আমার পরিবারে চারজনের ডেঙ্গু হয়েছে, এর কষ্ট আমি বুঝি: পলক
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, গত কয়েক মাসে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গু রোগে তার নিজের পরিবারের চার সদস্যও আক্রান্ত হয়েছেন।
শনিবার বিকেলে ঢাকায় ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন এন্ড প্ল্যানিং ল্যাব কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমি ছাড়া আমার পরিবারের চারজনের ডেঙ্গু হয়েছে। ডেঙ্গু হলে যে কী কষ্ট তা আমি দেখেছি।”
সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সদের ঈদুল আযহার ছুটি বাতিল করে সরকার। সে সময় হাসপাতালে নিজেদের কর্মঘণ্টার চেয়েও বেশি সময় ধরে নিরলসভাবে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন তারা। মানবসেবায় ব্রত এই পেশাজীবীরা স্থান করে নেন সাধারণ মানুষের হৃদয়ে। তারা প্রশংসা পান সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে। এবার সে দলে যোগ দিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকও।
“আমরা বর্তমানে জাতীয় সমস্যা ডেঙ্গু মোকাবেলা করছি। নয়জন ডাক্তার ডেঙ্গুতে প্রাণ দিয়েছেন। কিন্তু কোনো ডাক্তার বা নার্সের চোখে ভয় নেই।”
ডেঙ্গু মোকাবেলায় চিকিৎসক ও নার্সরা যেভাবে কাজ করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “চিকিৎসকদের পেশা একটি মহৎ পেশা। পাশাপাশি, এটি ‘থ্যাংকলেস’ পেশা । সব সমালোচনা ভুলেই মানুষের জন্য কাজ করতে হবে এখানে।”
সারাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুয়ায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার আগ পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৭৮৮ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ভর্তি হওয়া নতুন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকার রোগী ৩৩১ জন ও ঢাকার বাইরের ৪৫৭ জন।
এ দিন সকাল পর্যন্ত সারা দেশে ৩,৩৭১ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তবে শনিবার সকাল পর্যন্ত সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে নতুন করে ৬০৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৩৩ জন ঢাকার হাসপাতালগুলোতে; বাকি ৩৭৪ জন ঢাকার বাইরের।
ঠিক এক মাস আগে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ছিল অন্যরকম। আগস্টের প্রথম ৫ দিনে হাসপাতালে ভর্তি হন ৯ হাজার ৬ জন। অন্যদিকে, চলতি মাসের প্রথম পাঁচ দিনে ৩ হাজার ২৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
২০১৯ সালের প্রথম দিন থেকে ৫ সেপ্টেম্বর সকাল আটটা পর্যন্ত ৭৪ হাজার ৩৫৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭০ হাজার ৭৯০ জন।
সরকারি হিসাবে ৯৬টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৫৭টি মৃত্যু ডেঙ্গুতে হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
তবে আইইডিসিআরে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু সন্দেহে ১৯২টি মৃত্যুর তথ্য এসেছে।