ইঅরেঞ্জের বিরুদ্ধে সিআইডির ২৩২ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলা
বিতর্কিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইঅরেঞ্জের বিরুদ্ধে আজ সোমবার (৪ অক্টোবর) ২৩২ কোটি ৪৩ লাখ টাকার মানি লন্ডারিং মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলার নথিতে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা ই-কমার্সের ছদ্মবেশে গ্রাহকদের কাছ থেকে পেমেন্টের নামে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করতেন।
এই অপরাধ বাস্তবায়নের জন্য তারা ইঅরেঞ্জ ডটশপ ছাড়াও ব্যবহার করতেন নিজেদের অন্যান্য সংগঠন – রেড অরেঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল, অরেঞ্জ বাংলাদেশ লিমিটেড এবং অল জোন।
এই মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ইঅরেঞ্জের প্রাক্তন মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, বর্তমান মালিক বিথি আক্তার, চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) মো. আমান উল্লাহ চৌধুরী, উপদেষ্টা মো. মাসুকুর রহমান, অরেঞ্জ বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক শেখ সোহেল রানা এবং আরো পাঁচ থেকে ছয়জন অজ্ঞাত ব্যক্তি।
সিআইডির সংগঠিত অপরাধ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান-সহ কোম্পানিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
এর আগে ঢাকার একটি আদালত ইঅরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান এবং সিওও আমান উল্লাহসহ পাঁচজনের দেশত্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
ইঅরেঞ্জ গ্রাহকরা কোম্পানিটির বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা দায়ের করেছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরও ১৩ লাখ টাকা ভ্যাট এড়ানোর দায়ে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
গত ৮ জুন ভ্যাট গোয়েন্দারা ইঅরেঞ্জের গুলশান অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন নথি জব্দ করেন। পরবর্তীতে ওইসব নথি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সংস্থাটি ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পায়।
এদিকে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) ইঅরেঞ্জ এবং অন্য তিনটি ই-কমার্স কোম্পানির সদস্যপদ বাতিল করেছে। ই-ক্যাবের কারণ দর্শানোর চিঠিতে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বনানী পুলিশ স্টেশনের বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার বোন সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান এবং কোম্পানির আরেক মালিক সোহেলের কথিত স্ত্রী নাজনীন নাহার বীথি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, গ্রাহকদের কেনা পণ্য ডেলিভারি না দিয়েই অগ্রিম গৃহীত ১,১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের।
কোম্পানিটির ২০ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সিটি ব্যাংকে ইঅরেঞ্জের একটি ব্যাংক একাউন্টে ৬২০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ডিপোজিট করা হয় এবং পরে আবার ৬৬৩ কোটি টাকার কিছু বেশি মোটরসাইকেল ভেন্ডরদেরকে ট্রান্সফার করা হয়।
ওই একাউন্টে এখন ২২ লাখ টাকার মতো ডিপোজিট রয়েছে।