কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জাপানি বিনিয়োগ বন্ধের দাবি
১১ জুন থেকে আগামী ১৪ জুন যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে ধনী সাতটি দেশের ফোরাম জি-৭ (গ্রুপ অব সেভেন) এর শীর্ষ সম্মেলন।
এবারের সম্মেলনকে ঘিরে বাংলাদেশে মাতারবাড়ি কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে সব ধরনের জাপানি বিনিয়ােগ বন্ধের দাবি জানিয়েছে তরুণ জলবায়ু কর্মীরা।
এছাড়াও জি-৭ এর অন্যতম সদস্য জাপানকে পরিবেশ দূষণের দায়ে মাতারবাড়ির স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের ক্ষতিপূরণ, যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ও মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প এখনই বাতিল করে সৌর বা বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার আহ্বান জানানো হয়।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশে বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি) ও ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের যৌথ এক মানববন্ধনে এসব দাবি করা হয়।
মানববন্ধনে আন্দোলনকারী একজন বলেন, ২১০০ সাল নাগাদ মানুষের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি থামাতে হলে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্রা শূন্যতে নামিয়ে আনতে হবে। গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমনের সব থেকে বড় কারণ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার।
এই সময়সীমার মধ্যে শূন্য নির্গমন নিশ্চিত করার জন্য আমাদের হাতে আর সময় নেই। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ)-এর সুপারিশ অনুসারে এখনই জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের ঢাকা জেলার সমন্বয়ক রুহুল আমিস রাব্বি জানান, গত ২১ মে ২০২১ তারিখে এক সম্মেলনে পৃথিবীর সব থেকে ধনী সাতটি দেশ কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা আর কয়লাখাতে বিনিয়ােগ করবে না। কিন্তু সম্মিলিতভাবে নেয়া এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে জাপান বাংলাদেশে কয়লাবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়ােগ করে যাচ্ছে।
অথচ ১৯৯২ সালের জলবায়ু-সনদ অনুসারে জাপান শুধু নিজের দেশেই নয় বরং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশেরও গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে নীতিগতভাবে বাধ্য। কিন্তু জাপান সরকার ও সরকারের প্রতিষ্ঠান জাইকা কয়লা বিদ্যুৎখাতে বিনিয়ােগ করে আমাদেরকে বিপদে ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, মাতারবাড়ি কয়লা ভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্র আমাদের পরিবেশ ধ্বংস করবে, বাতাসে আরাে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন করবে, ফসল নষ্ট হবে, মানুষের স্বাস্থ্যহানি ঘটবে এবং বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি ঋণের জালে আটকে যাবে।
অবিলম্বে মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ স্থগিত করে যে পর্যন্ত অবকাঠামাে নির্মাণ করেছে তার উপর তরল হাইড্রোজেনের মতাে কম দূষণকারী জ্বালানির বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করারও দাবি জানান এই জলবায়ু রক্ষা আন্দোলনকারী।