নীলক্ষেত যখন উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও দুষ্প্রাপ্য বইয়ের প্রিন্ট আর ফটোকপি বই বাজার!
১৯৫৮ সাল। গণি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় স্নাতক চতুর্থ বর্ষে। সাহিত্য নিয়ে রাত-দিন পড়ালেখা চালাতেন লাইব্রেরীতে। সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর বই তো আর লাইব্রেরীর বাইরে নিয়ে যাওয়া যায় না। তাই এখানে বসেই যা নোট করার করতেন তিনি।
দাদাভাইকে নিয়ে এমন অনেক গল্প ফেরদৌস (ছদ্মনাম) তার ছোটোবেলা থেকে শুনে আসছে। এখন সে নিজেও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে। ঈদের পর ভার্সিটি খুলেই একবারে পরীক্ষা। তাই এ ক'টা দিন লাইব্রেরীতেই থাকা হচ্ছে তার। দাদার মতো তারও লাইব্রেরীতে পড়ার অভ্যাস।
তবে ফেরদৌসই ব্যতিক্রম। তার বন্ধু-সহপাঠীরা কিন্তু লাইব্রেরীতে সহজে পা মাড়ান না। তাদের প্রায় সব পড়াশোনা বলতে গেলে এখন ল্যাপটপ আর মোবাইলের স্ক্রিনেই আটকে আছে। করোনার আগে তাও যত ফটোকপি, শিট লাগতো। এখন তো মোবাইলেই সব।
এমন এক বন্ধুর নাম রিফা। পরীক্ষার রুটিন ছাড়া তার পড়া হয়না। আর সেই আগমুহূর্তে রিফা কেবল বন্ধুবান্ধবের ক্লাস নোট আর শিটগুলোতেই চোখ বুলিয়ে যায়। আর কখনো কোনো বিষয়ে আটকে গেলে মোবাইল আর গুগল তো আছেই!
লাইব্রেরী থেকে আমাদের পড়ালেখা অনেক আগেই ফটোকপি বা শিটে চলে এসেছে। আর এসবের ওপর নির্ভর করেই এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চলছে। বিশেষ করে, কয়েকবছর ধরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নির্ভর করে আসছে ফটোকপির ওপর। তা হতে পারে কোনো বইয়ের গোটা ফটোকপি, বইয়ের কোনো অধ্যায়ের ফটোকপি বা নোট ফটোকপি।
এর পেছনে একটি কারণ, সিলেবাসের অপরিবর্তনশীলতা। দেখা যায়, শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর তৈরি করা এক শিট দিয়েই বছরের পর বছর পরীক্ষা চলছে। যেহেতু পরীক্ষার প্রশ্নগুলোতেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিগত বছরের প্রশ্নগুলো থেকেই করা হয় তাই এক নোট দিয়েই পার হওয়া যায়।
গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের মানবসম্পদ বিভাগের সামিরুন গতবছর স্নাতক শেষ করেন। তিনি বলেন, 'আমরা পরীক্ষার আগ দিয়ে বিগত বছরের প্রশ্ন যোগাড় করতাম। লাস্ট দুই-তিন বছরের প্রশ্নই আসতো ঘুরেফিরে। বেশিরভাগ শিক্ষকই প্রিভিয়াস ইয়ারের প্রশ্ন থেকে প্রশ্ন করে থাকেন। এক্সেপশনালও আছে। ফলে বই কিনতাম কম। আপুদের নোটই পড়া হতো বেশি।' রাজধানীর ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে সদ্য বিবিএ করেছেন মাহফুজা। তিনি জানান, আমরা তিনবোনই ইস্টওয়েস্ট থেকে বিবিএ করেছি। আমি '২১ এ বের হলাম। আমার বড় বোন আরও তিন বছর আগে বেরোয়। এখন এইট সেমেস্টারে আছে ছোটো বোন। তিনজনের সিলেবাসে খুব একটা পরিবর্তন নেই। কিছু পুরোনো বই আর স্লাইড পড়েই পরীক্ষা দিয়েছি।'
বইয়ের পেছনে টাকা ব্যয় করতে অনাগ্রহ
সিলেবাস ছাড়াও আর্থিক সুবিধাও এখানে একটি বড় কারণ। দেখা যায়, মূল বইগুলো যে দামে পাওয়া যায়, কপি করে নিলে তার চেয়ে অনেকগুণ কমে পাওয়া যায়। এটি হয় বিশেষত বিদেশি বইগুলোর ক্ষেত্রে। বিদেশি একটি বই যেখানে এক হাজার বা আটশো নয়শো টাকা পড়ে যাচ্ছে, সেখানে ফটোকপি করে নিলে তিনশো-চারশোতেই মিলে যাচ্ছে এসব বই।
এ নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নীলক্ষেতের এক বই ব্যবসায়ী জানান, 'দেহেন এই বইগুলা তো কয়েকমাস পড়ব ছেলেমেয়েরা। এক সেমেস্টার শেষ হইলেই বইগুলো অকেজো হইয়া যায়। তাহলে এত টাকা দিয়া মূল বই কিনা কি পোষাইতে পারব তারা?'
