নামে রাজা, বেশভূষায় রাজা, চায়েও রাজা!
আট থেকে আশি সবার কাছেই তার একটাই পরিচয়—রাজা মামা। তিনি কি শুধু নামেই রাজা? আজ্ঞে না। তার সাজসজ্জা, চলন-বলন সবই রাজার মতো, এমনকি নধর গোঁফটাও। পায়ে নাগরা জুতা, মাথায় পাগড়ি, পরনে জারদৌসির পাঞ্জাবি আর তার ওপর জমকালো কটি। তবে এগুলো পরিধান করেই তিনি ক্ষান্ত হননি, কটির উপর লাগিয়েছেন কেটলির তামাটে ব্রোচ। এই রাজার হাতে কিন্তু কোনো তলোয়ার নেই, আছে চায়ের কেটলি। কেটলির মাধ্যমেই চা-প্রেমীদের জন্য তিনি ছড়িয়ে দিচ্ছেন ভালোবাসা। খুলেছেন চায়ের দোকান—নাম দিয়েছেন 'রাজা চায়ের আড্ডা'।
শুধু কি রাজার সাজ? 'রাজা চায়ের আড্ডা'র অন্দরমহলের সাজগোজও চমকে যাওয়ার মতোই। প্রাসাদের মতোই সাজানো সবকিছু। শুরুতেই থরে থরে সাজানো কাঁসার তৈরি বিভিন্ন আকার ও ডিজাইনের রাজকীয় কেটলি। অলিন্দের দেয়ালের একপাশে ঢাল-তলোয়ার, আরেকপাশে সাজানো রাজা-রানির ছবি এবং মাথার উপরে ঝাড়বাতি। মাঝখানে বড় করে লেখা 'রাজা চায়ের আড্ডা'। অলিন্দ পেরিয়ে ভেতরে গেলে দেখা যাবে আবার ভিন্ন চিত্র। গ্রাহকদের আপ্যায়নের ঘরটি সাজানো রাজা ও তার স্ত্রীর ছবি এবং 'রাজা চায়ের আড্ডা' নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া সংবাদ দিয়ে।
নানান দেশের চায়ের হাতেখড়ি দুবাই থেকে!
জনসমক্ষে 'রাজা মামা' হিসেবে পরিচিত এই ভদ্রলোকের আসল নাম আজহারউদ্দিন রাজা। চায়ের দুনিয়ায় তার আসার গল্পটাও বেশ চমকপ্রদ। এত খ্যাতি কিংবা মর্যাদা অর্জনের পেছনে যে শ্রম ও কষ্ট লুকিয়ে আছে, তার কথা বলতেও তাই কোনোরকম দ্বিধা বোধ করেন না আজহারউদ্দিন রাজা ওরফে রাজা মামা। তিনি বলেন, 'আমি তো পেটের দায়ে দেশের বাইরে গেছিলাম। আমার বাবা একজন খেটে খাওয়া মানুষ ছিলেন। ওই হিসেবে সংসারকে ধরে রাখার জন্য এবং একটু ভালো থাকার জন্যই দুবাইয়ে যাওয়া।'
দুবাইয়ে গিয়ে শুরু হয় নতুন যুদ্ধ। সেখানে আজহারউদ্দিন কাজ নেন একটি হোটেলে। বিলাসবহুল দুবাইয়ে যেহেতু অনেক ধরনের মানুষ যায়, তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন সেখান থেকে হরেক রকমের চা বানানো শিখবেন। হোটেলে কাজ করতে গিয়ে সাক্ষাত হয় রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশের কারিগরদের সাথে। নানান স্বাদের ও নানান দেশের চায়ের হাতেখড়িও তাদের থেকেই।
কিন্তু দুবাই যাত্রাও বেশিদিন সফল হয়নি। তেমন পয়সা-কড়ি উপার্জন করতে পারেননি সেখান থেকে। তবে আজহারউদ্দিন দেশে ফেরার সময় সাথে করে কিছু কাঁসার জিনিসপত্র নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে যখন মানুষ বিদেশ থেকে ফেরত আসে তখন সোনার গয়না, কম্বল, সাবান, চকলেট এগুলো নিয়ে আসে। আমি কিন্তু সাথে করে চায়ের কেটলি নিয়ে এসেছি।'
দেশে ফেরার পরেও তাকে কম সহ্য করতে হয়নি। দেশে ফিরে যখন ঠিক করলেন এলাকায় বিদেশি চায়ের দোকান দেবেন, উপার্জিত শিক্ষা কাজে লাগাবেন, তখনই চারপাশে হাসির রোল পড়ে যায়। যদিও আশেপাশের মানুষের এমন আচরণ আজহারউদ্দিন রাজাকে অনেক কষ্ট দিয়েছিলো, তবুও তিনি দমে যাননি। আশপাশ থেকে হাসি-ঠাট্টা পেয়ে ঢাকায় আসেন কাজ খোঁজার জন্য।
যেভাবে শুরু হলো রাজা মামার যাত্রা!
