ঢাকা-ফেরা: পাটুরিয়া ঘাটে কর্মমুখী মানুষের ঢল
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। কর্মমুখী মানুষের ঢলে এখন মুখরিত পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকা।
উচ্চবিত্তের যাত্রীরা বাড়তি ভাড়া দিয়ে প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে গন্তব্যে গেলেও বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। যাত্রীবাহী বাসে ভেঙে-ভেঙে গন্তব্যে ছুটছেন কর্মমুখী সাধারণ যাত্রীরা।
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি এবং যাত্রী বোঝাই করে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে আসছে ছোট-বড় বিভিন্ন ফেরি। এরপর বাস, প্রাইভেটকার এবং মোটরসাইকেল ভাড়া করে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা। তবে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি এবং যাত্রী পারাপারে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে চলছে ছোট বড় মিলিয়ে মোট ১৬টি ফেরি। পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কম থাকলেও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চমুখী যাত্রীর চাপ বাড়ছে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায়।
পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৪ নাম্বার পন্টুনে আলাপ হলে নারায়ণগঞ্জমুখী পোশাক কারখানার শ্রমিক মুন্নি আক্তার জানান, ফরিদপুর থেকে ভেঙে-ভেঙে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত আসেন তিনি। তবে পাটুরিয়া ঘাটে এসে গণপরিবহন না থাকায় বিপাকে পড়েন। অতিরিক্ত টাকা সঙ্গে না থাকায় যাত্রীবাহী বাসে করে ভেঙে-ভেঙে গন্তব্যে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মিরপুর এলাকার চা দোকানী আজিজ মোল্লা জানালেন, পরিবারের ইচ্ছা পূরনের জন্য গ্রামের বাড়িতে ঈদ করেন তিনি। বাড়ি যাওয়ার সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি পাল্টাতে হয়েছিল তাকে। এবার কর্মস্থলে যেতেও একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে গাবতলী পর্যন্ত দুই হাজার টাকায় দুইজন যাত্রী বহন করেন তিনি। সিংগাইরের আঞ্চলিক সড়ক হয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই চলে যান গন্তব্যে। যাত্রীরাও দুই হাজার টাকা দিয়েই গন্তব্যে ছুটছেন। অনেকে আবার দুই হাজার টাকা একা দিয়েই গাবতলী যায় বলে জানান তিনি।
প্রাইভেটকার চালক মুশফিকুর রহমান জানান, ভোর থেকে গাবতলীমুখী যাত্রীর চাপ রয়েছে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায়। জনপ্রতি ৫০০ টাকায় তিনি যাত্রী নিচ্ছেন। পাটুরিয়া ঘাটে আসামাত্রই যাত্রী পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ছোট বড় মিলিয়ে মোট ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। পাটুরিয়া ফেরিঘাট ফাঁকা থাকলেও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় যাত্রী ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়ির বেশ চাপ রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে গোলড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, ঢাকা আরিচা মহাসড়কে ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ রয়েছে। তবে মহাসড়কের কোথাও কোনো যানজট নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাইওয়ে পুলিশের টহল টিম কাজ করছে। আর জেলাভিত্তিক যান চলাচলের বিষয়টি জেলা পুলিশ দেখভাল করছে বলে জানান তিনি।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বারবারিয়া পর্যন্ত বাস চলাচল করছে। সেখানে কর্মস্থলমুখী যাত্রীরা নেমে বারবারিয়া ব্রিজের পূর্ব পার্শ্ব থেকে ঢাকামুখী বাসে গন্তব্যে ছুটছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।