আর মেডিক্যালের বই সবচেয়ে বেশি ফটোকপি বিক্রি হয় বলে জানান দোকানিরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী পান্না। বান্ধবীকে নিয়ে এসেছেন নীলক্ষেতে বই কিনতে। দোকানদারের সাথে দরদাম চালিয়ে যাচ্ছে দুইবন্ধুই। 'ফটোকপি বই এত দাম কেন মামা? ত্রিশ পিস নিব। কমায়ে রাখেন।'
ফটোকপি বই নিলেও পান্না জানান, 'সবসময় ফটোকপি নিইনা। যেসব বই ভবিষ্যতেও কাজে লাগবে, এমন বই আমি ফটোকপি করে নিইনা। বিশেষ করে, আমি যেই ডিপার্টমেন্টে যাব, সে-ই ডিপার্টমেন্টের বইগুলো আমি মূল বই-ই নিই।'
পান্নার একদম বিপরীত সুরে কথা বলেন আদিব। কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ থেকে গত বছর এমবিবিএস পাশ করেন তিনি। আদিব জানান, 'অরিজিনাল বই পড়ে মজা অনেক। কিন্তু অনেক দাম। এই বই তো পরীক্ষার পরই শেষ। যাদের টাকা আছে, তারা কেনে। আমি ফটোকপিই পড়ছি শুধু।'
কথা শেষ করতে করতেই তার আইফোনে একটি কল আসে। কল রিসিভ করে দোকান থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
সবসময় সামর্থ্য নয়, ইচ্ছেও একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় মাঝে মাঝে।
রেজাউল ইসলাম আখন্দ, সেই '৮৪ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিয়ান পদে দায়িত্বরত। তিনি বলেন, 'ফটোকপি আমি শুরু থেকেই দেখছি। টিচাররা কোনো বইয়ের চ্যাপ্টার বলে দিলে স্টুডেন্টরা সে চ্যাপ্টার ফটোকপি করে এনে পড়ে। চ্যাপ্টার বেশি থাকলে কখনো পুরো বই-ই করায় আবার। সেটাও টিচাররাই বলে দেয়।'
'তবে, '৮৮-'৯৪ সালের মাঝের সময়টায় দেখেছি অর্ধেক ছাত্ররাই পুরো বই কিনতো। লাইব্রেরীতে এসে বই পড়তো। প্রতিদিন দুশো-তিনশো বই ইস্যু করতে হতো। এক কাপ চা খাওয়ার সময়ও পেতাম না আমি।'
"১৯৯৫-৯৬ সালটা আবার ছিল ফটোকপির যুগ। তখন বই পড়ার অভ্যাস ছিল। শিট নিলেও বই পড়ার একটা ট্রেন্ড ছিল। এখন সেটা নাই। তারা ভাবে, এই একটা পরীক্ষার জন্য শিট বই কিনে কী লাভ। যদি মোবাইলে ছবি তুলে বা নেট ঘেঁটেই পড়া যায়। বিশেষ করে, করোনার পর সব অনলাইনে চলে গিয়ে ছেলেমেয়েরাও মোবাইলে, ল্যাপটপে পড়াশোনা করে", যোগ করেন তিনি।
বৃহত্তর প্রাচীন বইয়ের মার্কেট বাংলাবাজারেও ফটোকপি বই আসে নীলক্ষেত থেকে
নীলক্ষেতে এখন শত শত ফটোকপি, কম্পিউটারের দোকান। রাজধানীর এই জায়গাটিতে শুধু পাশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন কলেজ, বুয়েট, মেডিক্যাল ছাত্র-ছাত্রীরাই নয়, ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে থেকেও প্রচুর অর্ডার আসে ফটোকপি বইয়ের। এমনকি বাংলাবাজার কিংবা সারা দেশে এই ফটোকপি বই সরবরাহ করে থাকে মূলত নীলক্ষেত। বাংলাবাজারে কয়েকটি কম্পিউটার দোকানে ডুপ্লিকেট বই বানানো হয়, তবে সেখানে দেশীয় প্রকাশনার কাজই চলে বেশি। অপরদিকে পল্টন বা টুকটাক বিভিন্ন প্রেসে বই প্রিন্ট করানো হলেও, নীলক্ষেতেই এর প্রধান বাজার।
পনেরো বছর ধরে ফটোকপি আর বাইন্ডিংয়ের কাজ করে আসছেন মো ইউসুফ। আগে ইংলিশ মিডিয়াম, কওমি মাদ্রাসার বইগুলো করতেন বেশি। এখন বিবিএ, এমবিএ, মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বই ফটোকপি করে থাকেন। সেই সাথে থাকে বিভিন্ন সরকারি অফিসের বই, সামরিক বাহিনীর বইও। গতমাসেও বগুড়ায় সরকারি আজিজুল হক কলেজে বই পাঠিয়েছেন বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে বই পাঠিয়েছেন মোট পাঁচশো কপি।
নীলক্ষেতের দোকানগুলোর অনেকগুলোরই ফেসবুক পেজ থাকায় ঢাকার বাইরে থেকে অর্ডারগুলো আসে এবং সে অনুযায়ী তারা সরবরাহ করে।
মেডিক্যালের জন্য ইউনাইটেড, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিবিএ, এমবিএর জন্য ব্রাদার্স...
বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন বইয়ের জন্যও নীলক্ষেতের কিছু কিছু দোকান বেশি পরিচিত। যেমন মেডিক্যালের জন্য ইউনাইটেড, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিবিএ, এমবিএর জন্য ব্রাদার্স, আইএলটিএস, টোফেলের জন্য ল্যাঙ্গুয়েজ পাবলিকেশন, বিদেশি ফটোকপি সাহিত্যের জন্য মলি এবং মেমরি পাবলিকেশনগুলো পরিচিত এখন নিয়মিত পাঠকদের জন্য। তবে ডুপ্লিকেট বইতেও অতিরিক্ত দাম রাখে তারা, এমন অভিযোগও আছে।
শুরুর দিকে বই ফটোকপি করতে শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের দোকান বা প্রেসগুলোতেই ঢুঁ মারতো। কিন্তু নীলক্ষেতের বই ব্যবসায়ীরা পাঠকদের চাহিদা বুঝতে পেরে এখন নিজেরাই কয়েকশ কপি করিয়ে রাখেন। ফলে, দোকানগুলোতে এখন প্রায় ৮০% বই-ই থাকে ডুপ্লিকেট বই, জানান ব্যবসায়ীরা। কেউ বই কিনতে এলে, তাই আগে জিজ্ঞেস করে নেন, কপি না মেইন বই?
নীলক্ষেতে গত দশবছর আগেও এত এত ফটোকপির দোকান ছিল না। এখন পুরো নীলক্ষেত জুড়েই প্রায় পাঁচশো ছয়শোরও বেশি হবে এই কম্পিউটার-ফটোকপির দোকান সংখ্যা। আর এই দোকানগুলোতে দৈনিক প্রায় লাখখানেক ফটোকপি হচ্ছে বলে জানান, বিউটি ফটোস্ট্যাটের রফিকুল ইসলাম। তবে এটি একেবারেই তার নিজস্ব হিসেব মতে।
শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটও এই ফটোকপি আর প্রিন্টের বাজার গড়ে উঠেছে। মা মনি ফটোস্ট্যাটের কর্ণধার বোরহানউদ্দীন জানান, বই, নোট ফটোকপি প্রিন্ট সব মিলিয়ে প্রায় এক লাখ টাকার ব্যবসা হয় এখানে। তবে, মেডিক্যালের ছাত্র-ছাত্রীদেরই সেখানে যাতায়াত বেশি।
প্রিন্টের বই এখন বেশি চলে
ফটোকপির পাশাপাশি প্রিন্ট করা বইয়ের বাজারও কিন্তু এখন বেশ জমজমাট। অনলাইনেই কোনো বই পেয়ে গেলে হোক দেশী বা বিদেশী, দোকান থেকে প্রিন্ট করে পড়ার দিকে ঝুঁকছে এখন শিক্ষার্থীরা, বলে জানান সিরাজি বুকসের কর্মচারী ইসমাইল হোসেন। প্রিন্টের বইগুলো ছাপা হয় প্রেসে, যে কারণে কাগজও হয় নিম্নমানের। তাছাড়া প্রেসে যেহেতু একসাথে অনেক বই ছাপা হয় তাই প্রিন্টের চেয়ে দামও কষতে হয় কম এতে। তাই শিক্ষার্থীরা মেইন বই থেকে ফটোকপি, এবং বর্তমানে প্রিন্টের বই-ই কিনে থাকেন।
শরীফুর রহমান, পড়ছেন রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকায় এসেছেন রোজার ছুটিতে। শরীফ বলেন, 'ফটোকপি করে পড়তাম প্রথম দুই বছর। এখন করোনার পর বই সরাসরি দোকানে নিয়ে গিয়ে প্রিন্ট দিই। যে কয়টা বই লাগবে সেই কয়টা প্রিন্ট। কিন্তু সবাই অবশ্য এত কেনে না। আমরা বন্ধুরাই একে অপরের বই শেয়ার করে পড়ি। এতে টাকা বাঁচে অনেকটাই।'
