গভীর রাতে যে পাঁচ জায়গায় খাবারের অর্ডার দিতে পারবেন
রাত বাজে চারটা, চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজের প্রিয় ফুটবল ক্লাবের খেলা দেখা শেষ হয়েছে মাত্র; এমন সময় পেটের মধ্যে খিদেটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো, কি করবেন? নিশ্চয়ই ইচ্ছে করবে ঝটপট বাইরের কোনো রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার অর্ডার করে ফেলতে!
এই পরিস্থিতি যদি তিন বছর আগে হতো, তাহলে ঢাকাবাসীর হাতে খিদে পেটে নিয়েই ঘুমিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। কিন্তু এখন দিন বদলে গেছে। বর্তমানে শহরজুড়ে বেশকিছু রেস্টুরেন্ট রাতভর খাবার ডেলিভারি সেবা দিয়ে থাকে তাদের ক্রেতাদের। এছাড়া কিছু ক্লাউড কিচেনও আপনার শেষরাতের জেগে ওঠা ক্ষুধা নিবারণ করতে সাহায্য করবে।
তাই আপনি যদি হন একজন রাতজাগা পাখি এবং হুটহাট খিদে পাওয়াদের দলে, তাহলে আজকের লেখা আপনার জন্যেই।
কারণ এই তালিকায় আপনি জানতে পারবেন শহরে সারা রাত খাবার ডেলিভারি সেবায় নিয়োজিত কিছু রেস্টুরেন্টের নাম, তাদের খাবারের মান ও দাম এবং কিভাবে অর্ডার করতে হবে তার বিস্তারিত।
৫. গ্রাব'স
রাতবিরেতে খাবার অর্ডারের জন্য চমৎকার একটি জায়গা গ্রাব'স। গ্রাহকের মাত্র একটি ফোনকলেই তারা অর্ডার নিয়ে পৌঁছে দিবে খাবার। পিজ্জা, পাস্তা, এমনকি সটেড ভেজিটেবলস ও ম্যাশড পটেটোসহ রাস্টিক চিকেনের আইটেমও রয়েছে তাদের।
পিজ্জা তৈরিতে ইতালিয়ান পিজ্জা-মেকিং ওভেন ব্যবহার করে রেস্টুরেন্টটি, ফলে পিজ্জার ক্রাস্ট থাকে মুচমুচে। পুরো ঢাকাজুড়েই রাতে খাবার ডেলিভারি দেয় গ্রাব'স। রাস্টিক চিকেন বাদে অন্যান্য আইটেমের ক্ষেত্রে তাহলে খুব কম সময়ের মধ্যে ডেলিভারি পেয়ে যান গ্রাহকেরা।
রাস্টিক চিকেনের দাম অন্যান্য আইটেমের তুলনায় বেশি। গ্রাব'স এর খাবার সামান্য ব্যয়বহুল হলেও, মানসম্মত খাবারের জন্য শীর্ষ তালিকায় এর নামই থাকবে।
৪. ন্যাক
কম পয়সায় ভালো খাবারের সন্ধান চাইলে ন্যাক একটি ভালো অপশন। মজাদার ফ্রায়েড চিকেন ও চিকেন উইংস পাওয়া যাবে এখানে। এছাড়া বার্গার, স্যান্ডউইচ ও শর্মাও পাওয়া যাবে।
ন্যাকের উল্লেখযোগ্য আইটেম হলো তাদের ব্রেকফাস্ট প্ল্যাটার। স্কাম্বলড ইগ, ফ্রেঞ্চ টোস্ট, বিফ বেকন ও চিকেন কোল্ড কাট স্যান্ডউইচের সমন্বয়ে তৈরি এই প্ল্যাটারের দাম ৬০০ টাকা।
