টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, চট্টগ্রামে ভোগান্তি
হাঁটু পানিতে ডুবে গেছে সড়ক। অলিগলি-ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়েছে পানি। সড়কে আটকা পড়েছে যানবাহন। চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষ। টানা বৃষ্টিতে দীর্ঘদিনের সমস্যা জলাবদ্ধতায় ফের ভোগান্তিতে পড়েছেন চট্টগ্রামবাসী।
গত রোববার থেকে বন্দরনগরীতে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বৃষ্টিতে নগরীর হালিশহর, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ, শুলকবহর, কাপাসগোলা, সিডিএ আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্নস্থান হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়।
পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তর জানায়, মঙ্গলবার দুপুর তিনটা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৩৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, চট্টগ্রামে মঙ্গলবার রাত ১২টার পর বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। এতে সমুদ্রবন্দরের জন্য ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত এবং নদী বন্দরের জন্য ১ নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
রাস্তায় পানি ওঠার কারণে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। বিভিন্ন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ইশতিয়াক হোসেন নামে এক পথচারী দুপুর ১টার দিকে আগ্রাবাদ এলাকায় বলেন, সিডিএ আবাসিকে হাঁটু পানি জমে গেছে। তাই সকাল থেকে বাসায় বসে ছিলাম। পরে বাধ্য হয়ে পানিতে ভিজে বের হয়েছি।
জোয়ারের পানি ঢুকে মূলত আগ্রাবাদ ও আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলা পানিতে তলিয়ে গেছে।
হাসপাতাল ওয়ার্ড মাস্টার আলমগীর হোসেন বলেন, জোয়ারে এলেই নিচতলা ডুবে যাচ্ছে। প্রতিদিন দুইবার পানি ঢুকছে। নিচতলার আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা উপরের তলায় বসে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
অন্যদিকে, বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে যানবাহন ছিল কম। সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা কম থাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হয়েছে যাত্রীদের।
এদিকে, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও করোনার কারণে তা এখন বন্ধ। প্রকল্পের ভৌত কাজের তদারকি করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কোর।
সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলি বলেন, করোনার কারণে কাজের গতি কমে গেছে। তাই সময়মতো কাজ শেষ করা যায়নি। তবে বিগত বছরের তুলনায় জলাবদ্ধতা অনেক কম। অতি বৃষ্টির কারণে নিম্ন এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে আমরা বেশিক্ষণ পানি না থাকার জন্য দ্রুত আশপাশের নালা-খালগুলো পরিষ্কার করে ফেলছি। মানুষের ভোগান্তি কমাতে সেনাবাহিনীর একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।