প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করা উচিত?
শুষ্ক ত্বক কিংবা ক্লান্তি কাটাতে পানি পান করার পরামর্শ হয়ত আপনি বহুবার শুনেছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যত্রতত্র পানি বোতল সঙ্গে রাখার প্রবণতা আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পানি পান করাতে উৎসাহিত করছে।
১৯ শতকের শুরুতে পানি পানের চিত্র ছিল একেবারেই ভিন্ন। ভিনসেন্ট প্রাইসনিজ, যিনি হাইড্রোপ্যাথির প্রতিষ্ঠাতা, একে বলতেন 'ওয়াটার কিউর'। তিনি মন্তব্য করেছিলেন, 'শুধু চরম দারিদ্র্যের শিকার মানুষরাই তৃষ্ণা মেটাতে পানি পান করে।' সেই সময় অনেকেই একবারে আধা পিন্টের বেশি পানি পান করতেন না।
বর্তমানে পরিস্থিতি একেবারেই বদলে গেছে। যুক্তরাজ্যে এখন প্রাপ্তবয়স্করা আগের তুলনায় অনেক বেশি পানি পান করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বোতলজাত পানির বিক্রি সোডার বিক্রিকে ছাড়িয়ে গেছে। স্বাস্থ্য, শক্তি, ত্বকের উজ্জ্বলতা থেকে শুরু করে ওজন কমানো এবং ক্যানসার প্রতিরোধ—এসবের জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পানের বার্তা যেন সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
লন্ডনের পাতাল রেলের যাত্রীদের সাথে পানি বহনের পরামর্শ দেওয়া হয়, স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পানি আনতে উৎসাহিত করা হয়, আর অফিসের মিটিংগুলো যেন পানির জগ ছাড়া অসম্পূর্ণ।
এই পানি পানের প্রবণতার মূল কারণ হলো তথাকথিত '৮x৮ নিয়ম'। এই নিয়মে বলা হয়, প্রতিদিন আটটি ২৪০ মিলিলিটারের গ্লাস, অর্থাৎ প্রায় দুই লিটার পানি পান করা উচিত। এবং এটি অন্যান্য পানীয়ের অতিরিক্ত হিসেবেই ধরা হয়।
তবে এ নিয়মের কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। এমনকি যুক্তরাজ্য বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো সরকারি গাইডলাইনেও এতটা পানি পানের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়নি।
পানি পানের সঠিক পরিমাণ নিয়ে এত বিভ্রান্তির মূল কারণ সম্ভবত কয়েক দশক পুরোনো দুটি নির্দেশনার ভুল ব্যাখ্যা।
১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বোর্ড সুপারিশ করেছিল যে, একজন প্রাপ্তবয়স্কের প্রতি ক্যালরি খাবারের জন্য এক মিলিলিটার তরল গ্রহণ করা উচিত। অর্থাৎ, ২,০০০ ক্যালরি ডায়েট অনুসরণকারী নারীদের জন্য প্রায় দুই লিটার এবং ২,৫০০ ক্যালরি ডায়েট অনুসরণকারী পুরুষদের জন্য আড়াই লিটার।
তবে এটি শুধু পানি নয়; এতে অন্যান্য পানীয়, এমনকি ফল ও সবজিও অন্তর্ভুক্ত, যেগুলোর জলীয় উপাদান প্রায় ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
১৯৭৪ সালে প্রকাশিত নিউট্রিশন ফর গুড হেলথ বইয়ে পুষ্টিবিদ মার্গারেট ম্যাকউলিয়ামস ও ফ্রেডেরিক স্টেয়ার প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পানের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে, তারা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছিলেন যে, এই পরিমাণের মধ্যে ফলমূল ও শাকসবজি, ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়ও অন্তর্ভুক্ত হবে।
হাইড্রেশনের বিজ্ঞান
