বুয়েট ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার এজাহারভুক্ত ১৯ আসামিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন।
বুয়েট ক্যাম্পাসে দলভিত্তিক রাজনীতিও করা যাবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় বুয়েট অডিটোরিয়ামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন বুয়েট উপাচার্য। সেখানে এ ঘোষণা দেন তিনি। প্রায় হাজার খানেক শিক্ষার্থী ও ৫০ জন শিক্ষক এ আলোচনায় অংশ নেন। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বুয়েট অডিটরিয়ামে এ আলাচনা শুরু হয়।
উপাচার্য বলেন, “আজ থেকে বুয়েটে সব রাজনৈতিক দলের তৎপরতা বন্ধ বলে ঘোষণা করছি। কোনো রাজনৈতিক দল এখানে কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেব।”
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সবগুলো দাবির সঙ্গে উপাচার্য একমত পোষণ করে বলেন, সবগুলোই পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হবে।
বুয়েট প্রশাসন ইতোমধ্যে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে আবরার হত্যার তদন্ত শেষ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে বলেও জানান উপাচার্য।
র্যাগিং বন্ধ করার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “হলগুলো থেকে র্যাগিং বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে খুব শিগগির বসব আমরা।”
আবরারের পরিবারকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেবে বুয়েট কর্তৃপক্ষ এবং তার হত্যা মামলার খরচও বহন করবে বলে জানান তিনি।
তবে আলোচনা শেষ হবার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা সবগুলো দাবি পূরণ হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
প্রসঙ্গত, প্রথমদিকে আট দফা দাবির কথা বললেও, বুধবার থেকে শিক্ষার্থীরা দশ দফা দাবি নিয়ে ক্যাম্পাসে আন্দোলন চালিয়ে যান। এর মধ্যে রয়েছে, আবরারের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ, হলে হলে র্যাগিং নিষিদ্ধকরণ, বুয়েট থেকে হত্যাকারীদের চিরস্থায়ী বহিষ্কার এবং হলগুলোর প্রতিটি কোণায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন।
তাদের দাবিতে আরও রয়েছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার জন্য ১১ অক্টোবর বিকাল পাঁচটার মধ্যে শের-ই-বাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাফর ইকবাল খানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি, আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দান ও আবরার হত্যা মামলার সব খরচ বুয়েট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বহন।
এর মধ্যে গত বৃহষ্পতিবার হল প্রাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেন।
তবে বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা আলটিমেটাম দিয়েছিলেন যে, উপাচার্য যদি শুক্রবার বিকালের মধ্যে তাদের সঙ্গে দেখা না করেন, তাহলে বুয়েটের সব ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। এমন পরিস্থিতিতে বৃহষ্পতিবার উপাচার্যের পক্ষ থেকে আলোচনায় বসার কথা জানানো হয়।
আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন শের-ই-বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে। গত রোববার রাতে তাকে ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেন বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রাত ৩টার দিকে হল থেকেই তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।