চট্টগ্রামে ডিজেলের গাড়িতে লাল, গ্যাসের গাড়িতে সবুজ স্টিকার লাগানো শুরু
ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য ঠেকাতে পৃথক স্টিকার সাঁটিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
শনিবার থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ ও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) যৌথ উদ্যোগে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বেলা ১১টায় নগরীর ষোলশহর ২নং গেট এলাকায় ডিজেলচালিত গণপরিবহনে লাল ও সিএনজি গ্যাসচালিত গণপরিবহনে সবুজ স্টিকার লাগানো হয়। এর পাশাপাশি ভাড়ার তালিকা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিএমপির ট্রাফিক-উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আলী হোসেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিএমপির ট্রাফিক-উত্তর বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মমতাজ উদ্দিন ও বিআরটিএর পরিদর্শক মো. ফাহাদ সিকদার।
উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আলী হোসেন টিবিএসকে বলেন, 'বাড়তি ভাড়া বন্ধের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ডিজেলচালিত পরিবহনে লাল স্টিকার এবং সিএনজিচালিত পরিবহনে সবুজ স্টিকার লাগানো হচ্ছে। নগরের রুটভিত্তিক গণপরিবহনের দূরত্ব অনুযায়ী সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা থাকবে প্রতিটি গণপরিবহনের অভ্যন্তরে। একইসঙ্গে বাস টার্মিনাল ও বিভিন্ন স্টপেজে যাত্রীদের দৃশ্যমান স্থানেও টাঙানো হবে ভাড়ার তালিকা।'
একইভাবে নগরের টাইগারপাস, আগ্রাবাদ, কাস্টমস মোড়ে পরিচালিত অভিযানে অংশ নেন নগর ট্রাফিক উত্তর ও ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগের কর্মকর্তা এবং বিআরটিএর কর্মকর্তারা।
গত ১০ নভেম্বর বিকালে সিএমপির সদর দপ্তরের সম্মেলনকক্ষে গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে পুলিশ ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের সমন্বয় সভায় গণপরিবহনে পৃথক স্টিকার সাঁটিয়ে দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে ৩ নভেম্বর রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। ৪ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয় বাড়তি দাম।
দাম বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরদিনই সকাল ৬টা থেকে দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু করে বাস, ট্রাকসহ পণ্যবাহী যানবাহন মালিকেরা। যদিও ৭ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে চট্টগ্রামে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়।
পরে ৭ নভেম্বর ঢাকায় বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দূরপাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সার জায়গায় করা হয় ১ টাকা ৮০ পয়সা।
অপরদিকে মহানগরে বড় বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সার জায়গায় ২ টাকা ১৫ পয়সা করা হয়। অপরদিকে মিনি বাসের ভাড়া ১ টাকা ৬০ পয়সার জায়গায় করা হয় ২ টাকা ৫ পয়সা।
এদিকে ভাড়া বাড়ানোর পরও নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় শুরু করে গণপরিবহনগুলো। ডিজেলচালিত গাড়ির পাশাপাশি গ্যাসচালিত গাড়িগুলোও বাড়তি ভাড়া আদায় শুরু করে। এ নিয়ে চালক, হেলপার ও যাত্রীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা থেকে শুরু করে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে।