কুড়িগ্রামে দুধকুমারের ভাঙনে বাড়িঘর বিলীন
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় দুধকুমার নদ ক্রমেই আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদের পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভাঙন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গত দু’সপ্তাহের অব্যাহত ভাঙনে উপজেলার পাইকের ছড়া, চর ভুরুঙ্গামারী ও সোনাহাট ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক বাড়িঘর, গাছপালা ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে সোনাহাট ইউনিয়নের ছড়া গ্রামে চৌধুরী বাজার সংযোগ পাকা রাস্তাটিও।
ওদিকে, উপজেলার চর ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে যাওয়ার একমাত্র বাঁধটির অধিকাংশ এখন দুধকুমারের করালগ্রাসে বিলীন। ভাঙনের মুখে পড়েছে চর ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ইসলামপুর জামে মসজিদ, কবরস্থান ও ঈদগাহ মাঠ।
গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন জানান, তাঁর বসত ভিটা বিলীন হয়েছে নদী-ভাঙনে। গত তিনদিনে তাঁর মতো ৬০ থেকে ৭০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। গ্রামবাসীদের অনেকে রাস্তা, বাঁধ কিংবা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ বাস করছেন খোলা আকাশের নিচে।
এলাকাবাসী জানান, দুধকুমারের ভাঙনে প্রতি বছর এভাবে শত শত পরিবার বসতভিটা, আবাদি জমি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। কিন্তু বিপুলসংখ্যক গৃহহীন পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসছেন না কেউ।
এ বিষয়ে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক জানান, নদী-ভাঙনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাদের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৩ মেট্রিক টন (জিআর) চাল দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নদী-ভাঙন প্রতিরোধে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৫ হাজার ৫শ’ জিও ব্যাগ ভাঙন-কবলিত এলাকায় ফেলে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।