পানি আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য। এটি শরীরের মোট ওজনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে থাকে। পানি পুষ্টি ও বর্জ্য পরিবহন, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, অস্থিসন্ধিতে লুব্রিকেন্ট হিসেবে কাজ এবং শরীরের রাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলোতে ভূমিকা রাখে।
প্রতিদিন আমরা ঘাম, প্রস্রাব এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীর থেকে নিয়মিত পানি হারাই। তাই শরীরে পর্যাপ্ত পানি বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের মোট পানির ১-২ শতাংশ কমে গেলে পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। যদি এই পরিস্থিতি দ্রুত সামলানো না হয়, তাহলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বিরল ক্ষেত্রে, এমন পরিস্থিতি প্রাণঘাতীও হতে পারে।
তবে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত '৮x৮ নিয়ম' আমাদের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি করেছে যে তৃষ্ণা লাগা মানেই আমরা মারাত্মক পানিশূন্যতায় ভুগছি। অথচ বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের শরীর যখন পানি প্রয়োজন মনে করে, তখনই তা গ্রহণ করাই যথেষ্ট।
টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড এজিং ল্যাবরেটরির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী আরউইন রোজেনবার্গ বলেন, "হাইড্রেশনের নিয়ন্ত্রণ হলো বিবর্তনের সবচেয়ে উন্নত প্রক্রিয়াগুলোর একটি, যা আমাদের পূর্বপুরুষদের সমুদ্র থেকে স্থলে উঠে আসার সময় থেকেই গড়ে উঠেছে। শরীরের প্রয়োজনীয় পানির ভারসাম্য রক্ষায় আমাদের মধ্যে অত্যন্ত জটিল এবং দক্ষ প্রক্রিয়া কাজ করে"।
একটি সুস্থ শরীরে মস্তিষ্ক পানিশূন্যতার প্রথম লক্ষণগুলো শনাক্ত করে এবং তৃষ্ণার অনুভূতি জাগিয়ে পান করার জন্য উদ্দীপিত করে। একইসঙ্গে, এটি একটি হরমোন নিঃসরণ করে যা কিডনিকে নির্দেশ দেয় মূত্রকে ঘন করে পানি সংরক্ষণ করতে।
"আপনি যদি আপনার শরীরের কথা শোনেন, তবে এটি আপনাকে তৃষ্ণার সংকেত দেবে," বলেন কর্টনি কিপস, যিনি ইনস্টিটিউট অব স্পোর্ট, এক্সারসাইজ অ্যান্ড হেলথের স্পোর্টস এবং এক্সারসাইজ মেডিসিনের অধ্যাপক এবং ব্লেনহেইম ও লন্ডন ট্রায়াথলনের মেডিকেল ডিরেক্টর।
তিনি আরও বলেন, "তৃষ্ণা লাগা মানেই দেরি হয়ে গেছে—এ ধরনের ধারণার ভিত্তি হলো, তৃষ্ণাকে শরীরের তরলের ঘাটতির জন্য অসম্পূর্ণ নির্দেশক হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু শরীরের অন্যান্য প্রক্রিয়া যদি এতটা কার্যকর হয়, তাহলে কেন তৃষ্ণার প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ হবে? হাজার বছরের বিবর্তনে এটি চমৎকারভাবে কাজ করেছে।"
পানি ক্যালোরি-মুক্ত হওয়ায় এটি নিঃসন্দেহে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর বিকল্প। তবে চা ও কফির মতো অন্যান্য পানীয়ও হাইড্রেশনে সহায়তা করে। যদিও ক্যাফেইন হালকা ডিউরেটিক প্রভাব ফেলে, গবেষণায় দেখা গেছে চা ও কফি পানিও শরীরের পানি সরবরাহে ভূমিকা রাখে। এমনকি কিছু অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ও হাইড্রেশন বাড়াতে পারে।
বেশি পানি পানের উপকারিতা কি আছে?
