৬০ ফাঁসির জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া: ৪৪ বছর কারাভোগের পর জীবন যেমন যাচ্ছে
ঘামে ভিজে গিয়েছিল শাহজাহানের পুরো মুখ। নিজের এক রুমের বাড়িতে গিয়ে বিছানায় বসে কামালকে (ছদ্মনাম) স্ট্যান্ড ফ্যানটি চালিয়ে দিতে বললেন শহজাহান।
অনেকটা ক্ষমাপ্রার্থনার ভঙ্গিতেই বললেন, 'এখন অল্প হাঁটাহাঁটিতেই আমার মাথা ঘোরায়।'
সম্প্রতি তিনি ডাক্তার দেখানো বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ হিসেবে জানালেন, 'শেষবার যখন ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম, তারা আমার কাছ থেকে ভিজিটের জন্য ৪০০ টাকা আর ওষুধের জন্য ৬০ টাকা রেখেছে। এরপরে আবার দামি কয়েকটা টেস্টের পর ফলো-আপ চেকআপের কথা বলেছে। আমি এত টাকা কোথায় পাব?'
শাহজাহানের হার্টের সমস্যা, 'রক্তচাপ' ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা রয়েছে। তিনি ইনহেলার ব্যবহার করেন, যা তার রুমে টেবিলের ওপর রাখা ছিল। ইনহেলারের পাশে ছিল সিগারেটের প্যাকেট, আর তার পাশে দুটি মোবাইল ফোন।
'এগুলো কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, কামাল আমাকে শিখিয়ে দিয়েছে,' হাসিমুখে বললেন শাহজাহান।
স্মার্টফোনের ব্যবহার শাহজাহানের কাছে একেবারেই নতুন। আসলে মোবাইল ফোনের ব্যবহারই তার কাছে নতুন। এ বছরের জুনে পাওয়া প্রথম নকিয়া ফোন সেটটির দিকে ইঙ্গিত করে শাহজাহান বললেন, 'এর কদিন পর এটা (স্মার্টফোনটি দেখিয়ে) পেয়েছি। কামাল এখনও আমাকে শেখাচ্ছে,' হাসতে হাসতে বললেন তিনি।
৪৪ বছর কারাভোগের পর চলতি বছরের ১৮ জুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান শাহজাহান ভূঁইয়া। শুধু নতুন প্রযুক্তি নয়, অজানা এক জীবনের পথে হেঁটে চলেছেন শাহজাহান।
তার ভাষায়, 'কারাগার আমার বাড়ি হয়ে উঠেছিল।' কারণ জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েক দশক তিনি কাটিয়েছেন কারাগারে। সেখানকার লোকজনের সঙ্গে গড়ে উঠেছিল তার পরিচিতি; তৈরি হয়েছিল অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী।
কারাগারে গড়ে ওঠা শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাধ্যমেই শাহজাহান এখন মাসে সাড়ে ৫ হাজার টাকা ভাড়ায় রান্নাঘর ও বাথরুমসহ এক বেডরুমের একটি বাসা নিয়েছেন। সত্তরের কোথায় পা দেওয়া শাহজাহান বিয়ে করেননি কখনও।
'এই ফোনগুলোও তারাই (শুভাকাঙ্ক্ষী) দিয়েছেন। তবে তিন মাস হয়ে গেছে, আর কতদিনই বা ওদের কাছে সাহায্য চাইতে পারি বা ওদের ওপর নির্ভর করতে পারি?' প্রশ্ন করেন তিনি।
মুক্তি পাওয়ার পর নিজের জন্ম সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রক্রিয়াকরণও সংগ্রহ করেন শাহজাহান। কামালকে তিনি বললেন, "তুমি কি ড্রয়ার থেকে ওগুলো নিয়ে আসবে?" কাগজগুলো আনার পর মনে হলো এগুলোই এখন তার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ; এই কাগজের টুকরোগুলোতেই লেখা তার পরিচয়।
কথা বলতে বলতে তাকিয়ে রইলেন শাহজাহান। তিনি চোখে চোখ রেখে কোনো দ্বিধা, অস্থিরতা ছাড়াই কথা বলে যাচ্ছিলেন। অত্যন্ত শান্ত, সুরক্ষিত এবং মর্মস্পর্শীভাবে বলেছিলেন তিনি।
