দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার ক্রমান্বয়ে কমছে
চার সপ্তাহ ধরে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রোটোকল অনুযায়ী টানা তিন সপ্তাহ করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে ও অধিক সংখ্যক মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের আগেই বাংলাদেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের মত সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. এম মোশতাক হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমাদের দেশে এখন করোনাভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছেনা, এখন ক্লাস্টার ট্রান্সমিশন হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ইনফেকশন রেট যখন টানা দুই সপ্তাহ ১ শতাংশের নিচে থাকবে তখনও `ছিটেফোটা ট্রান্সমিশন ' হবে। তবে সারাবিশ্বে যেহেতু এখনো সংক্রমণ আছে তাই ইনফেকশন রেট শুন্যতে নেমে আসতে সময় লাগবে'।
ডা. এম মোশতাক হোসেন বলেন, 'করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে এখন ভ্যাকসিনেশনে জোর দিতে হবে। প্রতিদিন ৩ লাখের বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। এখনও সক্ষমতা অনুসারে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে না। আমরা যদি প্রতি মাসে ১ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে পারি তাহলে সংক্রমণ পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে। প্রান্তিক মানুষরা যাতে ভ্যাকসিন নিতে পারেন সেজন্য ভ্যাকসিন সেন্টারগুলোতে বুথ স্থাপন করতে হবে'।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ১৮ জানুয়ারি দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার ছিলো ৫.৪৯ শতাংশ। এরপর থেকে প্রতিদিন সংক্রমণের হার কমতে থাকে। ১৮ ফেব্রুয়ারি সংক্রমণের হার ২.৬৮ শতাংশে নেমে এসেছে।
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির সদস্য এবং ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, 'ডব্লিউএইচও'র প্রটোকল অনুযায়ী করোনাভাইরাস এখন আমাদের দেশে এন্ডেমিক হয়ে গেছে। এন্ডেমিক মানে সংক্রমণ সাধারণ রয়েছে, অনেক বেশি নয়। রোগ থাকবে কিন্তু বিপদজনক নয়, মৃত্যু ঝুঁকি কমবে। এন্ডেমিক মানে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাফেরা শুরু করতে পারি'।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, 'ইনফেকশন রেট এখন স্বস্তির। কিন্তু হেলথ গাইডলাইন মানতেই হবে। আর যতদ্রুত বেশি মানুষকে ভ্যাকসিনেশন করা যায় সেদিকে জোর দিতে হবে। যাতে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়। আর আমাদের দেশে করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন যাতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে আরো সতর্ক হতে হবে'।