গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে নায়ালা পরিবারে নতুন সদস্য
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জম্ম নিয়েছে নায়ালা শাবক। তৃণভোজী এ প্রাণিটি দক্ষিণ পূর্ব আফ্রিকার সাভানা অঞ্চলের অ্যান্টিলোপ প্রজাতির।
একে সর্পিল শিংযুক্ত হরিণ বলেও অভিহিত করা হয়। লাজুক প্রকৃতির হওয়ায় সচরাচর এ প্রাণির দেখা মেলে না। ঘন বনজঙ্গল ও ঝোপঝাড়ে ভেতর নির্জনে অবস্থান করা এদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তবে আহারের জন্য নিস্তব্ধ সময়কেই এরা বেঁছে নেয়। গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক প্রতিষ্ঠালগ্নে দুটি নায়ালা আনা হয়েছিল। সম্প্রতি পার্কে একটি নায়ালা শাবকের জন্ম হলেও, লুকিয়ে থাকায় গত বুধবার দেখা মেলে এই শাবকের।
পার্ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সাফারি পার্কের প্রাকৃতিক পরিবেশে নায়ালার বিচরণ। ইতোপূর্বে এখানে আরো একটি শাবকের জন্ম হয়েছিল। তবে সেসময় সেটিকে শেয়ালে খেয়ে ফেলে।
বয়সজনিত কারণে একটি পুরুষ নায়ালা সম্প্রতি মারা যায়। এরপর এই শাবকের জন্ম হলেও, প্রথমদিকে তার দেখা মেলেনি। সম্প্রতি পার্কের জেব্রা বেষ্টনীর সাথে শাবকটিকে তার মায়ের সাথে দেখা যায়। কাছে যেতে না পারায় এখনও জন্ম শাবকটির লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায়নি। ঘন বন ও ঝোপঝাড় থাকার কারণে চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরী হয় এ প্রাণির শাবক জন্মের পর। শিয়াল ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণির আক্রমণে মারা যাওয়ার ঝুঁকিই সবচেয়ে বেশি।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক সরোয়ার হোসেন খান বলেন, এ প্রাণিটি দেখতে হরিণ প্রজাতির মতো। নারী নায়ালার শিং থাকে না, তবে পুরুষের শিং থাকে, তবে সে শিংয়ের শাখা থাকে না। নায়ালার শিংয়েরও কোন পরিবর্তন হয় না। নায়ালা তৃণভোজী প্রাণি- ছোট ঘাস, লতাপাতা তাদের পছন্দের খাবার। লাজুক হওয়ায় মানুুষের উপস্থিতি পেলে এরা লুকিয়ে পড়ে। দিনের বেশীরভাগ সময়ে লুকিয়ে থেকে সকাল ও শেষ বিকেলে এরা সক্রিয় হয়। পুরুষ নায়ালা ১৮ মাস ও স্ত্রী নায়ালা ১২ মাসেই প্রজননে সক্ষম হয়। প্রজনন মৌসুম বসন্ত ও শরৎকালে। গর্ভকালীন সময় ৭ মাস। প্রতিবার একটি করে শাবকের জন্ম দেয়।
চোরাচালান, বাসস্থান ধ্বংস, কৃষি ও গবাদিপশু চারণের কারণে আফ্রিকার প্রাকৃতিক পরিবেশে খুব দ্রুত কমছে এদের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার এ প্রাণিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে।
নায়ালার দেহের দৈর্ঘ্য ১৩৫-১৯৫ সে.মি. ওজন হয় ৫৫-১৪০ কেজি পর্যন্ত। নারী ও কম বয়সী পুরুষ নায়ালার শরীরে ১০ এর অধিক সাদা ডোরা দাগ থাকে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন, দেশি ও বিদেশি নানা প্রাণির সমাহার এখন আমাদের সাফারি পার্ক। দর্শনার্থীদের বিনোদন ও অজানা প্রাণীর সাথে পরিচয়ের সুযোগ করে দিয়েছে এই পার্ক।