ঢাকা থেকে এক সপ্তাহ পর করোনাভাইরাসের রিপোর্ট এলো বরিশালে
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া একজনসহ ৬ জনের শরীরে কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষায় ভাইরাসটি ধরা পড়েনি। এ কারণে চিকিৎসাধীন ওই ৫ জনকে করোনা ইউনিট থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে পাঠানো কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষার রিপোর্ট শনিবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে পৌঁছে।
এর আগে, মারা যাওয়া ব্যক্তিসহ করোনা ইউনিটে ভর্তি ৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ২৮ মার্চ আইইডিসিআর-এ পাঠানো হয়েছিল।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেন জানান, চিকিৎসাধীন ৫ ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত নন, পরীক্ষার রিপোর্ট পেয়ে তা নিশ্চিত হয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে জ্বর, সর্দিকাশি ও শ্বাসকষ্টে গত কয়েকদিনে বরিশালে ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে দুইজন মারা গেছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ।
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৯ মার্চ সকালে করোনা ইউনিটে মারা যাওয়া ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার গোহানগাছিয়া গ্রামে। এরআগে ২৮ মার্চ রাতে একই ইউনিটে ৪৫ বছর বয়সী আরেক নারীর মৃত্যু হয়। তার বাড়ি বরিশাল শহরেই। এছাড়া গৌরনদী উপজেলায় তিনজন ও আগৌলঝাড়া উপজেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
গৌরনদী উপজেলায় জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া তিনজনের বয়স যথাক্রমে ৫০, ৬০ ও ৬১ বছর । ৬১ বছর বয়সী নারীটি মারা যান ২৯ মার্চ সকালে। এর ৫ থেকে ৬ দিন আগে একই উপজেলায় ৬০ বছর বয়সী আরেক নারীর মৃত্যু ঘটে। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার একই উপজেলায় শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৫০ বছর বয়সী আরেক ব্যক্তি মারা গেছেন।
অন্যদিকে আগৌলঝাড়া উপজেলায় গত বুধবার ৪০ বছর বয়সী এক নারী মারা যান। স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন ধরে তার জ্বর ও কাশি ছিল। মৃত্যুর আগে ওই নারী বারবার বমি করছিলেন।
এদিকে জ্বর, সর্দিকাশি ও শ্বাসকষ্টে মারা যাওয়া ৬ জনের মধ্যে দুজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন।
এদিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে বসানো পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিনে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শনিবার বিকেল পর্যন্ত নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি। গত ৩০ মার্চ পিসিআরসহ বিভিন্ন যন্ত্র পৌঁছার পর সেগুলো একাডেমিক ভবনের দোতলার মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে স্থাপনের কাজ চলছে। এজন্য সুরক্ষিত একটি ল্যাব তৈরি করা হচ্ছে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেন বলেন, পরীক্ষাগার প্রস্তুতের জন্য গতকাল থেকে পিসিআর মেশিনে পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হয়নি। আগামী ৭ থেকে ৮ এপ্রিলের মধ্যে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা শুরু হবে।
মেডিকেল কলেজটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. অসীত ভূষণ দাস বলেন, ভাইরাস পরীক্ষাগারের নিরাপত্তার বিষয়টি জরুরি। তাই গণপূর্ত বিভাগ সেই বিষয়টিকে বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে কাজ করছে। আমরাও চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব করোনাভাইরাস পরীক্ষাগার প্রস্তুত করতে। তবে আরও দুই-তিনদিন সময় লাগবে।