গানের অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাবার সামনেই ডাকাতের গুলিতে শিক্ষার্থী নিহত
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও-ঈদগড়-বাইশারি সড়কের হিমছড়ি ঢালায় সশস্ত্র ডাকাতের গুলিতে বাবার সামনেই এক শিক্ষার্থী তরুণ নিহত হয়েছেন। সামাজিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন শেষে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে সিএনজি অটোরিকশায় বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জনি দে রাজ (২০) রামু উপজেলার পাহাড়ি জনপদ ঈদগড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের চরপাড়ার (শিয়াপাড়া) এলাকার তপন দের ছেলে। ঈদগাঁও কলেজ থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন তিনি। পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গান গাইতেন জনি।
ঈদগড় ৪নং ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আলমগীর হোসেন জানান, 'ঈদগাঁও থেকে ঈদগড় আসার পথে হিমছড়ি ঢালায় সিএনজিবাহী যাত্রীরা ডাকাতির কবলে পড়েন। এ সময় ডাকাতের গুলিতে কণ্ঠশিল্পী জনি নিহত হয়েছেন। অন্য যাত্রীদেরও আঘাত করেছে ডাকাতদল।'
'সড়কটি দিয়ে পার্বত্য নাইক্ষংছড়ি, রামু ও কক্সবাজার সদর এ তিন উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের লোকজনকে চলাচল করতে হয়,' বলে জানান তিনি।
নিহতের বাবার বরাত দিয়ে ঈদগড়ের সমাজকর্মী নুরুল আবছার জানান, বুধবার রাতে একটি সামাজিক আয়োজনে গান পরিবেশন করতে গিয়েছিলেন জনি রাজ। সঙ্গে তার বাবা এবং এক প্রতিবেশী ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে বৃহস্পতিবার সকালে সিএনজি নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন পিতা-পুত্রসহ অন্যরা। ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের হিমছড়ি ঢালায় পৌছামাত্র ১০-১৫ জনের সশস্ত্র ডাকাতদল তাদের গতি রোধ করে। তারা জনি রাজকে অপহরণ করার চেষ্টা চালায়। এ সময় তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেন জনি। তখন তাকে এবং অন্যদেরও প্রহার করে ডাকাতদল। ধস্তাধস্তি হাতাহাতিতে রূপ নিলে এক পর্যায়ে জনির মাথার ডানপাশে গুলি করে পাহাড়ের ভেতর ঢুকে যায় ডাকাতদল। উদ্ধার করে ঈদগাঁও মেডিকেল নামে ক্লিনিকে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক আবদুল হালিম বলেন, 'ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের হিমছড়ি এলাকাটিতে সকাল ৮টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত পুলিশ পাহারা থাকে। তবে সাড়ে ৭টার দিকে, পুলিশ টহল শুরুর আগে সিএনজি পেয়ে দুর্বৃত্তরা আক্রমণ করেছে। সিএনজি মালিক সমিতি জানিয়েছে, জনি রাজদের আগে আরও ভোরে একাধিক সিএনজি যাত্রী নিয়ে ঈদগড়-বাইশারি গেছে।'
ওসি হালিম আরও বলেন, 'খবর নিয়ে জেনেছি, এর আগেও নিহত জনি রাজকে দুর্বৃত্তরা আক্রমণ করেছিল। আজও (বৃহস্পতিবার) তাকে এরা অপহরণ করতে চেয়েছিল বলে প্রকাশ পেয়েছে। পূর্ব কোনো ঘটনার জেরে এটা হলো কি না, তাও খতিয়ে দেখছি আমরা। তার মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।'
উল্লেখ্য, এর আগেও সড়কটির হিমছড়ি ঢালায় ডাকাতের গুলিতে একাধিক নিহতের ঘটনা ঘটে। এর একটু পূর্বে পানেরছারা ঢালায় ডাকাতের গুলিতে পুলিশের এক নায়েক খুন হবার ঘটনাও রয়েছে। বাড়ি ফেরার পথে গাড়ি থেকে অপহৃত হন প্রবাসী, শিক্ষার্থী, ডাক্তার, চাকুরিজীবী, কৃষকসহ নানা পেশার মানুষ।