ঢাকায় এসে বিভিন্ন দেশের চা বানানোর ব্যবসা শুরু করবেন—এমন পরিকল্পনা যখন করেন, তখনও মনের মধ্যে কিঞ্চিৎ ভয় কাজ করছিলো সবার প্রিয় রাজা মামার। তিনি বলেন, 'আমার জায়গা থেকে আমি ভাবতাম, দেশের মানুষ পাঁচ টাকা দামের চা খায়। এত দামি চা যে তারা খাবে—এটা আমি কল্পনাই করতে পারিনি।'
২০১৮ সালে স্বল্প পরিসরে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকায় ৩ হাজার টাকার পুঁজি নিয়ে শুরু হয় রাজা মামার যাত্রা। সেখানে রেলস্টেশনের ধারে ভ্যানগাড়িতে চা নিয়ে তার পথ চলা শুরু হয়। সেই জায়গা থেকে আজহারউদ্দিন রাজার বর্তমান মাসিক আয় এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা। তার অধীনে বর্তমানে ১২ হাজার টাকা থেকে ২৮ হাজার টাকার বেতনভুক্ত ৭২ জন কর্মচারী কাজ করেন।
রাজার মতো সাজগোজের আসল রহস্য জানতে চাইলে রাজা মামা বলেন, 'পাগড়ি বাঁধার অভ্যাস আগেই ছিল। দুবাইতে থাকাকালীন পাগড়ি পরতাম। সেই সময় দেখতাম পাকিস্তান, ইন্ডিয়ার অনেকেই পাগড়ি বাঁধে। তাদের থেকেই শেখা আসলে।
'রাজার পোশাক-আশাকের উদ্দেশ্য হলো, আমি তো অনেক মানুষের সাথেই ছবি তুলি। আমি যদি স্বাভাবিক রূপে যাই, তাহলে তো হলো না। রাজা তো রাজাই। তাই সাজগোজ যদি রাজার মতো না হয়, তাহলে দর্শক গ্রহণ করবে না। তাই রাজা মামা যতদিন আছে, রাজার মতোই সবাইকে বিনোদন দিয়ে যাবে।'
সুস্বাদু চায়ের রহস্য!
রাজা মামার সুস্বাদু চায়ের পেছনের রহস্য হলো, দুধের উপর চায়ের পাতা বা লিকার ব্যবহার করা। দিনভর চুলায় জ্বাল হতে থাকে দুধ। তার উপরে যখন লিকার পড়ে তখন চায়ের স্বাদও বহুগুণে বেড়ে যায়।
'রাজা চায়ের আড্ডা'র কোনো চা কিন্তু সাধারণ দুধ চা কিংবা লাল চা নয়। এখানে পাওয়া যায় বাহারি স্বাদের ও রঙের বিভিন্ন চা, যা যে কারো মন কাড়তে বাধ্য। প্রথমদিকে দুধ চা, মাল্টা চা, তেঁতুল চা পাওয়া গেলেও এখন পাওয়া যায় ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের চা। বাহারি স্বাদের চায়ের মধ্যে রয়েছে রাজা স্পেশাল চা, রাজা স্পেশাল মালাই চা, রাজা ইরানী জাফরান দুধ চা, কাজু বাদামের চা, রাজা কাশ্মিরী গোলাপী চা, মালয়েশিয়ান চকলেট চা, তুর্কি স্পেশাল লাল চা প্রভৃতি। শুধু চা-ই নয়, রাজা স্পেশাল জাফরান লাচ্ছি, রাজা স্পেশাল পেস্তা লাচ্ছিও শোভা পায় এখানে।
অভিজাত মশলা জাফরান ও পেস্তা বাদাম স্পেশাল চা তৈরির মূল উপাদান। দেশের মানুষের স্বাদের সাথে তাল মিলিয়ে তৈরি করেন কাজু বাদাম চা, পেস্তা বাদাম চা। তবে কেউ যদি রাজা মামার কাছে সাধারণ দুধ চা খাওয়ার আবদার করে, তিনি সেটিও তৈরি করে দেন।
অন্যতম আকর্ষণ 'বালু চা'!
