্থালির ব্যবস্থা বিশদভাবে পরিচালিত করা হতো। ভারতে ব্রিটিশরা এই সামন্ততান্ত্রিক, মধ্যযুগীয় কাঠামোগুলো বজায় রাখতে আগ্রহী ছিলেন। সুতরাং সেসময়ে দুর্বার, হাজরি ইত্যাদি অন্যান্য পদগুলোর মতো খানসামাও ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অংশ হয়ে গিয়েছিল।'
অনেক পণ্ডিত এই ব্রিটিশ দখলদারদের মাঝে এক ঘৃণিত পরিকল্পনা দেখতে পান। যেমন, আকবর এস আহমেদ এবং জোসেফ এল সোটার্স বিশ্বাস করেন যে, ব্রিটিশরা মুসলিমদের অপমান করার জন্য অধীনস্থদের বেলায় ইসলামিক পদবী ব্যবহার করত। আহমেদ ২০০২ সালে প্রকাশিত ডিসকভারিং ইসলাম: মেকিং সেন্স অব মুসলিম হিস্ট্রি অ্যান্ড সোসাইটি- বইয়ে লিখেছেন, 'খলিফা ও খানসামারা ছিলেন যথাক্রমে ইসলামের উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক কর্মকর্তা ও ভারতে মোগল শাসনামলে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। কিন্তু ব্রিটিশ প্রশাসনিক কাঠামোতে এসে এই পদবীগুলো নিচুস্তরের কর্মচারীদের জন্য ব্যবহার করা শুরু হয়। যেমন, নাপিত, মাঠ পর্যায়ের নিম্নপদস্থ কর্মচারীরা হয়ে গেলেন খলিফা আর বাবুর্চিরা হয়ে গেলেন খানসামা।'
কিন্তু ঔপনিবেশিক গার্হস্থ্য ব্যবস্থাপনায়ও খানসামা কেবল রন্ধনসম্পর্কিত পদবী ছিল না। উনিশ শতকের সাহিত্যে খানসামা এবং বাবুর্চি'র স্বাতন্ত্র্য লক্ষ্য করা যায়। বাবুর্চিরা রান্নাঘরে খাবার তৈরির কাজ করত। কিন্তু বাবুর্চিসহ রান্নাঘরের কর্মচারীদের সাথে ইংরেজ মেমসাহেবদের মাঝে যোগাযোগকারীর কাজ করতেন একজন খানসামা। অনন্যা জাহানারা বলেন, 'সেই অর্থে একজন খানসামা ছিলেন প্রভাবশালী সাংস্কৃতিক দালাল (broker, যারা মধ্যস্থতা করেন), ইউরোপীয় এবং স্থানীয় ভাষার মধ্যে সংযোগের প্রতিনিধি। তিনি তার নিয়োগকর্তা এবং জন্মভূমির মাঝে গুরুত্বপূর্ণ আলাপ-আলোচনা বিনিময়কারী তথা যোগসূত্র ছিলেন। এসব বিনিময় থেকে উদ্ভূত হয়েছিল একটু নব্য রন্ধন ও ঘরোয়া সংস্কৃতির।'
'এই বিনিময়ের দুটো দিক রয়েছে। একদিকে, খানসামারা স্থানীয় অভ্যাস এবং খাবারদাবার ব্রিটিশদের পছন্দ অনুযায়ী মানানসই করেছেন। অর্থাৎ তারা উপনিবেশ স্থাপনকারীদের একটি বিদেশি ভূখণ্ডের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে জীবনযাপন করতে সহায়তা করেছেন। অন্যদিকে, ব্রিটিশ নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে খানসামারা যা শিখেছেন তা ভারতীয় অভিজাত গৃহস্থে পরিচয় করে দিয়েছেন যেমন, ইউরোপীয় খাবার কীভাবে রাঁধা হয়, টেবিল সাজানো, খাবার সময় ছুরি, চামচের ব্যবহার ইত্যাদি। সাংস্কৃতিক যোগাযোগের উভয় দিকের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে খানসামারা একটি অনন্য অবস্থানে ছিলেন। তারা ছিলেন সাংস্কৃতিক দোভাষী, আবার তাদের রন্ধনপ্রণালীর দোভাষীও বলা চলে। সম্ভবত উপনিবেশকালে মাদ্রাজে প্রধান পাচককে খানাসামা না বলে দোবাশ (দোভাষী) বলা কোনো কাকতালীয় ঘটনা ছিলনা।'