তার কণ্ঠস্বর ছিল স্পষ্ট, আবার কিছু মুহূর্তে কঠোর। গরম তেলের কড়াইয়ে পেঁয়াজ ভাজার শব্দে হঠাৎই ভেঙে গেল সেই নীরবতা। দুপুরের খাবার রান্না করছে কামাল। সেই বুধবারের জন্য সে করলা ও ডিম ভাজির আয়োজন করেছিল।
শাহজাহান বললেন, "আমি এই দেশে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কারাভোগ করেছি; এখন আমার করার কিছুই নেই। কারাগারে অন্তত আমাকে আমার খাওয়া-দাওয়ার খরচ নিয়ে চিন্তা করতে হতো না।"
"এমনকি, এটি একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা যে, একজন বন্দী ধনী হতে পারেন। অবশ্যই, দ্রুত টাকা বানানোর উপায় আছে, কিন্তু 'ধনী' হওয়ার উপায় নেই- এই জীবন সম্পর্কে অনেকেরই অনেক ভুল ধারণা রয়েছে," যোগ করেন তিনি।
শাহজাহান বলেন, এখন তিনি বাইরে গিয়ে টাকার জন্য দিনমজুরের কাজ নিতে পারবেন না, "কারণ মানুষ আমাকে চিনবে। এমন সময়ও ছিল যখন মানুষ জড়ো হয়ে আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চাইতো। বিষয়টি আমার মোটেও পছন্দ নয়। আমি আর জল্লাদ শাহজাহান নই, আমি এখন শুধু শাহজাহান," যোগ করেন তিনি।
নিঃসঙ্গ এই মানুষটির বিষণ্ণতা ছিল খুব স্পষ্ট। শুধু শাহজাহানের কণ্ঠে নয়, যেন বাতাসও ভারী হয়ে উঠছিল সেই বিষণ্ণতায়।
"আমি যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছি, তাদের মধ্যে কয়েকজন ছিলেন বেশ বড় ব্যক্তিত্ব। তাদের আশেপাশে মানুষ আছে আমি নিশ্চিত," বলেন শাহজাহান। মনে কিছুটা ভয় এবং নিরাপত্তার উদ্বেগ নিয়েই কথাগুলো বলছিলেন তিনি।
একজন জল্লাদের গল্প
শাহজাহান যখন কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন, তখন যে তাকে এত ধুমধাম এবং আড়ম্বরভাবে স্বাগত জানানো হবে তা তিনি মোটেও আশা করেননি। কিন্তু তিনি তো আসলে জল্লাদ শাহজাহান নামেই বিশ্বের কাছে পরিচিত ছিলেন।
সাম্প্রতিক ওই বুধবারে শাহজাহান আমাদের বললেন, তিনি প্রধান জল্লাদ হিসাবে ৬০টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। এই পদের দায়িত্ব তিনি পালন করে আসছিলেন সেই ২০০১ সাল থেকে। কিছু ফাঁসি তাকে কার্যকর করতে হয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে। শাহজাহানের ভাষায়, "তারা আমাকে সেই কারাগারে নিয়ে যেতো। পুরো যাত্রায় (সামনে-পিছনে, প্রোটোকল) প্রায় ১০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতো।"
ওই ৬০ ফাঁসির আসামির মধ্যে ছিলেন বাংলা ভাই, যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মতো দণ্ডিত ব্যক্তিরা।
শাহজাহান বলেন, "প্রতিবারই ফাঁসি কার্যকরের সময় নির্দিষ্ট সংখ্যক আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা- ওসি, এনএসআই, আইজি, ডিআইজি এবং অন্যান্যরা- এবং একটি মেডিকেল টিম উপস্থিত থাকতো; এবং শুধু ফাঁসি কার্যকর করতেই প্রায় ৬-৮ জন লোক দরকার হতো।"
"আমি জানি যে, ফাঁসির আদেশ রাষ্ট্র দেয়। আমি কোনো ভুল করছি না। শুধু একটি আদেশ পালন করছি মাত্র। (আমার মধ্যে) কোনো অপরাধবোধ ছিল না। কিন্তু যেই মুহূর্তে দেহ থেকে প্রাণ বের হয়েছে, প্রতিবারই আমি কষ্ট পেয়েছি। যদিও তা অল্প সময়ের জন্য," যোগ করেন তিনি।
তিনি জানান, মানুষের জীবন নেওয়ার মতো এই ভারী বেদনাবোধ দমিয়ে রাখতে আমি প্রায়ই অ্যালকোহল এবং গাঁজা সেবন করতাম। এগুলো আমাকে ঘুমোতে সাহায্য করত; এসব চিন্তা থেকে দূরে সরে আমি ঘুমোতে পারতাম; আমি অনেক ঘুমোতাম, আমার মনে আছে।"