শরীর যখন পানির প্রয়োজন জানায়, তার চেয়ে বেশি পানি পান করার বিশেষ কোনো উপকারিতা এখনো প্রমাণিত হয়নি। পানিশূন্যতা এড়ানোর বাইরে অতিরিক্ত পানি পান করলে স্বাস্থ্যের জন্য বাড়তি কোনো সুবিধা পাওয়া যায়, এমন প্রমাণ কমই রয়েছে।
তবে, সামান্য পানিশূন্যতাও এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণাগুলো বলছে, প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি পান করলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ভালোভাবে বজায় থাকে।
একটি ২০২৩ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিকভাবে হাইড্রেট থাকা বয়সের গতি ধীর করতে পারে এবং হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসজনিত দীর্ঘমেয়াদি রোগ এড়াতেও সাহায্য করতে পারে।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, তরল পান করা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। ভার্জিনিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট অ্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটির হিউম্যান নিউট্রিশন, ফুড অ্যান্ড এক্সারসাইজ বিভাগের অধ্যাপক ব্রেন্ডা ডেভি এ বিষয়ে কয়েকটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন।
একটি গবেষণায় তিনি অংশগ্রহণকারীদের দুইটি দলে ভাগ করেন। উভয় দলকেই তিন মাস ধরে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করতে বলা হয়। তবে, একটি দলকে প্রতিবার খাবারের আধা ঘণ্টা আগে ৫০০ মিলিলিটার পানি পান করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ফলাফলে দেখা যায়, যারা খাবারের আগে পানি পান করেছিলেন, তারা অন্য দলের তুলনায় বেশি ওজন কমাতে সক্ষম হন।
উভয় গবেষণা দলকেই প্রতিদিন ১০ হাজার কদম হাঁটতে বলা হয়েছিল। যারা প্রতিবার খাবারের আগে পানি পান করেছিলেন, তারা এই লক্ষ্য আরও ভালোভাবে পূরণ করতে পেরেছিলেন।
ব্রেন্ডা ডেভির মতে, এর কারণ হতে পারে সাধারণ কিন্তু অল্পমাত্রার পানিশূন্যতা, যা প্রায়শই ঘটে কিন্তু মানুষ তা টের পায় না। এমনকি শরীরের মোট পানির মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ ঘাটতি থাকলেও এটি মেজাজ ও শক্তি কমিয়ে দিতে পারে।
পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বারবারা রলস মনে করেন, পানি পানের মাধ্যমে ওজন কমানোর যে দাবি করা হয়, তা মূলত পানি মিষ্টিজাতীয় পানীয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হলে কার্যকর হতে পারে।
তিনি বলেন, ''পানি খেয়ে পেট ভরে ওজন কমবে—এমন ধারণা বৈজ্ঞানিকভাবে সেভাবে প্রতিষ্ঠিত নয়। কারণ, পানি খুব দ্রুত পেট থেকে বেরিয়ে যায়। তবে খাবারের মাধ্যমে পানি গ্রহণ করলে, যেমন স্যুপ, এটি পেটে বেশি সময় ধরে থাকে এবং আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য তৃপ্তি দেয়।''
আরেকটি বহুল প্রচলিত দাবি হলো, বেশি পানি পান করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং ত্বক ভালোভাবে আর্দ্র থাকে। তবে, এর পেছনেও নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাব রয়েছে।
অতিরিক্ত পানি পান কি বিপজ্জনক?
প্রতিদিন আট গ্লাস পানি পান করার লক্ষ্য সাধারণত ক্ষতিকর নয়। তবে, শরীর যখন পানির প্রয়োজন জানায় তার চেয়ে বেশি পানি পান করার ধারণা কখনো কখনো বিপদ ডেকে আনতে পারে।
অতিরিক্ত পানি পান রক্তের সোডিয়ামের ঘনত্ব কমিয়ে দেয়, যা 'হাইপোনাট্রেমিয়া' নামে পরিচিত। এর ফলে শরীরে তরলের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মস্তিষ্ক ও ফুসফুসে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে।
ক্রীড়াবিদদের মধ্যে অতিরিক্ত পানি পানের কারণে গুরুতর সমস্যা হওয়ার উদাহরণও রয়েছে। কর্টনি কিপস গত দশ বছরে অন্তত ১৫ জন ক্রীড়াবিদের মৃত্যু সম্পর্কে জানেন, যারা অতিরিক্ত পানি পানের কারণে খেলার সময় এই সমস্যায় ভুগেছেন।
তিনি মনে করেন, এটি আংশিকভাবে আমাদের তৃষ্ণার প্রাকৃতিক সংকেত ব্যবস্থার প্রতি অবিশ্বাসের কারণেই ঘটে। অনেকেই মনে করেন, শরীরের চাহিদার চেয়ে বেশি পানি পান করলে পানিশূন্যতা এড়ানো সম্ভব।
২০১৮ সালের লন্ডন ম্যারাথনে অংশ নিয়েছিলেন জোহানা প্যাকেনহ্যাম, তবে তিনি এর বেশিরভাগই মনে করতে পারেন না। কারণ, তিনি দৌড়ানোর সময় এত বেশি পানি পান করেছিলেন যে হাইপোনাট্রেমিয়ায় আক্রান্ত হন। সেদিন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, ''আমার বন্ধু এবং সঙ্গীরা ভেবেছিলেন আমি পানিশূন্যতায় ভুগছি, তাই আমাকে এক গ্লাস পানি দেন। এরপর আমি মারাত্মক খিঁচুনি অনুভব করি এবং আমার হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যায়। আমাকে এয়ারলিফট করে হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং তিনদিন আমি অজ্ঞান ছিলাম।''
এ বছর আবার ম্যারাথনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করা প্যাকেনহ্যাম বলেন, তার চারপাশের মানুষ এবং ম্যারাথনের পোস্টারগুলো শুধু বেশি পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ''আমার ঠিক থাকতে শুধু কয়েকটি ইলেক্ট্রোলাইট ট্যাবলেটই যথেষ্ট ছিল, যা রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়ায়। আমি আগে কয়েকটি ম্যারাথনে অংশ নিয়েছি, কিন্তু এটি জানতাম না।''
কতটুকু পানি আমাদের প্রয়োজন?
পানি পান করার প্রতি অতিরিক্ত উদ্বেগের ফলে অনেকেই নিজেদের সাথে পানি নিয়ে চলেন এবং শরীরের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পান করেন।
লন্ডনের ইনস্টিটিউট ফর স্পোর্ট, এক্সারসাইজ অ্যান্ড হেলথের গবেষণা পরিচালক হিউজ মন্টগোমারি বলেন, ''মরুভূমির মতো গরমে, সবচেয়ে বেশি এক ঘণ্টায় একজন মানুষ দুই লিটার পানির সমপরিমাণ ঘামতে পারে'।
যারা তৃষ্ণা অনুভবের পরিবর্তে সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাদের জন্য যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা দিনে ৬ থেকে ৮ গ্লাস তরল পান করার পরামর্শ দেয়, যার মধ্যে কম চর্বিযুক্ত দুধ এবং চিনি মুক্ত পানীয়, যেমন চা ও কফি অন্তর্ভুক্ত।
এছাড়াও, মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে আমাদের তৃষ্ণার অনুভূতি ৬০ বছর বয়সের পর কমে যায়, এবং ২০২২ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে যে পানিশূন্যতার লক্ষণগুলোও অনেক সময় সহজে প্রকাশ পায় না।
ডেভি বলেন, ''বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের প্রাকৃতিক তৃষ্ণা অনুভূতির সংবেদনশীলতা কমে যায় এবং আমরা কম বয়সীদের তুলনায় বেশি পানিশূন্যতায় ভুগতে পারি। বয়স বাড়লে আমাদের তরল পান করার অভ্যাসে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হতে পারে।''
বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ একমত যে, একজন ব্যক্তির তরল প্রয়োজনীয়তা তার বয়স, শরীরের আকার, লিঙ্গ, পরিবেশ এবং শারীরিক কার্যকলাপের স্তরের উপর নির্ভর করে।
২০২২ সালে, অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানান, মানুষের দৈনিক পানি চাহিদা ১ দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ৮ লিটার হওয়া উচিত।
২৩টি দেশের বিজ্ঞানী এই গবেষণায় অংশ নিয়ে দেখেন যে, গরম ও আর্দ্র এলাকায় বসবাসকারী, উচ্চতায় অবস্থানকারী, ক্রীড়াবিদ, গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী নারীদের বেশি পানি পান করা প্রয়োজন।
সবচেয়ে বড় বিষয়, একজন ব্যক্তির শক্তি খরচের পরিমাণ অনুযায়ী পানি প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হয়। সুতরাং, একমাত্র সবার জন্য একই নিয়ম প্রয়োগ করা যায় না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমাদের শরীর আমাদের তৃষ্ণা দিয়ে জানিয়ে দেয় যখন আমাদের পানি প্রয়োজন, যেমনভাবে ক্ষুধা বা ক্লান্তির অনুভূতি আসে। অতিরিক্ত পানি পান করা শরীরের জন্য উপকারী না হলে, তার একমাত্র ফলাফল হতে পারে বারবার টয়লেটে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত ক্যালোরি খরচ।