লবণ-জলে জ্বলে জীবন, ছবি তুলে সাক্ষী রাকিবুল!
নয় দিনের জন্য গিয়েছিলেন এ দফায়। সেপ্টেম্বর মাস ছিল সেটা। সঙ্গে স্ত্রী ফাবিহা মনীর। দুজনেই ফটো জার্নালিস্ট। মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান জুমা প্রেসের স্টাফ, ফাবিহা নিউ ইয়র্ক টাইমসের। রয়টার্সও ডেকে পাঠায় সময় সময়।
রাকিবুল সুন্দরবনসংলগ্ন জনজীবনের ছবি তোলা শুরু করেছেন ২০০৯ সাল থেকে। ২০০৭ সালে প্রলয়ংকরী সিডর আর নয়ে আইলা সুন্দরবন তথা উপকূলের মানুষদের জীবনযাত্রা যাকে বলে 'ছ্যাড়াব্যাড়া' করে ফেলে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। সিডর এসে তা হাতেনাতে বুঝিয়ে দিয়ে গেল। লবণ ঢুকে পড়ল ব্যাপকভাবে উপকূলের জমিজমায়, খাবার পানিতে, দোকানপাটে মায় বসতবাড়িতেও।
সিডরের পর থেকে ফি বছরই কিন্তু একটা না একটা দুর্যোগ হানা দিচ্ছে। সাগরও আগের তুলনায় বেশি বেশি উতলা হয়, লবণ ঢেলে দেয় জনজীবনে। রাকিবুল খুব খেয়াল রাখেন ওদিকটায়।
কেন? জানতে চাইলে বললেন, 'ফটোজার্নালিস্ট হিসাবে তো একটা দায়িত্ব আছেই। মানুষের খবর মানুষ না রাখলে কে রাখবে? শহরবাসী ভাবতেও পারবে না মাইলকে মাইল কী শূন্যতা আর হাহাকার সেখানে। জীবন নিয়ে সেখানে চলে বেশুমার ছিনিমিনি। লবণ নারীদের প্রজননস্বাস্থ্যকেও বিঘ্নিত করছে। কৈশোরকালীন পিরিয়ড বা মাসিককে করছে বিলম্বিত অথবা অনিয়মিত।
'একটু মিষ্টি পানির জন্য মানুষগুলোকে হেঁটে যেতে হয় দেড়-দুই ঘণ্টার পথ। এ কাজটি বেশি করে শিশুরাই। তাই তো ক্লাস টুয়ের পর বেশি কেউ স্কুলে যাওয়ার সময় পায় না।
'নিজের খাবারের চিন্তা নিজেকেই করতে হয় এখানে, তা সে শিশু হোক বা বৃদ্ধ অথবা নারী। মানুষগুলোর স্বপ্নও তলানীতে এসে ঠেকেছে। স্বপ্ন বলতে তো ওই, পেট পুরে ভাত খাওয়া।'
লাস্ট সাপার তুলেছেন ২৮ সেপ্টেম্বর
লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মিলান ফ্রেস্কো দ্য লাস্ট সাপারের কথা পৃথিবীর অনেক মানুষই জানেন। বারোজন শিষ্যকে সঙ্গী করে যিশুখৃষ্ট শেষবারের মতো যে রাতের খাবার খেয়েছিলেন আর তখন তিনি উপস্থিত শিষ্যদের মধ্য থেকে একজনের বিশ্বাসঘাতক হওয়ার কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন, তাতে তৈরি হয়েছিল এক মহানাটকীয়তা। ভিঞ্চি সে নাটকীয়তা তুলে ধরে এক মহতী শিল্পকর্ম গড়েছিলেন, যার নাম দ্য লাস্ট সাপার।
সেপ্টেম্বরে রাকিবুল কয়রা যাওয়ার বেশ আগেই ভেবে রেখেছিলেন লাস্ট সাপারের মতো করে একটি ছবি তুলবেন। এতে লবণ হবে সে নিয়ামক যাকে রাজার কন্যা লবণের মতো 'ভালোবাসি' বলে মধুর করে তুলেছিলেন, আজ তা কয়রাবাসীর জন্য বিষ হয়ে উঠেছে জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায়।
