টিকা নিবন্ধনের বয়সসীমা এখন ২৫
করোনার টিকা নিতে নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে বয়সসীমা ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব করা হয়েছে।
ফলে এখন থেকে ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সী বাংলাদেশিরা করোনাভাইরাসের টিকা নিতে পারবেন।
এর আগে গত ১৯ জুলাই টিকা নিবন্ধনের বয়সসীমা ৩৫ থেকে কমিয়ে ৩০ বছর করা হয়।
দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রাথমিকভাবে ৫৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের টিকা পাওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে কয়েক দফায় বয়সসীমা সংশোধন করা হয়।
গত সোমবার (২৬ জুলাই) স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সরকারি অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী বছরের মধ্যে দেশের ১৭ কোটি জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করেছে।
স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজিএইচএস) অধ্যাপক ড. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেন, "আমরা ২০২২ সালের মধ্যে দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করছি"।
বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোভিড রোগীদের মধ্যে ৯০ শতাংশ রোগী নন-ভ্যাকসিনেটেড বা টিকাপ্রাপ্ত নন। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশই গ্রামের, যাদের বেশিরভাগই আবার বয়স্ক। তাই গ্রামাঞ্চলের বয়স্ক মানুষদের টিকার আওতায় আনলে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ পরিস্থিতিতে মৃত্যু কমাতে আগামী মাস থেকে গ্রামে গ্রামে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
কর্মসূচির আওতায় আগামী ৭ আগস্ট থেকে পরবর্তী সাতদিনে ৬০ লাখ মানুষকে টিকাকরণের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
টিকা নিতে হলে গ্রামের মানুষকে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র আনতে হবে বলেও সূত্রগুলো উল্লেখ করে। তারা আরও জানান, নির্দিষ্ট এলাকার কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা প্রতি ওয়ার্ডে টিকা কেন্দ্র নির্ধারণ করবেন।
সবাইকে করোনার টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গত রোববার (২৫ জুলাই) এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, "করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা দেওয়ার বিকল্প নেই। তাই মাসে এক কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। আমরা এখন পর্যন্ত ২১ কোটি টিকার ব্যবস্থা করেছি।"
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে সরকারের হাতে এক কোটি ডোজের বেশি টিকা আছে। আগামী মাসের মধ্যেই আরো দুই কোটি ডোজ টিকা সরকারের হাতে চলে আসবে। এভাবে চীন থেকে তিন কোটি, রাশিয়া থেকে সাত কোটি, জনসন অ্যান্ড জনসনের সাত কোটি, অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি টিকাসহ আগামী বছরের শুরুর দিকেই সরকারের হাতে প্রায় ২১ কোটি টিকা চলে আসবে। ঠিক সময়ে এসব টিকা পেলে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা যাবে।
এ বছরের ২৫ এপ্রিল ডোজ সংকটের কারণে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ করে সরকার। এরপর আবার ১ জুলাই থেকে প্রবাসী শ্রমিক, মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
টিকা নিয়ে গত চার মাস কিছুটা সংকট থাকলেও এখন তা কেটে গেছে বলে মনে করছে সরকার। নিয়মিত টিকার চালান আসতে শুরু করেছে এবং পরিকল্পিতভাবেই টিকা দেওয়া হচ্ছে।