রাজধানীর আরেকটি স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ম সিমেস্টারের ছাত্রী রায়া। তিনি বলেন, 'নীলক্ষেতের পুরোনো বই কিনি বেশি। বেশি দাম হলে ফটোকপিও কিনি। তবে পিডিএফটাই পড়া হয় বেশি।'
এই ফটোকপি বা প্রিন্টের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রকাশক ও লেখকরা। যদিও আমাদের দেশীয় বই ফটোকপি করার কোনো বিধান নেই এখানে। কেবল বিদেশী লেখকদের বই-ই ফটোকপি করার অনুমতি আছে। কিন্তু আদতে বাদ যায় না দেশীয় বইও। এজন্য প্রায়ই জরিমানা গুনতে হয় এই নীলক্ষেতের দোকানিদের। কিন্তু তারপরও আড়ালে-আবডালে দেশীয় বইগুলো দেদারসে বিক্রি হচ্ছে ফটোকপি বা প্রিন্ট আকারে।
শম্ভুনাথ ঘোষের বাংলাবাজারের নিজস্ব প্রকাশনীর ব্যবসা প্রায় ৩০ বছর ধরে। তার প্রকাশনীর নাম ঢাকেশ্বরী লাইব্রেরী। সাহিত্য, ইতিহাস, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয়ের ওপর বিভিন্ন বই প্রকাশনা করে আসছেন তিনি। হাতে দিলীপ কুমার সাহার 'দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস' বইটা দেখিয়ে বললেন, 'আমার পাবলিকেশনের এই বইটা আমি গিয়ে দেখি নীলক্ষেতে বিক্রি হচ্ছে একশো টাকা কমে। একদম একইরকম কভার, একইরকম সব। কিন্তু আমি তো দেখেই বুঝতে পারছি পার্থক্যটা। আমার ব্যবসায় লসগুলো এভাবেই হচ্ছে।'
তবে লেখকরা নিজেরাও কখনো বাধ্য হয়ে ফটোকপি বই কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। পেঙ্গুইন বুকের ইসলাম বলেন, 'আমার এখানে সলিমুল্লাহ খান স্যারও আসেন। তিনি বেশিরভাগ সময় পুরোনো অরিজিনাল বই-ই কেনেন। একান্ত আর কোথাও মেইন বই না পেলে তখন কপি বই নেন।'
'আমার দোকান আজ ৩০-৩৫ বছর ধরে। সলিমুল্লাহ স্যার ছাড়াও আমার কাছে শিক্ষক সমাজের অনেকেই আসে। তারা যে সবসময় অরিজিনালই খোঁজে এমন না। দামে কম পেলে কপিও কেনেন।'
তবে এ নিয়ে সলিমুল্লাহ খানের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি অনাগ্রহ দেখান।
আগে মানুষ লাইব্রেরীতে বসে বসে বই পড়তো। প্রযুক্তির আবির্ভাব এবং অনলাইনের এ যুগে ফটোকপি, প্রিন্ট এখন যেন লাইব্রেরীর বিকল্প হয়ে উঠছে। সাথে তরুণদের জন্য তো আছেই অনলাইন জগত। প্রথমে মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং বা ইংরেজি মিডিয়ামের ছাত্ররাই ছিল এই বাজারের একচ্ছত্র ক্রেতা। এখন ভর্তি পরীক্ষা, বিসিএস, চাকরির পরীক্ষা, মাদ্রাসা, ইংরেজি মিডিয়াম, সামরিক বাহিনী, বিশ্ববিদ্যালয়ের বই, মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং কোনো ক্ষেত্রই বাদ নেই।
এতে ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিক সাশ্রয় হলেও, আদতে মানুষের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে। যেভাবে সহজ ও শর্টকাট উপায়ে বই কেনা যায়, সেভাবে শর্টকাট উপায়ে পড়াশোনাও হচ্ছে।