সুন্দরবনসংলগ্ন আশাশুনি সাতক্ষীরা জেলার একটি উপজেলা। এর পূর্বদিকে খুলনার কয়রা। প্রতাপনগর আশাশুনি সদর থেকে দূরবর্তী এক গ্রাম, সুন্দরবনের ধারে। সে গ্রামের চারটি পরিবারের ১৩ জন তাদের শেষ খাবারগুলো নিয়ে জড়ো হয়েছিল লবণজলের মাঝে, বিছিয়েছিল কাঠের টেবিল-চেয়ার। আর কানাকানি করছিল, এর পর কী খাবে? তাদের শেষ খাবারগুলোর মধ্যে কুমড়া, মূলা এবং আরো কিছু তরিতরকারি ছিল বেশি, মহার্ঘ্য খাবার বলতে ছিল গোটা ছয় কলা। ছবিটি রাকিবুল তুলেছেন সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখ।
রাকিবুল এবারের আগে ডকু-ফিকশন ধরনের ছবি তোলেননি। আগে তোলা ছবিগুলো ছিল প্রামাণ্য (ডকুমেন্টারি)। তখন সময় ও সমাজের বাস্তব চিত্র ধরেছেন ক্যামেরায়। তাতে সুবিধা হয়েছে এই—তথ্যগুলো জড়ো হতে থাকছিল, যেমন এখানকার মিঠাপানির নদী-খালগুলোও লবণাক্ত হয়ে যাচ্ছে, মিঠা পানির মাছের আকাল দেখা দিচ্ছে, মাছের খাদ্য ও প্রজননচক্র নষ্ট করে দিচ্ছে লবণ, অতিরিক্ত গরম মানুষের ত্বক নষ্ট করে দিচ্ছে, নারীদের ফার্টিলিটি (উর্বরতা) কমিয়ে দিচ্ছে, ইউটেরাসে ক্যান্সার হচ্ছে ইত্যাদি।
আগের তোলা ছবিগুলো দিয়ে যে ফটো সিরিজ করেছেন, রাকিবুল তার নাম দিয়েছেন সল্ট। এই ছবিগুলোয় তিনি মানুষের মুখাবয়ব ধরেছেন পরিবেশের মাঝে। উদ্বেগে ভরা সেসব মুখ লবণের ছোপে ভাঙাচোরা, তাদের পায়ের তলার মাটি ফেটে চৌচির, দূরের গাছে পাতা নেই বললেই চলে, কলসি ধরা হাত খড়খড়ে, সঙ্গী কুকুরগুলোও নতমস্তক। আশাহীন, ভরসাহীন, স্বপ্নহীন এক লোনা পৃথিবীর চেহারা ধরা পড়েছে ছবিগুলোয়। রাকিবুলের ছবি সাক্ষ্য দিচ্ছে, এখানকার আকাশও কালো।
তাহলে কী হবে জীবনের? জানতে চেয়েছিলাম। রাকিবুল বললেন, 'সে ভাবনা নেই তাদের। আগামীকালের কথা আজ ভাবার সুযোগ নেই মানুষগুলোর। এখনটাই তাদের কাছে জীবন। তারা জানেও না, কেন সাগর এত উতলা হয় ইদানীং? কেন বাতাস ভারী হয়ে উঠে ঝড় তোলে? কে এজন্য দায়ী?
'প্রতি বছরই তাদের নতুন করে ঘর বাঁধতে হয়। এভাবে কাঁহাতক! তাই লোকাল মাইগ্রেশন ঘটে চলে। এ গ্রাম থেকে ওই গ্রামে যায় একটু আশ্রয়ের আশায়। পরেরবার যখন ওই গ্রামও সয়লাব হয় লবণে তখন আবার আরেক আশ্রয়ের খোঁজ লাগায়। এবার তাই যাওয়ার আগেই ভেবে ও প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছিলাম প্রাপ্ত তথ্যগুলোর ওপর ভর করে ডকু-ফিকশন ধরনের ছবি তুলব।'
এ দফার নয় দিনে বেশ কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন ভাবনার ছবি তুলেছেন রাকিবুল। সিরিজটির নাম দিয়েছেন, দ্য ব্লু ফিগ বা নীল ডুমুর। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার শেষ যে বিন্দু তার নাম নীল ডুমুর। এর পরে আর বসতি নেই। ছোট নদী বা খালের ওপারেই বন শুরু হয়—সুন্দরবন।
রাকিবুল বলছিলেন, 'সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকার লোক ডুমুর রান্না করে খায়। লোনা জমিতে এটি জন্মেও ভালো। লোনা জমির পরিমাণ যত বাড়বে তত ডুমুরের পোয়াবারো, কিন্তু মানুষের সর্বনাশ। তখন ডুমুর হবে হরিষে বিষাদ। আর সেদিন বুঝি বেশি দূরেও নয়। তাই দুঃখের সঙ্গেই নিরুপায় হয়ে সিরিজটির নাম রেখেছি নীল ডুমুর।'
