বান্দরবানে ক্ষতি পোষানোর আশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর বান্দরবানের সকল পর্যটন কেন্দ্র শুক্রবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে।
সংক্রমণ অনেকটা কমে আসায় শর্তসাপেক্ষে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার সকল পর্যটন কেন্দ্র ও আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলো খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত করোনাভাইরাস মনিটরিং কমিটির এক জরুরি বৈঠকের পর জেলা প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
খুলে দেওয়ার প্রথম দিনেই পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের আনাগোনা দেখা গেছে। সকালে শহরে দুটি পর্যটন কেন্দ্র্র নীলাচল এবং মেঘলায় ঘুরে বেড়িছেন তারা।
পর্যটকরা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে কোথাও যাওয়ার সুযোগ ছিল না। পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ায় একটু ঘুরতে এসেছেন তারা।
নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা জান্নাতুল ফেরদৌস ও হোসনে আরা মুমু জানান, বাসায় থাকতে থাকতে তারা হাঁপিয়ে উঠেছিলেন। বিষণ্নতা কাটাতে এবং মন সতেজ রাখতে সবুজ পাহাড় দেখার অপেক্ষায় ছিলেন এতদিন।
নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট কাউন্টারে দায়িত্বরত সুদীপ বড়ুয়া জানান, নীলাচল খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকজন ঘুরতে এসেছেন। এদের মধ্যে বেশির ভাগই পর্যটক। আর কিছু বান্দরবান জেলার পার্শ্ববর্তী লোকজন। প্রথম দিনেই ৫০০টির মতো টিকিট বিক্রি হয়েছে।
মেঘলায় পর্যটন কেন্দ্রে টিকেট সরবরাহকারী সুকুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ২০০টির মতো টিকেট বিক্রি হয়েছে।
এদিকে আবাসিক হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টে রুম বুকিং হয়নি। খুলে দেওয়ার ঘোষণা পেয়ে অতিথি আসার অপেক্ষায় কক্ষগুলো গুছানোর কাজ চলছে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা।
শহরে আবাসিক হোটেল হিল ভিউ ম্যানেজার মনিরুজ্জামান বলেন, প্রথম দিনে ১৫টি কক্ষ বুকিং হয়েছে। কয়েক দিন পর হয়তো আরও বাড়বে। হোটেলে পর্যটকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হলিডে ইন রিসোর্টের পরিচালক জাকির হোসেন জানান, আপাতত বুকিং কম। কর্মচারীরা কাজে ফিরেছেন মাত্র। বন্ধ রিসোর্ট গুছাতে কয়েক দিন সময় লাগবে। এরপর হয়তো পর্যটকদের বেড়াতে আসা পুরোদমে শুরু হবে।
'করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ চার মাস গৃহবন্দী ছিল। শর্ত মেনে এখন পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। নির্জঞ্জাট পরিবেশ উপভোগের জন্য পর্যটক এবং ভ্রমণ পিপাসুরা পাহাড় বেছে নেয়।'
তবে তিনি আশঙ্কা করছেন করোনায় তার রিসোর্টের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে দুই বছরের সময় লাগবে।
করোনাভাইরাসের কারণে বান্দরবানে সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে জেলার আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন কেন্দ্র এবং আবাসিক হোটেল-মোটেল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে পর্যটন ব্যবসায়ীরা ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা করবে। আশা করি পর্যটন শিল্পকে আগের মতো ঘুরে দাঁড়াবে।'
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম হোসেন জানিয়েছেন, পর্যটন শিল্প নির্ভর প্রতিটি সেক্টরের জন্য আলাদা আলাদা শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এসব শর্তগুলো সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।