খানসামাদের এই দোভাষী কার্যক্রম থেকেই ব্রিটিশ খাবারের সাথে স্থানীয় মসলার সংমিশ্রণ ও রন্ধনকৌশলের ফলে নানা শংকর ব্যঞ্জনের জন্ম হয়েছে- স্থানীয় মসলা মিশিয়ে রোস্ট ও স্টেক, অল্প মরিচ দিয়ে নিঁখুতভাবে কাটা মাংসের কিমা এবং কয়লার আগুনে রাঁধা ক্যারামেল কাস্টার্ড আরও কত কী! এই শংকর জঁনরার একটি আইকনিক ব্যঞ্জন হলো 'কান্ট্রি ক্যাপ্টেন' বা 'কাউনট্রি কপ্তান'- খুব অল্প মসলা দিয়ে রাঁধা সহজ একটি তরকারি। নামটি এসেছে দেশী জাহাজের অধিনায়কদের অনুসারে। তারা নাকি এই তরকারিটি খুব পছন্দ করতেন।
ডাক বাংলো
খানসামা এবং তাদের মনিবের মধ্যকার মিথষ্ক্রিয়া যে সমসবয় মসৃণ হতো তা নয়- অনেক সময় তাদের যোগাযোগ অশান্ত, ঝাঁজালো এবং বিদ্রুপাত্মকও হতো। অনেক খানসামা রান্নার সস্তা উপকরণ কিনে বেশি দাম দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতেন বলে বাকল্যান্ড অভিযোগ করেন। তিনি লিখেছিলেন, দিনের পর দিন খানসামা ওই একই বিস্বাদ খাবার, তরকারি এবং ভাত আনত যেগুলো তাকে লাভবান করত। আবার খানাসামারা দুগ্ধবিক্রেতার সাথে আঁতাত করে দুধে ভেজাল মেশাত বলেও অনেকে অভিযোগ করতেন। ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ফ্রান্সিস প্যাট্রিক নেপিয়ার-এর বলা একটি উদ্ভট গল্প আছে। গল্পটি এরকম- একজন খানসামা গ্রামবাসীদের এই বলে ভয় দেখিয়েছিলেন যে তাকে উপঢৌকন না দিলে ঔপনিবেশিক প্রশাসকেরা প্রাতঃরাশের জন্য একটি স্থুল শিশুকে হত্যা করবে। এভাবে করে সেই খানসামা এক মাসে তিন হাজার রুপি হাতিয়ে নিতেন।
গল্পটির সত্যি হোক বা না হোক, এটা সত্যি যে ঔপনিবেশিক মনিবদের সাথে খানসামাদের নৈকট্য তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দিত। তারা অনেক সময় 'সেলেব্রিটি' বনে যেতেন। পুরোনো কোলকাতায় তাদের নামানুসারে অনেক স্ট্রিট ও লেনের নামকরণ করা হয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে নিমু খানসামা লেন, ছকু খানসামা লেন, করিম বক্স খানসামা লেন এবং পাঁচু খানসামা লেন ইত্যাদি নামগুলো এখনো টিকে আছে।