২০০১ সালের আগে, ১৯৮৮ সাল থেকে সহকারী জল্লাদ হিসেবে কাজ শুরু করেন শাহজাহান। তখন তার বয়স ৩০ এর কিছু বেশি।
"আমি কৌতূহলী ছিলাম। আমি তখনকার জল্লাদের কাছে আমার জায়গা করে নিয়েছিলাম এবং তাদের সাথে থাকতে তাদেরকে রাজি করিয়েছিলাম। এরপর ধীরে ধীরে আমি (সহকারী) জল্লাদ হিসেবে কাজ শুরু করলাম," যোগ করেন তিনি।
১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি একজন আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত বন্দীকে তার সেলে নিয়ে যান।
"তার জন্য আমার খারাপ লেগেছিল। আমি তাকে গোসল করাতে এবং খাওয়ানোর জন্য (সামান্য নগদ অর্থের বিনিময়ে) আরেকজন বন্দীকে বলেছিলাম," স্মরণ করেন শাহজাহান।
জীবনের শেষ তিনটি বছর শাহজাহানের তত্ত্বাবধানেই অতিবাহিত করেন সেই ব্যক্তি। স্বাস্থ্যগত জটিলতায় মৃত্যু হয় সেই মুসলিম পন্ডিতের। "পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। উনি আমাকে বলেছিলেন প্রতিটি ফাঁসির আগে ওযু করে নামাজ পড়ে নিতে। প্রতিবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে তার এই কথা আমি স্মরণ করতাম।"
এমন কখনোই হয়নি যে, ফাঁসির জন্য অপেক্ষমান আসামি উত্তেজিত হয়ে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। "তারা জানতেন, এটি তাদের অন্তিম মুহূর্ত। কখনো তাদের মধ্যে শঙ্কা বা উত্তেজনা লক্ষ্য করলে, আমরা (জল্লাদরা) তাদের সূরা পড়তে বলতাম।"
"তাছাড়া সেলে আমরা যখন হাতকড়া এবং শেকলসহ তাদের কালো কাপড় পরিয়ে দেই- এরপরে তো আর বেশি কিছু থাকেনা- তখন শুধুই শান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া।"
২০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে যায়। এরপর একজন ডাক্তার নাড়ি পরীক্ষা করেন; ঘাড়ের পেছনে চামড়া কেটে মূল স্নায়ুটি বিচ্ছিন্ন করেন। এতে নিশ্চিত হওয়া যায়, সে দেহে আর প্রাণ নেই।"
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৬০তম বারের মতো ফাঁসিকাষ্ঠের লিভার টানেন শাহজাহান।
১৯৭৯ সালে ডাকাতি ও হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে যান তিনি। "হ্যাঁ, আমি অপরাধ করেছি। দুই-তিনজনের জীবনও গেছে হয়তো। তবে যে খুনের দায়ে আমাকে জেলে ঢোকানো হয়, সেটি আমার অপরাধ ছিল না। সেই মামলায় আমি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলাম, কারণ বয়সের দিক দিয়ে আমি বড় ছিলাম। অথচ প্রধান অপরাধী কম সাজা পেয়ে পার পেয়ে যায়।"
"রায়ের সময় মনে আছে আমি ভাবছিলাম যে, আমার জন্য কেউ এগিয়ে আসবে না।"
'যে পিতা আমায় ঘৃণা করেন'
শাহজাহান ঘর ছাড়েন, তার বয়স যখন বিশের কোঠায়। "আমি খারাপ লোকজনের সাথে চলতে শুরু করি। আমার মনে হয় প্রতিটি পাড়ায়ই এমন মানুষ থাকে, যারা শুধু অন্যের খারাপ চায়। আর আমি তাদের দলেই ভিড়ে গেছিলাম।"
মা-বাবা ছাড়াও শাহজাহানের তিনটি বোন ছিল। বয়সে তরুণ শাহজাহানের একেকটি অপকর্ম কানে আসতে লাগল, আর পরিবারের সবাই শাহজাহানকে ঘৃণা করতে লাগলো।
"আমার বাবা আমাকে দেখতে পারতেন না, কথাও বলতেন না। মাঝে মাঝে মাকে দেখতে যেতাম। তিনি বাড়িতে গোপনে আমার জন্য গরম গরম খাবার তৈরি করে রাখতেন। মনে পড়ে মাকে আমি জিজ্ঞেস করতাম, "তোমার কাছে কি টাকা আছে", ''সবকিছু কি ঠিক আছে।"