সাগর শান্ত করতে ভায়োলিন
এত অস্থির সাগর উপকূলের মানুষ বছর পঁচিশ আগেও দেখেনি। ভরা জোয়ারে খেপে যায় সাগর, সে তো জানা কথাই। কিন্তু ইদানিং খেপছে বেতালা। একে তো ঘূর্ণি, তার ওপর ফণাও তুলছে আগের চেয়ে উঁচুতে। বাধ মানছে না ঢেউ, মাঝেমধ্যেই ভেঙেচুরে ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। জমিতে ঢালছে লবণ।
আগে মাছ ধরে, জমিতে শাকসবজি ফলিয়ে চলে যেত। চাউল কিনত কাঁকড়া আর চিংড়ির রেণু বেচে। স্বপ্ন দেখারও সময় পেত কিছু। কিন্তু এখন খাবার পানি পেতেই শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে। অপুষ্টির শিকার প্রায় সব নারী-পুরুষ-শিশু। সতর ঢাকার পোশাকও নেই অনেকের।
এ পরিস্থিতিতে রাকিবুলও দিশেহারা। শেষে একজন ভায়োলিন বাদককে যোগাড় করলেন, যিনি করুণ সুর নিবেদন করে সাগরকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানালেন। তৈরি হলো আরেকটি অনন্য ছবি।
রাকিবুল বলছিলেন, 'এখন আমি নিরীক্ষাধর্মী ছবি তোলাতে বেশি মনোযোগী হয়েছি। চাইছি বাস্তবতার সঙ্গে কল্পনার মিশেল ঘটাতে, চলমান ঘটনাকে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে। ফলশ্রুতিতে নিজেকে অতিক্রম করে যাওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বাস্তবতার সরাসরি উপস্থাপনে যে একঘেয়েমি তৈরি হয়, তা দূর করারও এটা মোক্ষম দাওয়াই।'
এরপর নূহের নৌকা
ব্লু ফিগ সিরিজের নোয়াজ আর্ক বা নূহের নৌকা আরেকটি অসাধারণ ছবি, বিশেষ করে ভাবনার দিক থেকে। এতে রাকিবুল বনের অনেক পশুপাখিকে জড়ো করেছেন একটি দশমণি নৌকায়। বলাই বাহুল্য, এরা সব পাপেট মানে পুতুল পশুপাখি। এদের মধ্যে সুন্দরবনের মহারাজা বেঙ্গল টাইগার, তার চঞ্চল পারিষদ বানর, লাজুক ওমরাহ হরিণ, ধৈর্য্যধর বক, পরাক্রমশালী আমীর কুমির প্রমুখ রয়েছেন।
রাকিবুল ব্যখ্যা করছেন, 'সব ঝড়েই কিন্তু বুক পেতে দেয় সুন্দরবন। বনটি দেয়াল হয়ে মানুষকে ক্ষতি থেকে বাঁচায়। কিন্তু মানুষ এর ওপর অবিচার করতে ছাড়ে না। সুযোগ পেলে চোরাশিকারিরা বাঘও মারে। উপরন্তু লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় বনের পশুপাখিদেরও কষ্ট কম হচ্ছে না। তাই ভাবলাম এদের জন্য এখন একটি নূহের নৌকা দরকার যা তাদের বিপন্ন হওয়া থেকে রক্ষা করবে।'
ওই সিরিজের আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে পাঁচ সদস্যের এক পরিবারকে। সদস্যদের দুজন প্রাপ্তবয়স্ক, মানে পিতা-মাতা। তিন সন্তানের একজন কোলে, অন্য দুজনের বয়সও অল্প। তারা পানিতে দণ্ডায়মান। পরিবারের কর্তার মাথায় একটা টিনের ট্রাঙ্ক দেখা যাচ্ছে, কাঁধে ব্যাকপ্যাক। তারা ঢাকায় যাচ্ছে, বছরের ছয় মাস তারা ইটভাটায় ইট ভেঙে জীবিকা নির্বাহ করে।
রকিবুল জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের তোড়ে টিকতে না পেরে অনেক পরিবার শহরমুখী হচ্ছে বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা থেকে। বাধ্য হচ্ছে পেশা বদলাতে। বদলে যাচ্ছে তাদের চারধারের চিরচেনা পরিবেশ। অচিন পরিবেশে এসে কেউ খোয়াচ্ছে সম্মান, কেউ হারাচ্ছে জীবনটাই।