অনেক খানসামার কাজের যাত্রা ব্রিটিশদের গৃহস্থে শুরু হয়ে ঘুরেফিরে পৌঁছাত ডাক বাংলোগুলোতে। এগুলো ছিল ইম্পেরিয়াল পোস্টাল সার্ভিসের অধীনে ব্রিটিশদের নির্মিত রেস্ট হাউজ। অনেক ডাক বাংলোতে, খানসামারা দুটো ভূমিকা পালন করতেন, একটা কেয়ারটেকারের, অপরটি রাঁধুনির। ১৯১১ সালে আ হ্যান্ডবুক ফর ট্রাভেলার্স ইন ইন্ডিয়া, বার্মা অ্যান্ড সিলন বইয়ে জন মুরে লিখেছিলেন, 'অনেক ক্ষেত্রে ভৃত্যের ইন চার্জকে খানসামা বলা হতো। তারা ইংরেজ কর্মকর্তাদের সেবা করতেন এবং তারা বেশ ভালো রাঁধুনি বলেও নিজেকে প্রমাণ করতেন। ঘরে কিংবা বাইরে যেকোনো জায়গায় একজন খানসামাকে রাঁধার দায়িত্ব দেওয়াটাই ভালো। কারণ এই কাজটি তারা নিঃসন্দেহে ভালোভাবে করেন।'
তবে সব ডাক বাংলোর খানসামারা ভালো রাঁধুনি ছিলেননা। ব্রিটিশ উপনিবেশকালের অনেক লেখায় ডাক বাংলোতে তাদের অনেক স্বাদহীন খাবারের বর্ণনা আছে। খানসামারা প্রায়শই আলস্যভরে সহজলভ্য সদ্য জবাই করা মুরগির মাংসের সাথে গুটিকয়েক মসলা মিশিয়ে তরকারি রেঁধে দিতেন।
আর অন্যদিকে, দক্ষ খানসামাদের হাতে খাবারগুলো হতো পরম উপাদেয়। তাদের ইউরোপীয় খাবারের জ্ঞানের সাথে হাতের কাছে থাকা অল্প উপকরণ দিয়ে তারা তৈরি করত অনেক সুস্বাদু খাবার। এরকম একজন রান্নার জাদুকর ছিলেন পিটার, যিনি ছিলেন কৃশঘুর ডাক বাংলোর খানসামা। তৎকালীন সরকারি কর্মকর্তা উইলিয়াম টেইলর-এর ভাষ্যমতে পিটার ছিলেন তাদের সময়ে 'একমাত্র জীবন্ত সেলেব্রিটি'। পিটারের দক্ষতা এতটাই মুগ্ধকর ছিল যে টেইলরের বন্ধু পিয়ার্স টেইলর তাকে নিয়ে নাতিন ভাষায় একটি গাঁথা লিখেছিলেন। পিয়ার্সের গাঁথায় পিটার ছিলেন 'ক্লান্ত ভ্রমণকারীদের কাছে গ্রিল্ড চিকেন, তরকারি, পোলাওসহ প্রাচ্যের অন্যান্য মুখরোচক খাবারের বিধায়ক; আসন্ন অতিথিদের জন্য সর্বদা প্রস্তুত এবং দূরে ভ্রমণকারীদের পালকি চোখে পড়া মাত্র তার অধীনস্থদের নিয়ে জীবন্ত মুরগি ধরতে পারদর্শী।'
ব্রিটিশরা ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও খানাসামাদের এই প্রভাব টিকে ছিল। রাজিকা ভাণ্ডারি তার বই রাজ অন দ্য মুভ-এ বার্নার্ডকে নিয়ে একটি পর্ব লিখেছিলেন। বিলাসপুর সার্কিট হাউজের খানসামা বার্নার্ড রন্ধন দক্ষতার পাশাপাশি তার বদমেজাজ নিয়েও বেশ পরিচিত ছিলেন। ১৯৫০ দশকের শুরু দিকে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর বিলাসপুরে যাওয়ার কথা ছিল। তার সার্কিট হাউজটিতে অবস্থানের সবকিছু আয়োজন এবং দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে সারানগড়ের রাজা সাহেবের ওপর। স্বভাবতই রাঁধার দায়িত্ব দেওয়া হয় দীর্ঘদিনের খানসামা বার্নার্ডকে। প্রধানমন্ত্রীকে কী খেতে দেবেন বার্নার্ড এই প্রশ্নের একটাই জবাব দেন, 'মাছ'। বার্নার্ড নেহরুর জন্য রাঁধেন অনিন্দ্য ব্যঞ্জন; মাছের ঝোল, কাটলেট এবং সুঘ্রাণযুক্ত তরকারি। খাবার খেয়ে নেহরু প্রশংসাসূচক বলেছিলেন, 'গতকাল রাতের ভোজন ছিল আমার জীবনে খাওয়া সেরা খাবার।'
- ভাষান্তর: নীতি চাকমা