ইভ্যালির রাসেল-শামীমাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ক্রেতাদের পণ্য কেনায় আকৃষ্ট করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী, চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন- ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ জাহিদ, মেহেদী হাসান, কো-ফাউন্ডার আতিউর রহমান, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আরিফুল্লাহ খান, এহসান চৌধুরী, ডিরেক্টর ফিরোজ হোসেন, হেড অব কমার্শিয়াল সাজ্জাদ আলম ও চিফ অপারেটিং অফিসার তরিকুল কামরুল।
আলমগীর হোসেন রিগ্যান নামে একজন আইনজীবী বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আজ (২৯ সেপ্টেম্বর) তিনি নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালতে মামলাটি গত ২৭ সেপ্টেম্বর দায়ের করা হয়। সেদিনই আদালত খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৩০ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে মামলার বাদী আলমগীর ইভ্যালির ওয়েবসাইটে 'সাইক্লোন' অফারের একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পান। তার একদিন পর (১ মে) তিনি একটি মোটরসাইকেল অর্ডার দেন। মোটরসাইকেলটির বর্তমান বাজার মূল্য এক লাখ ২৭ হাজার টাকা হলেও ইভ্যালি সেটি ৭০ হাজার ৯৯ টাকায় বিক্রির অফার দেয়।
তিনি 'নগদ' অ্যাপের মাধ্যমে মে মাসের ৩ তারিখ অফারের টাকা পরিশোধ করেন।
ইভালির নীতি অনুসারে, সাত থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে বাইকটি ডেলিভারি দেওয়া বা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোম্পানিটি গত ১৪৯ দিনেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর, গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে রাসেল এবং শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর, আইন লঙ্ঘন এবং গ্রাহকদের প্রতারণার জন্য ইভালির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধের সিদ্ধান্ত নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া দুটি পৃথক বিবরণীতে ইভ্যালি জানিয়েছিল যে গ্রাহকদের কাছে তাদের দেনা ৩১১ কোটি টাকা এবং মার্চেন্টদের কাছে দেনা ২০৬ কোটি টাকা।
ইভ্যালি তাদের সাইটে বিভিন্ন পণ্যে বিশাল ছাড় দিয়ে এবং ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারির প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করে অগ্রিম পেমেন্ট হিসেবে এ অর্থ সংগ্রহ করেছিল। কিন্তু ক্রেতারা এখনও তাদের অর্ডার করা জিনিস পাননি।
ইভ্যালির ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় গ্রাহকদের দেওয়া রিফান্ড চেক বাউন্স হয়ে গেছে।
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইভ্যালি সম্পর্কিত নথি চেয়ে বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে।
এছাড়া ঢাকার একটি আদালত ই-কমার্স কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ চলমান থাকা অবস্থায় মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিদেশভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।