আপনি সিঙ্গেল! তবে কী করবেন ভালোবাসা দিবসে?
ভালোবাসা দিবস মানেই প্রেমিক যুগলদের জন্য দারুণ আনন্দময় একটি দিন। কিন্তু মুদ্রার অপর পিঠে অনেক সিঙ্গেলও তো রয়েছে, যারা ভালোবাসার এই দিনে নিজেদের প্রেমহীনতাকে আরও বেশি করে অনুভব করে। কিংবা যাদের সদ্যই বিচ্ছেদ হয়েছে, তাদের জন্যও চারদিকে প্রেমের সমারোহ দেখে অবসাদগ্রস্ত হওয়া বা ফেলে আসা দিনগুলোর কথা ভেবে দুঃখে ভারাক্রান্ত হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
তাহলে এই মানুষগুলো ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে কী করবে? সবাই যখন আনন্দে মেতে থাকবে, তখন তারা কি ঘরের দরজা আটকে নিজেদেরকে বাকি পৃথিবীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখবে? নাকি এমন কিছু করবে, যাতে বাকিদের হাসি-মজা মাটি হয়ে যায়?
দুটোর কোনোটাই বাস্তবসম্মত বা কার্যকর উপায় নয়। তাই চলুন, সিঙ্গেলরা ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে আসলেই করতে পারে, এমন কিছু কাজের কথা জেনে নিই।
খুব স্বাভাবিক একটা দিন কাটান
আশপাশে সবাই বলাবলি করছে এই দিনটা খুব স্পেশালভাবে কাটাতে হবে; এর মানেই এই নয় যে আপনাকে ঠিক তা-ই করতে হবে। আপনি বরং এই দিনটাকে আর দশটা সাধারণ দিনের মতোই কাটান। আপনি যদি নিজের মনকে মানাতে পারেন যে এই দিনটার সাথে সপ্তাহের অন্যান্য দিনের কোনো ফারাক নেই, তাহলেই কিন্তু আপনি নিজের সঙ্গে মানসিক যুদ্ধে অনেকখানি এগিয়ে যাবেন। তখন অনায়াসে নিজের সঙ্গেই 'কোয়ালিটি টাইম' কাটাতে পারবেন। অন্যরা কে কী করছে, তা আপনার আর গায়ে লাগবে না!
সিঙ্গেলস-অনলি ডিনার পার্টি দিন
আপনার যে বন্ধুরা কোনো সম্পর্কে রয়েছে, তাদের তো এই দিনটিকে কেন্দ্র করে নিজেদের প্রেমিক-প্রেমিকাদের সঙ্গে আলাদা পরিকল্পনা থাকবেই। সুতরাং বলাই বাহুল্য, এই দিনে আপনি তাদেরকে পাবেন না। কিন্তু যারা কোনো সম্পর্কে নেই, অর্থাৎ সিঙ্গেল রয়েছে? তারাও তো আপনার মতো একই পথের পথিক! আপনার দুঃখ বা শূন্যতাগুলো তারাও মন থেকে অনুভব করতে পারবে। তাই ভালোবাসা দিবসের রাতটা আপনি কাটাতে পারেন সেইসব বন্ধুদেরই সান্নিধ্যে! এবং অন্য কেউ যদি তেমন উদ্যোগ না নিয়ে থাকে, আপনিই বরং সবাইকে দাওয়াত দিন না একটি সিঙ্গেলস-অনলি ডিনার পার্টিতে!
বাবা-মায়ের জন্য কিছু করুন
অনেকেই তো বলে থাকে, ভালোবাসা দিবস শুধু রোমান্টিক ভালোবাসারই দিন নয়। এই ভালোবাসা হতে পারে সব ধরনের, সব আঙ্গিকের। এমন কথা শুধু নিজের মনকে প্রবোধ দেওয়ার জন্যই না বলে, এটাকে সিরিয়াসলি নিয়ে নিলে কেমন হয়! মনে করুন, আপনার জীবনে ভালোবাসার মতো আর কেউ নেই; আছে শুধু আপনার বাবা-মা। তাহলে তাদের সঙ্গেই এই বিশেষ দিনটা কাটান। তাদের জন্য নিজ হাতে রান্না করুন। গল্প-গুজব করুন। একসঙ্গে সিনেমা দেখুন। কিংবা তাদের নিয়ে কোথাও ঘুরতে যান, ফেরার পথে একসঙ্গে লাঞ্চ বা ডিনার সারুন। এভাবে বাবা-মায়ের মনও ভালো হবে, আর আপনাকেও ভুগতে হবে না একাকীত্বে।
দিনটা কাটান প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে
প্রিয় বন্ধু হলো এমন কেউ, যার কাছে মন উজাড় করে দিয়ে সব কথা বলা যায়। এখন ধরুন, আপনার প্রিয় বন্ধুটিও সিঙ্গেল, এবং তার ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে বিশেষ কারো সঙ্গে প্ল্যান নেই। তাহলে আপনি কেন এই সুযোগের ফায়দা লুটবেন না! দেরি না করে তাকে ফোন দিন, বলুন যে ভালোবাসার দিনটা আপনি কাটাতে চান তার সঙ্গে। তারপর দুজনে মিলে গল্পে গল্পে ফিরে যেতে পারেন নিজেদের ফেলে আসা অতীতে। কিংবা করতে পারেন ভবিষ্যতের কোনো পরিকল্পনা। অথবা অতীত-ভবিষ্যৎ বাদ দিয়ে, চুটিয়ে উপভোগ করতে পারেন স্রেফ বর্তমানটাকে।
দূরে থাকুন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। ভ্যালেন্টাইনস ডে-ই হলো সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সময়। হ্যাপি কাপলদের ছবি দেখে যদি আপনার আসলেই খারাপ লাগে, নিজের একাকীত্ব আপনাকে পোড়ায় বা প্রাক্তনের কথা মনে পড়ে যায়, তাহলে কী দরকার খামোখা নিজে থেকে নিজেকে কষ্ট দেওয়ার! ভ্যালেন্টাইনস ডে-র এই একটা দিন, কিংবা পরের আরও দুই-একদিন, সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরে থাকলে আপনার খুব বেশি লোকসান হবে না। বরং অহেতুক ডিপ্রেশনে ভোগার পরিবর্তে, এই সময়টাতেই হয়তো আপনি করতে পারবেন খুবই প্রোডাক্টিভ কোনো কাজ।
সেই কাজগুলো করুন, যেগুলো আপনার এক্স অপছন্দ করত!
হ্যাঁ, এবারও ভুল পড়েননি আপনি। বরং যাদের সদ্যই ব্রেকআপ হয়েছে, তাদের জন্য মন ভালো করতে এরচেয়ে মোক্ষম অস্ত্র আর কিছু হতেই পারে না! কারণ, একটি সম্পর্কে থাকতে গেলে তো আমাদের অনেক ধরনের কম্প্রোমাইজ করেই চলতে হয়। সঙ্গীর ভালো না লাগার ফলে নিজের পছন্দের বা অভ্যস্ততার অনেক কাজকেই বিদায় বলতে হয়। মন উশখুশ করলেও কাজটা করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে, ভ্যালেন্টাইনস ডে তো একজন সদ্য বিচ্ছেদ হওয়া ব্যক্তির জন্য হতে পারে সেই কাজগুলো করার, এবং তার মাধ্যমে বিচ্ছেদকে উদযাপন করারই দিন। বিশ্বাস হচ্ছে না? নিজেরাই চেষ্টা করে দেখুন!