বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের মৃত্যুদণ্ড যেকোনো সময় কার্যকর
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড যেকোনো সময় কার্যকর করা হবে। তার প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ খারিজ করে দিয়েছেন। তাই আর কোনো বাধা নেই এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পথে।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমে জানান, আমি শুনেছি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করেছেন। তবে এর অনুলিপি আমি এখনো পাইনি।
এর আগে বুধবার ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল চৌধুরী আসামির উপস্থিতিতে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন। এর পর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর ঠিক পরপরই আদালত থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয় লালসালু কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানা। আদালতের আদেশ আসামিকে তখনই পড়ে শোনানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কারাগারের জেলার মাহবুব আলম।
এদিকে, কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মাজেদ বুধবার বিকেলেই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনটি পৌঁছায় রাষ্ট্রপতির কাছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আগেই জানিয়েছিলেন, আবদুল মাজেদ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে বা তার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে কারা কর্তৃপক্ষের সামনে দণ্ড কার্যকরে কোনো বাধা থাকবে না।
তিনি উল্লেখ করেন, বিচারের সময় আসামি মাজেদ পলাতক ছিলেন। ওই সময় পলাতক ফাঁসির আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্র আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। আপিল করতে দেরি হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ আসামি দেখাতে পারবেন না। সুতরাং আদালতে আপিল করার কোনো সুযোগ তিনি আর পাচ্ছেন না।
এর আগে, এই আসামিকে সোমবার রাতে মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)।
সিটিটিসি জানায়, আবদুল মাজেদ সর্বশেষ ভারতে পলাতক ছিলেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তিনি সম্প্রতি ঢাকায় ফেরেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে সপরিবারে নিহত হন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইতিহাসের নির্মম ও কলঙ্কজনক ওই ঘটনার ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় বিচারিক আদালত ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আপিল বিভাগ ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।
২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর অন্য পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তারা হলেন লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মেজর বজলুল হুদা, লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহম্মেদ (আর্টিলারি) ও লে. কর্নেল একেএম মহিউদ্দিন আহম্মেদ (ল্যান্সার)।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে এখনো পাঁচজন বিদেশে পলাতক রয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সেই খুনিরা হলেন কর্নেল খন্দকার আব্দুর রশিদ, লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল এএম রাশেদ চৌধুরী, রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ও লে. কর্নেল এসএইচ নূর চৌধুরী।