ন্যাকেও আপনি কল দিয়েই খাবার অর্ডার করতে পারবেন। আর যদি আপনার মিষ্টিমুখ করার অভ্যাস থাকে তাহলে তাদের বিস্কুট এবং ক্রিম ডিলাইটের মতো ডেজার্ট খেয়ে দেখতে পারেন।
৩. মাঞ্চিস
মাঞ্চিস এমন একটি ওয়েবসাইট যা রাতভর আপনাকে খাবার ডেলিভারি দিবে। খাবার, স্ন্যাকস থেকে শুরু করে মুদি পণ্য বা মাঞ্চিস সবই পাওয়া যাবে এখানে।
এছাড়াও, পিজ্জার জন্য ক্রিস্পি ক্রাস্ট এবং বার্গারের জন্য গ্রিলারসের মতো স্ট্যান্ডআউট রেস্টুরেন্টও আছে। এর বাইরে টেস্টবাড এবং বাটার দ্য বেকারির মতো কিছু দামি রেস্টুরেন্ট আছে যেখানে আপনি ডেজার্ট আইটেম পেতে পারেন।
খাবার ডেলিভারির এই সেবাও ফুডপান্ডার মতো হলেও, এটির কোনো অ্যাপ নেই। রেস্টুরেন্টের ওয়েবসাইটে গেলেই শুধু খাবার অর্ডার করা যাবে। বর্তমানে সব মিলিয়ে তাদের অধীনে ২৫টি রেস্টুরেন্ট আছে যেখানে বিভিন্ন দামের খাবার পাওয়া যায়। শুধুমাত্র ঢাকা শহরের ভেতরেই তারা ডেলিভারি দিয়ে থাকে।
তবে এর একটি নেতিবাচক দিক হলো, এই ২৫টি রেস্টুরেন্ট সবগুলো সবসময় খোলা থাকে না। তাই সবসময় আপনি কাঙ্ক্ষিত খাবারটি খুঁজে নাও পেতে পারেন।
২. বাই হিয়ার নাও
এটিও নির্দিষ্ট জায়গায় স্থির কোনো রেস্টুরেন্ট নয়। বরং অ্যাপের মাধ্যমে ২৪/৭ ঘন্টা খাবার ডেলিভারি সেবা দেয় তারা।
আপনি চাইলে টাইম আউট এবং টোকিও এক্সপ্রেসো থেকে খাবার অর্ডার করতে পারেন। চমৎকার কোনো শেইক পান করতে চাইলে নিতে পারেন মোচালিশিয়াস। কিন্তু রেস্টুরেন্টের প্রধান শেফ জিন পিয়ের ল্যাংলেটের হাতে রান্না করা বিশেষ আইটেমের টানেই মানুষ এখানে ভিড় জমান।
তার রান্না করা কিছু আইটেমের মধ্যে আছে প্রন ঘাম্বাস, সেভেন-গেইন স্যান্ডউইচ এবং বিফ ইনফার্নো। এসব খাবার দামে সস্তা নয়। তবে এখানকার কম দামি খাবারের মধ্যে আছে মান্দারিন চিকেন, যার দাম ৪৯৫ টাকা এবং সবচেয়ে দামি খাবার প্রন ঘাম্বাসের দাম ৩৫৪০ টাকা।
বলে রাখা ভালো, 'বাই হিয়ার নাও' ঢাকার সব এলাকায় খাবার ডেলিভারি দেয় না।
১. রোম এক্সপ্রেস
সারা রাত খাবার ডেলিভারি দেওয়ার ধারণা প্রথম যে রেস্টুরেন্টটি বের করে, তার নাম রোম এক্সপ্রেস। তারা মূলত পিজ্জা বানানোর দিকে গুরুত্ব দেয় বেশি। পাস্তা এবং গ্রিলড চিকেনও পাওয়া যাবে এখানে।
খাবারের মানের তুলনায় রাতের এসব রেস্টুরেন্টের দাম খানিকটা বেশি। কিন্তু তাদের দ্রুত ডেলিভারি সেবা অবশ্যই চোখে পড়ার মতো। স্রেফ ফোনে কল দিয়ে এবং কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করেও আপনি তাদের কাছে অর্ডার দিতে পারবেন।