তুর্কির বিখ্যাত স্যান্ড কফির আদলে রাজা চায়ের আড্ডার অন্যতম আকর্ষণ 'বালু চা'। এই চা বানানোর পদ্ধতিও আজহারউদ্দিন রাজা শিখেছেন দুবাই থেকে। তিনি বলেন, 'উত্তপ্ত বালুর গরমে চাল থেকে যদি মুড়ি পাওয়া যায়, তাহলে চা-ও গরম হবে। এই চা খুব সুস্বাদু হয়। চতুর্দিকের তাপে পানির ভাপটা যখন টেনে যায়, তখন ঘন হয়ে সরের মতো পড়ে। তুর্কির মানুষ এই পদ্ধতিতে চা-কফি বানানোকে টার্কিশ কফি বা টার্কিশ টি বলে। কিন্তু আমি বাংলা ভাষাকে সম্মান দিয়ে "বালু চা" নাম রেখেছি।'
একটি বড় পাত্রের মধ্যে বালু ছড়িয়ে তার উপর চায়ের পাত্রের ঘর্ষণে বানানো হয় বালু চা। নিচ থেকে হিটার কিংবা গ্যাসের মাধ্যমে ক্রমাগত উত্তপ্ত করা হয় বালুকে। চায়ের পাত্রে লিকার, দুধ, চিনি মিশিয়ে বালুর মধ্যে ঘোরানো হলে উত্তাপে পাত্রের চা উথলে ওঠে। আর তাতেই তৈরি হয় বালু চা।
চায়ের দামও সবসময় হাতের নাগালে রাখার চেষ্টা করেন আজহারউদ্দিন রাজা। চায়ের দাম শুরু হয় ৩০ টাকা থেকে। রাজা চা, রাজা মালাই চা, কড়া লিকারের দুধ চা ৩০ টাকাতেই পাওয়া যায়। তবে স্পেশাল চা অর্থাৎ স্পেশাল মালাই চা, রাজা ইরানী জাফরান দুধ চা, রাজা লাভ চা, রাজা কাশ্মিরী গোলাপী চা খেতে খরচ করতে হবে ৫০ টাকা। তবে লাচ্ছির দাম চায়ের তুলনায় কিছুটা বেশি। জাফরান লাচ্ছি, পেস্তা লাচ্ছির দাম মূলত ১০০ টাকা করে।
মানুষের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে রাজা মামা চা তৈরি করেন। তিনি বলেন, 'পেস্তা বাদাম, কাজু বাদাম, জাফরান শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাই এগুলোর সহযোগে আমরা এখানে চা বানাচ্ছি।'
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় 'মাটির কাপে চা'!
রাজা মামার দোকানের আরেকটি আকর্ষণ মাটির ভাঁড়ে বা কাপে চা পরিবেশন করা। মাটিকে ভালোবেসে এবং মানুষের সুস্থতার জন্যই তিনি নিয়েছেন মাটির ভাঁড়ে চা পরিবেশনের ব্যবস্থা। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে যখন মাটির টানে ফিরে এসেছি, তাই মাটির কাপেই চা বিক্রি করব বলে ঠিক করি। চা বিক্রির পর দেখা গেছে, এই কাপে চা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।'
তিনি আরো বলেন, 'মাটির কাপে চা খেতে ভালো লাগে অনেক। মাটির কাপে চা ঢালার সাথে সাথে একটা পানির ভাপ আসে, যেটা মাটি টান দিয়ে শুষে দেয়। যার কারণে আমার চা দইয়ের মতো ঘন হয়। এজন্য মাটির কাপ ব্যবহার করি।'
মাটির কাপগুলো সংগ্রহ করা হয় মূলত বাউফল, সাভারের মৃৎশিল্পীদের থেকে। রাজা মামা বলেন, 'একটু বড় সাইজের কাপ আমরা অর্ডার দিয়ে আনাই। চায়ের কাপে একটু মাটি বেশি দিয়ে তৈরি করাই, যাতে সহজে পানির ভাপ টানে। কাপ পাতলা হয়ে গেলে বা বেশি ফিনিশিং চলে আসলে পানির ভাপ টানবে না।'
শূন্য থেকে শুরু করা আজহারউদ্দিন রাজা সবসময় চেষ্টা করেন ব্যক্তিজীবন ও কর্মজীবনে সততা বজায় রাখার। প্রতিনিয়ত নিজের কর্মীদের এমন ধারার শিক্ষাই দিয়ে থাকেন তিনি। গ্রাহক যাতে সর্বোচ্চ সেবা পায় এবং গ্রাহকের সেবা যত্নে যেন কোনো ত্রুটি না থাকে, সেদিকে সর্বদা কর্মীদের নজর রাখার উপদেশ দেন আজহারউদ্দিন রাজা। তিনি বলেন, 'আমি কর্মীদের বলি—তোমরা যদি মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করো, তাহলে লোকে বলবে রাজা মামা খারাপ। ১৮টি দোকানে সবসময় তো যাওয়া সম্ভব হয় না, তাই আমি কর্মীদের সবসময় ভালো আচরণ করতে বলি।'
শারীরিকভাবে যারা অক্ষমতা বা প্রতিবন্ধকতার শিকার তাদের কাছে বিনামূল্যে চা পৌঁছে দেন রাজা মামা। তিনি বলেন, 'তারা যখন আমাদের দোকানের বাইরে এসে দাঁড়ান, তাদেরও চা খাওয়ার ইচ্ছা জাগে। তাই তাদের জন্য বিনামূল্যে চা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি। এটা আমি নিজের মানবতা থেকে করি।'
প্রধানমন্ত্রীকে চা খাওয়ানো রাজা মামার স্বপ্ন!
২৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাতেও রাজা চায়ের আড্ডা ভীষণ সাড়া পেয়েছে। গোটা এক মাস তুমুল ব্যস্ততার মধ্যে কাটিয়েছেন তারা। শুধু তা-ই নয়, বাণিজ্যমেলায় 'বেস্ট ইনোভেটিভ টি সেলার' হিসেবে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে পুরস্কারও পেয়েছেন। বাণিজ্যমেলায় মাননীয় স্পিকারকে চা খাওয়ানোর সুযোগ পেয়েছেন আজহারউদ্দীন রাজা। এখন স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রীকে চা খাওয়ানো।
শুধু রাজা না, তার স্ত্রী জুয়েনা সুলতানা—যিনি রানি সাহেবা হিসেবে পরিচিত—তিনিও রাজা চায়ের আড্ডার অন্যতম প্রিয় মুখ। রাজা চায়ের আড্ডার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। জুয়েনা বলেন, 'প্রতিষ্ঠানের সবকিছুর দেখভাল, কারিগরদের সমস্যা, এমনকি কারিগররা ঠিকঠাকভাবে চা পরিবেশন করছে কি না, তার সম্পূর্ণ পরিচালনা আমিই করি।'
রাজা মামা কেবল বাংলাদেশেই বিখ্যাত নন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও হয়েছে তার জয়জয়কার। চীন, নেপাল প্রভৃতি দেশের পত্রিকাতে তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
ঢাকা শহরের মিরপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন লাভ রোডে রাজা চায়ের আড্ডার অবস্থান। দেশজুড়ে রাজা চায়ের আড্ডার মোট ১৮টি শাখা রয়েছে। যেগুলোর অবস্থান মূলত ঢাকার মতিঝিল, টঙ্গী, কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্ট, চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি, ষোলশহর, নাসিরাবাদ প্রভৃতি এলাকায়।
সপ্তাহে সাতদিনই খোলা থাকে রাজা মামার চায়ের দোকান। শুক্রবার ব্যতীত বাকি দিনগুলোতে সকাল ১১টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শুক্রবারে দুপুর ২টার পর শুরু হয় চা বিক্রির কাজ-কারবার। প্রতিদিনই অনেক জনসমাগম হয় রাজা চায়ের আড্ডায়। এমনই একজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মানবী। বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতে প্রায়ই রাজা চায়ের আড্ডায় আসেন। তিনি বলেন, 'আমার বাসা মিরপুরে হওয়ায় মাঝেমধ্যেই রাজা চায়ের আড্ডায় আসি। এই জায়গায় সবসময়ই অনেক ভিড় থাকে। চায়ের স্পেশালিটি, দামটাও রিজনেবল হওয়ায় এখানে বেশি আসি।'
আজহারউদ্দিন রাজা ওরফে রাজা মামা আজ সফল। ময়মনসিংহে নিজের এবং বাবা-মায়ের জন্য তৈরি করেছেন বাড়ি। অতীতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ছলছল নয়নে বলেন, 'আমি একসময় ভাবতাম—আমার যদি মাসে ২০ হাজার টাকা আয় থাকত, তাহলে কতোই না বড়লোক হতাম আমি! আজকে আমি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের হাতে ধরে কাজ শেখাচ্ছি। তাদের আন্তর্জাতিক মানের কারিগর বানাচ্ছি।'
সাধারণ মানুষের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় আজহারউদ্দিন রাজা ওরফে রাজা মামা। তার সদা হাস্যমুখ ও মিষ্টি ব্যবহার দেখে যেন বশীভূত হয়ে যায় সকলে। তাই যখন কেউ এসে বলে, 'রাজা মামা আপনি তো ব্র্যান্ড হয়ে গেছেন', রাজাও শুনে হেসে উত্তর দেন, 'আমাকে তো আপনারাই ব্র্যান্ড বানিয়েছেন। এই ব্র্যান্ড জনগণের, এই ব্র্যান্ড দেশের মানুষের!'