"মা বলতেন, আমি যেন শুধরে যাই।"
জেলে ঢোকার পর শুধু বড় বোনই শাহজাহানের সাথে কয়েকবার দেখা করতে এসেছিলেন। "শুরুর দিককার বছরগুলোতে, ৩-৪বারের মতো হয়তো এসেছিলেন।"
সাজা শুরুর প্রায় পাঁচ বছর পর শাহজাহানের বাবা মারা যান, দশ বছর পর গত হন মা।
"আমার দুই বোনও মারা গেছে, সবচেয়ে ছোটটি প্রায় ১৫ বছর আগে এবং মেঝ বোন ৬-৭ বছর আগে।"
তিনি কারও জানাজাতেই উপস্থিত থাকতে পারেন নি। "আমি আমার বাবা-মায়ের মৃত্যুর কথাও শুনেছি অনেক বছর পরে, আরেক বন্দীর মুখে।"
জেল থেকে বেরোনোর পর বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করতে গেছিলেন? "হ্যা, গিয়েছি। আমার বোনকেও দেখতে গিয়েছিলাম।"
শাহজাহানের বোনের বয়স এখন ৯০ এর ঊর্ধ্বে; তার রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের মধ্যে তিনিই একমাত্র বেঁচে আছেন।
"গ্রামের বাড়িতে আমার শৈশবের তিন বন্ধুর সাথেও দেখা হয়েছিল", বললেন শাহজাহান। ফেলে আসা দিনের স্মৃতি এই সময়েই যেন সবচেয়ে বেশি তাজা হয়ে ধরা দেয় তার কাছে।
"আমরা একসাথে বসে কথা বলছিলাম। পাশেই বাচ্চাদের ফুটবল খেলা দেখছিলাম। ভাবছিলাম, এতোটা সময় কোন দিক দিয়ে কেটে গেল?"
জীবন এখন যেমন
"আমি এতটুকু বলতে পারি যে, কারাগারে আমার পুনর্জন্ম হয়েছে। আমি নিজেকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি প্রয়োজনে নিজের জীবন নিজে দেবো, তবু কখনো পুরনো পথে ফিরে যাব না", বলেন শাহজাহান।
জেল থেকে সাথে করে কী নিয়ে এসেছেন?
"ফাঁসের জন্য ব্যবহৃত দড়ির একটা টুকরো", উত্তর দেন শহজাহান; হয়তো একটি জীবন বেঁচে যাওয়ার স্মারক।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তির পর প্রথমে তিনি একজন শুভাকাঙ্ক্ষীর বাড়িতে যান; সেখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে আসার পর বর্তমান এক রুমের বাসাটিতে থিতু হয়েছেন তিনি।
এরপর সব চুপ…শুধু রয়ে গেলেন শাহজাহান, ফোনের অপর প্রান্তে কারো গলার স্বর, কামাল (এক শুভাকাঙ্ক্ষীর আত্মীয় যে ঘর পরিষ্কারে সাহায্য করে এবং অল্প কিছু টাকায় তার জন্য রান্না করে), এক বৃদ্ধ বোন, এবং ভাগ্নে (যার সাথে কালেভদ্রে দেখা হয়) আর শাহজাহানের একার ভাবনা।
কারাগারের লাইব্রেরিতে নিয়মিত আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকা শাহজাহান কামালকে তার স্কুলের সব বিষয় পড়িয়ে থাকেন।
"ও বাইরে যেতে চায় না। সারাদিন ফোনের মধ্যে ঢুকে থাকে।"
আপনি নিজে কি বাইরে গেছেন? "না, যেমনটি বলেছি, আমি কারো মনোযোগ পছন্দ করিনা। জেল থেকে বেরোনোর পর এখন পর্যন্ত আমি পার্কেও যাইনি। এক বন্ধুর বাসায় গেছি কয়েকবার, এখন সেটাও বন্ধ করে দিয়েছি।"
আবারও বিষাদ ছেয়ে গেল-এবার আগের চেয়েও গভীর।
"আমি সরকারের সহায়তার জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু এখনও কোনো সাড়া পাইনি। জেলে থাকতে যেসব যোগাযোগ তৈরি করি, সেখানেও সাহায্যের জন্য চেয়ে চেয়ে আমি ক্লান্ত। অনেকেই আছেন, যারা আমাকে সহায়তা করতে চান; কিন্তু আমি জানি তারা তাদের জীবন, চাকরি-বাকরি নিয়ে ব্যস্ত। আমি তাদের কাছে কতবার চাইতে পারি?" বলেন শাহজাহান।