শহরে এসে রিকশা চালাচ্ছে, লেদ কারখানায় কাজ নিচ্ছে, প্লাস্টিক পোড়াচ্ছে, লোহা গলাচ্ছে। অথচ এগুলোতে তারা অভ্যস্ত নয়। তাই কারুর হাত যাচ্ছে, কেউ গাড়িচাপা পড়ছে, কেউ-বা ধুঁকছে ফুসফুসের রোগে। অথচ তারা জানে না জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য কারা দায়ী। কোন দূর দেশে কে বড়লোক হওয়ার নেশায় কার্বন ছড়িয়ে যাচ্ছে বাতাসে আর ফল ভোগ করতে হচ্ছে মুন্সিগঞ্জ, কয়রা বা শ্যামনগরের আলতা বানু কিংবা ছমির মোল্লাকে।
বনবিবি ডম্বরু বাজাচ্ছেন
অথচ বনবিবির কাজ ডম্বরু বাজানো নয়। তিনি বনের মানুষকে আগলে রাখেন বিপদ-আপদ থেকে। পূজিত হন রক্ষাকর্ত্রী হিসেবে। কিন্তু রাকিবুল ম্যানগ্রোভ বনে বনবিবির ছবি তুললেন নটরাজ সাজিয়ে। যাকে তিনি বনবিবির মডেল করেছিলেন, তিনি ওয়াইল্ড টিমের একজন সদস্য। বাঘের আক্রমণে যারা মৃত্যুবরণ করে তাদের শবের অবশিষ্টাংশ বন থেকে উদ্ধার করে এনে সৎকার বা কবরস্থ করার ব্যবস্থা করে ওয়াইল্ড টিম।
মডেলের জন্য রাকিবুল ঢাকা থেকেই মুকুট, শাড়ি আর শঙ্খ নিয়ে গিয়েছিলেন। সেসবে মডেলকে সাজিয়ে বন যেখানে নদীতে গিয়ে ঠেকেছে সেখানে নটরাজের ভঙ্গিতে ছবি তুলে নিলেন রাকিবুল।
বললেন, 'নটরাজ বা মহাদেব প্রলয়েরও দেবতা। বনের আর বনজীবীদের যে হাল এখন, তাতে বনবিবি আর রক্ষাকর্ত্রী হিসেবে আবির্ভূত হতে পারছেন না, বরং ডম্বরু বাজিয়ে প্রলয়নৃত্য জুড়েছেন। বস্তুত ব্লু ফিগ সিরিজের সবগুলো ছবিই বলে ভাঙনের কথা, প্রলয়ের কথা, বিপর্যয়ের কথা। ছবিগুলো যদি প্রলয় ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের উদ্যোগী করে তোলে, তবেই আমার এ প্রয়াস সার্থক হয়।'
ব্যক্তিগত রাকিবুল
বনে যাওয়ার সময় রাকিবুল যথেষ্ট পরিমাণে শুকনো খাবার, যেমন বিস্কুট, চানাচুর, চকলেট আর সেসঙ্গে অনেক পানির বোতল নিয়ে যান। বনজীবীরা যা পায় তাতেই তুষ্ট হয়, তবে পানি পেলে বেশি খুশি হয়।
সেপ্টেম্বরে যখন গিয়েছিলেন তখন প্রপসও (শুটিং আবহ তৈরির উপকরণ) নিয়ে গিয়েছিলেন অনেক। ছবি তোলার প্রয়োজনীয় কোনো উপকরণই সঙ্গে নিতে ভোলেন না রাকিবুল।
ইংল্যান্ডের ফ্যালমাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ফটোগ্রাফিতে পোস্টগ্রাজুয়েট হয়েছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিল্পের ইতিহাস ও দর্শন বিষয়ে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট সার্টিফিকেট পেয়েছেন। গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্ম অ্যান্ড ভিডিও প্রোডাকশন বিষয়ে।
রাকিবুল পড়তে ভালোবাসেন। তার প্রধান আগ্রহ আলোকচিত্র বিষয়ে। পাশাপাশি চিত্রকলা, চলচ্চিত্রেও তিনি আগ্রহী। রাকিবুল-ফাবিহা দম্পতি তিন পুত্র-কন্যার জনক-জননী—সিতারা, আভনার ও উরাস।